একসঙ্গে মা ও ছেলের এসএসসি পাস

প্রকাশিত: ৮:৩৭ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০১৭

একসঙ্গে মা ও ছেলের এসএসসি পাস

নাটোর: মা ও ছেলে একসঙ্গে এসএসসি পাসের ঘটনা সচরাচর শোনা যায় না। কিন্তু এবার শোনা গেলো। মা ও ছেলের একসঙ্গে পরীক্ষায় পাস করায় আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা।

মা-ছেলের একসঙ্গে পাসের খবর পেয়ে উৎসুক মানুষ তাদের দেখতে বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে। এসময় মা-ছেলে নিজেরাই পাড়ার লোকজন, শিক্ষক ও শুভাকাঙ্খীদের মাঝে বিতরণ করছেন মিষ্টি। পরীক্ষার ফলাফলে মা মলি রানী পেয়েছেন ৪.৫৩ ও ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু পেয়েছেন ৪.৪৩।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর মা ও ছেলের একসঙ্গে পাস করার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

দুজনেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেন। মলি বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের ও ছেলে মৃন্ময় বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিল্ডিং মেইনটেনেন্স ট্রেডের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তবে রেজাল্টের দিক থেকে ছেলের চেয়ে মায়ের রেজাল্ট ভালো। বয়সের বাঁধাকে উপেক্ষা করে ৩৫ বছর বয়সে ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন মা মলি রানী কুণ্ডু।

তিনি উপজেলার গালিমপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবব্রত কুমার মিন্টুর স্ত্রী। উদ্যোমী এ নারীর বাবার বাড়ি নঁওগার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর গ্রামে। বাবার নাম অসিত কুণ্ডু।

মলি রানী জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা খুব ঘটা করে তাকে বিয়ে দেন। এরপর আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। সংসারের চাপে গৃহিণীই রয়ে যান তিনি। এরমধ্যে তার কোলজুড়ে আসে দুই ছেলে সন্তান। বড় ছেলে মৃণ্ময় কুমার কুণ্ডু ও ছোট ছেলে পাপন কুণ্ডু। ছেলেদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তার নিজের পড়ালেখা জানা দরকার।

সেই ভাবনা থেকেই স্কুলে ভর্তি হন তিনি। মা-ছেলে একইসঙ্গে স্কুলে যেতেন আর বাড়িতে পড়াশুনা করতেন। মাঝে-মধ্যে মিষ্টি ব্যবসায়ী স্বামীকে মিষ্টি বানাতে সাহায্য করতেন তিনি। পরীক্ষার ফলাফলে উচ্ছ্বসিত মা মলি। ভবিষ্যতেও তিনি পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে চান।

ছেলে মৃন্ময় জানান, মা-ছেলে একসঙ্গে পাস করায় সে খুব খুশি। তারা দুজন একসঙ্গে কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করতে চান।

মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবব্রত কুমার মিন্টু জানান, তার স্ত্রী ও ছেলে একসঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে পাস করায় খুশি। স্ত্রী মলি পড়া চালিয়ে গেলে তিনি আপত্তি করবেন না।