বাবুল আক্তারের শ্বশুরকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ

প্রকাশিত: ৬:০৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬

চট্টগ্রাম : সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করতে শ্বশুর মোশাররফ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি।

বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের ডিবি কার্যালয়ে হাজির হন মোশাররফ হোসেন। এর কিছুক্ষণ পরই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কামরুজ্জামান।

টানা আড়াই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর দুপুর পৌনে ২টায় গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন মোশাররফ হোসেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মিতুর বাবা ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাকেই আইনের আওতায় আনা হোক।

কামরুজ্জামান জানান, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বাইরেও আসামি আছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, মিতু হত্যা মামলা সম্পর্কে বাদী হিসেবে বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা হয়েছে। মামলা সম্পর্কে বাবুল আক্তার তার বক্তব্য দিয়েছেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। তবে মামলায় মুসা নামে একজন সন্দেহভাজন আসামি রয়েছে। সে আত্মগোপনে রয়েছে। তাকে পাওয়া গেলে মিতুকে হত্যার কারণ জানা যাবে।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বাহিনী থেকে পরিদর্শক হিসেবে অবসরে যান। ঢাকার বনশ্রীতে এখন পরিবার নিয়ে থাকেন।

এর আগে (১৫ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার সকালে মামলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রথমবারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মামলার বাদী এবং মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে। প্রায় সাত মাস পর তিনি সিএমপি কার্যালয়ে আসেন।

সিএমপির ডিবি কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামান তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে সিএমপির একটি সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে বাবুল আক্তার অধিকাংশ উত্তর জানেন না এবং এজাহারে উল্লেখ আছে বলে জানান। তবে জিজ্ঞাসাবাদের অধিকাংশ সময় বাবুল আক্তার নীরবে চোখের পানি ঝরিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার অজ্ঞাত পরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।

এ ঘটনার পর ২৪ জুন মধ্যরাতে রাজধানীর বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আবার বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেয়া হয় বলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়।

৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাবুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পুলিশ বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বর্তমানে তিনি রাজধানীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করছেন।

প্রসঙ্গত, মিতু হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুজন মারা গেছেন।

জবানবন্দিতে দুজন জানান, মুসা শিকদার নামের এক ব্যক্তির নির্দেশে তাঁরা মিতুকে হত্যা করেছেন। পুলিশ জানায়, মুসাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী পান্নার দাবি, স্বামীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট