কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত মফিজুর রহমানের দাফন সম্পন্ন

প্রকাশিত: ৭:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০১৭

কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত মফিজুর রহমানের দাফন সম্পন্ন

কোম্পানীগঞ্জের পুলিশের গুলিতে নিহত মফিজুর রহমানের দাফন রোববার বাদ মাগরিব সম্পন্ন হয়েছে। দক্ষিণ রাজনগর জামে মসজিদের সামনে নামাজে জানাজা শেষে মধ্যরাজনগর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ জানাজায় অংশ গ্রহণ করেন। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন কলাবাড়ী মখজনুল উলুম টাইটেল মাদ্রাসার মুহতামীম মাওলানা আব্দুল মুছাব্বির। জানাজায় কোম্পানীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ডাক্তার আব্দুন নুর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আবু বকর ছিদ্দিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সৈয়দ আলী, পূর্ব ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল মিয়াসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে মফিজুর রহমানের মরদেহ তাঁর বাড়িতে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। রাজনগর গ্রামসহ আশ-পাশের কয়েক গ্রামের শোকাহত লোকজন নিহতের বাড়িতে ভিড় করেন। এদিকে, ডাকাতের গুলিতে নিহত জিলু মিয়ার ময়না তদন্ত রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত হয়নি বলে জানা গেছ্ ে
এদিকে, কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই জিএম আসলামুজ্জামান বাদী হয়ে গত শনিবার রাতে মামলাটি দায়ের করেন।
পুলিশের মামলায় এজাহারনামীয় আসামীরা হলেন- নিহত মফিজুর রহমান, মধ্য রাজনগরের মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র দুলাল মিয়া, ঢালারপাড়ের মৃত সাহেব আলীর পুত্র আশ্রব আলী, মধ্য রাজনগর পূর্বপাড়ার মরম আলীর পুত্র হাছান ও হানিফ, মোস্তফানগরের মৃত ছায়েদ আলীর পুত্র আব্দুল হাসিম, চাঁনপুরের লাল মিয়ার পুত্র হেলাল মিয়া, মোস্তফানগরের মৃত রহিম উদ্দিনের পুত্র শহীদুল্লাহ, নতুন মেঘারগাঁওয়ের মৃত সামছু মিয়ার পুত্র আবুল হোসেন, মোস্তফানগরের মৃত আবু তাহেরের পুত্র গোলাপ মিয়া ও শাহরাজ আলীর পুত্র বাচ্চু মিয়া।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বর্ণিত আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা এক হাজার থেকে ১২শ’ পুরুষ-মহিলা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আটক চোরকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় মারমুখী জনতাকে নিবৃত্ত করতে পুলিশ গুলি ছুঁড়ে। এক পর্যায়ে আটক সোনাই চোর ও খালিককে নিয়ে রাজনগর-ঢালারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আশ্রয় নেন এসআই তরিকুলসহ কয়েকজন পুলিশ। সেখানে আসামী মফিজুর রহমানসহ ২০/২৫ জন বিদ্যালয়ের দরজা ভেঙ্গে এইআই তরিকুলকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে তার সরকারী ইস্যুকৃত পিস্তল ছিনিয়ে নেয়।
অপরদিকে, পুলিশের ব্যবহৃত দু’টি সিএনজি ও ৫ মোটর সাইকেল ভাংচুর করে উত্তেজিত জনতা। এজাহারে বলা হয়, সহযোগী আসামীদের গুলিতে মফিজুর রহমান মারা যান। মফিজুরের নেতৃত্বেই পুলিশের উপর আক্রমণ হয়েছে। এজন্য তাকে আসামী করা হয়েছে বলে থানার ওসি (তদন্ত) রুহুল আমিন জানিয়েছেন।
এদিকে, পুলিশের দায়ের করা মামলায় ১২শ’ লোককে আসামি করায় গ্রেফতার ও হয়রানি আতঙ্কে রয়েছে গ্রামবাসী। কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সরে গেছেন। তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
এদিকে, ডাকাতের হাতে জিলু মিয়া হত্যার ঘটনায় তার ছেলে জুয়েল আহমদ বাদী হয়ে ডাকাত সোনাইসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আটক ডাকাত সোনাইকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।
অন্যদিকে ডাকাতের হামলায় নিহত জিলু মিয়ার লাশ এখনো সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট