১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র দক্ষিণাঞ্চলে নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ২৪শ’ মেগাওয়াট পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছি রূপপুরে। আমরা ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগের কয়েকটি দ্বীপ সার্ভে করেছি। আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে বরিশালের এই দ্বীপগুলোর একটিকে বেছে নিয়ে ভবিষ্যতে আরেকটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমরা করবো।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের (বিএসএমসি) সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সরকার প্রধান বলেন, বরিশালসহ সারাদেশে তার সরকার একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। ভোলা থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বরিশালে যেন গ্যাস আসে তার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা আমরা ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। এই অঞ্চলে কিছু শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা একান্তভাবেই প্রয়োজন এবং আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ সময় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তৃতা করেন। আর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ’র শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
তার সরকারে গবেষণায় প্রণোদনা দানের ফলে দেশীয় বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান বীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলমগ্ন ধান উৎপাদনেরও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, আর আমাদের গোপালগঞ্জের ধাপের ওপর করা সবজির চাষ বা ফ্লোটিং চাষ পদ্ধতি আমরা এ অঞ্চলসহ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছি। এক সময় শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত বরিশালে যেন আবার সুদিনে ফিরতে পারে, সেজন্যও আমরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি।
জনগণের দোড়গোড়ায় সব ধরনের সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তার সরকার ব্যাপক কর্মসূটি বাস্তবায়ন করে যচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের সাথে সাথে তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং শিক্ষা-দীক্ষা সব দিক থেকে মানুষ যেন আরো উন্নত হয়, সমৃদ্ধশালী হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং যার উন্নয়নের ছোঁয়াটা দেশের মানুষ পাচ্ছে। জিনিসপত্রের দামও আমরা নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, তেমনি মানুষের মাথাপিছু আয়ও আমরা বৃদ্ধি করেছি।
সরকার প্রধান বলেন, নদীগুলো ড্রেজিং করে নৌপথগুলোকে আমরা পুনরায় চালু করছি। তার ফলে অল্প খরছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও আরো সম্প্রসারণ হতে পারবে। যোগাযোাগের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বরিশালসহ পুরো দক্ষিণ জনপদটিই তার সরকারের শাসনামলে আর অবহেলিত নয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি পায়রা সমুদ্র বন্দরের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে ওটা গভীর সমুদ্রবন্দরে রুপান্তরিত হবে এবং ইতোমধ্যেই সেখানে ১৩শ’ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এক হাজার বেডের করা সহ সরকারের অন্যান্য পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি আমাদের একটা পরিকল্পনা রয়েছে- প্রত্যেক বিভাগে আমরা একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করবো। ইতোমধ্যে ৪টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করেছি। এ অঞ্চলেও করবো।
‘তবে, একটি কথা আমি স্পষ্ট বলে দেই- কোন মেডিকেল কলেজকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করবো না। বিশ্ববিদ্যালয় হবে সম্পূর্ণ আলাদা। আর বিশ্ববিদ্যালয় হবে গবেষণামূলক, বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেবল পোষ্ট গ্রাজুয়েশন এবং গবেষণা থাকবে এবং সেখানে শুধু নার্সিং ট্রেনিয়ের ব্যবস্থাটা থাকবে, এটা সম্পূর্ণ আলাদাভাবে করবো। সকল মেডিকেল কলেজগুলো সেখানকার স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড থাকবে.’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, তার দেশের মানুষ যেন সেবা পায় সেজন্য তাঁর সরকার ইতোমধ্যেই ডাক্তার এবং নার্স একের পর এক নিয়োগ দিয়ে চললেও দু:খজনক যে আমাদের উপজেলাগুলোতে ডাক্তার থাকছেনা।
তিনি বলেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা এবং উপজেলা হাসপাতালগুলোতে তাঁর সরকার শয্যা এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে দিলেও বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় অপারেশন থিয়েটার পড়ে আছে কিন্তু অপারেশনের জন্য, সার্জন, এনেসথেসিষ্ট, নার্স কেউ নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু প্রতিষ্ঠান করে যাব আর সেগুলি অবহেলিত থাকবে, এটা কিন্তু হতে পারে না। মানুষের সেবা দেওয়াটা প্রত্যেকের দায়িত্ব আমি আশা করি এই সেবাটা প্রত্যেক মানুষই পাবে।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় প্রত্যক উপজেলায় বহুতল ভবন নির্মাণে তাঁর সরকারের পরিকল্পনা পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, এই সব ভবনে তাঁরা (চিকিৎসকবৃন্দ) ভাড়ায় আবাসন সুবিধা লাভ করতে পারবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর দয়াগঞ্জ ও ধলপুর সিটি কলোনিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য নির্মিত ৪টি বহুতল আবাসিক ভবনে ৩৪৫টি আবাসিক ফ্লাটের উদ্বোধন করেন।
এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দোকার মোশাররফ হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা খান মোহাম্মাদ বিলাল সহ স্থানীয় উপকারভোগী জনগণ এসময় দয়াগঞ্জ প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।
সরকার সিটি কর্পোারেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আবাসনের জন্য ২০১৩ সালে দয়াগঞ্জে ৫টি, ধলপুরে ৫টি এবং সূত্রাপুরে দুটি বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১৯০ কোটি টাকা। সেই প্রকল্পের আওতায় আজকে ৪টি ভবনের উদ্বোধন হলো এবং আরো ৮টি নির্মাণ কাজ এখনো চলছে।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ছেলে-মেয়েরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মত দক্ষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে।
দৈনিক পরিস্কার পরিচ্ছতা অভিযানের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির সন্নিবেশন ঘটাতে প্রধানমন্ত্রী এ সময় সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছনা বিভাগগুলোর প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনকে ঘর দেওয়ায় তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যাদের ঘর-বাড়ি নেই তাদের আমরা ঘরবাড়ি করে দেব এবং দিচ্ছি। আর যারা আমাদের চারপাশকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছে তাদের জীবন ধারণের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশের নিশ্চয়তা বিধান করাও সরকারের কর্তব্য।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D