২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯
বরগুনা: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ লাইনে আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।
তিনি জানান, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী মিন্নি। তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে। তবে এ মামলায় তাকে এখন পর্যন্ত আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি বলেও জানান পুলিশ সুপার।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্নিকে পুলিশ লাইনে আনার সময় তার সঙ্গে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও এসেছেন। মোবাইল ফোনে পুলিশ লাইন থেকে তিনি জাগো নিউজকে জানান, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক অভিযুক্তকে শনাক্ত করার জন্য মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে। শনাক্তকরণ শেষ হলে মিন্নিকে আবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে।
এর আগে গত শনিবার রাত ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে নিহত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ। রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি আগে নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছিল। ওই বিয়ে গোপন করে রিফাত শরীফকে বিয়ে করে মিন্নি। বিষয়টি আমাদের জানায়নি মিন্নি এবং তার পরিবার। কাজেই রিফাত শরীফ হত্যার পেছনে মিন্নির মদদ রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনলে সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আজ আমার ছেলে হত্যার বিষয়ে কিছু কথা শেয়ার করার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত এ পর্যন্ত ১৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনে আমাকে বলতে হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে। কীভাবে তারা বাইরে তা বলার জন্যই আমি আজ এখানে এসেছি।
দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের বিষয়টি মিন্নি ও তার পরিবার সুকৌশলে গোপন করেছে। নয়ন বন্ডের স্ত্রী থাকা অবস্থায় আমার ছেলে রিফাতকে বিয়ে করেছে মিন্নি। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও মিন্নি নয়নের বাসায় যাওয়া-আসা করতো। নিয়মিতভাবে নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করতো সে।
পরদিন রোববার শ্বশুরের এ বক্তব্যকে বানোয়াট উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। লিখিত বক্তব্যে মিন্নি বলেন, বর্তমানে আমার শ্বশুর অসুস্থ এবং তিনি তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি যখন যা বলেন তা কোনো কিছুই পরে মনে থাকে না। আসামিরা বিচারকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করেছে। তারা আমার ছবি এডিট করে নয়ন বন্ডের সঙ্গে যুক্ত করে পোস্ট করেছে। ০০৭ নামের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপটি যারা সৃষ্টি করেছে তারা খুবই ক্ষমতাবান এবং বিত্তবান। তারা এ বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে রিফাত হত্যার বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আমার শ্বশুরকে সংবাদ সম্মেলন করাতে বাধ্য করেছেন। শনিবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে আমার শ্বশুর আপনাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মনগড়া ও বানোয়াট।
তিনি আরও বলেন, গত ২৬ জুলাই প্রকাশ্য দিবালোকে আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর থেকেই আমার স্বামীর হত্যার বিচারের দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধনসহ নানামুখী কর্মসূচি হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও প্রকাশিত হলে আমার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য আমি যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রের মুখে প্রতিবাদ করেছি, সেই ভিডিও দেখে দেশের মানুষ আমার সাহসের প্রশংসা করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী ও বিত্তবানদের অব্যাহত চাপ এবং প্ররোচনায় আমার সাহসের স্বীকৃতি না দিয়ে উল্টো আমাকেই ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতারের জন্য সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধন করা হচ্ছে। কিন্তু মামলার এজাহারে আমার নাম নেই এবং আমি ওই মামলার এক নম্বর সাক্ষী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিন্নি বলেন, আমি আমার স্বামী রিফাত শরীফতে ছাড়া কখনও একা একা কলেজে যেতাম না। হত্যাকাণ্ডের দিন সকালেও আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কলেজে যাই। কৌশলে আমার স্বামী আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার কথা বলে কলেজ থেকে বাইরে নিয়ে আসে। কিন্তু আমি কলেজ থেকে বের হয়ে বুঝতে পেরে আমার স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে না গিয়ে কলেজে কাজ শেষ না হওয়ায় আমি কলেজের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করি। এসময় আমার স্বামী আমার গতিরোধ করতে চাইলেও আমি তা উপেক্ষা করে কলেজে প্রবেশ করি। এরপরই হামলাকারীরা আমার স্বামীকে মারতে মারতে কলেজ থেকে বাইরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে কুপিয়ে যখম করে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D