ভারতীয় হাতিটি যেভাবে নিয়ণ্ত্রণে আনল বাংলাদেশী কর্মকর্তারা

প্রকাশিত: ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১২, ২০১৬

সরিষাবাড়ীতে বন্যার পানিতে ভেসে আসা বন্য হাতিটি অবশেষে ৪৪ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তপন বাহিনীর এলিফেন্ট টাংকুলাইজার মেটাল ডার্ট অপারেশনে ধরা পড়ল।

বিভাগীয় উপ-প্রধান প্রাণী ও বন সংরক্ষক কর্মকর্তা শেরপুর ডঃ তপন কুমার দের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার দুপুর ০১.৫৮ মিনিটে সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার কয়ড়া গ্রামের নির্জন স্থানে ভেটেনারি সার্জন ডাক্তার সাইদ হোসেন এলিফেন্ট টাংকুলাইজার মেটাল ডাট দিয়ে বন্য হাতিটিকে লক্ষ করে আঘাত হানলে ১৫ মিনিটের মধ্যে ওই হাতিটি জ্ঞান হারিয়ে পানিতে পড়ে যায়। এসময় এলাকার ও উৎসুক হাজারো মানুষের সহায়তায় পানিতে পড়া হাতিটি ডাঙায় তুলতে সক্ষম হয়। পরে হাতিটিকে লোহার শিকল ও লাইলনের রশি দিয়ে ৪টি পা বেঁধে দুই পাশে গাছের সাথে টানা দিয়ে রাখা হয়। হাতিটি অজ্ঞান করার প্রায় ৪৫ মিনিট পর হাতিটিকে চেতনা ফিরিয়ে আনার জন্য আবারো “ নিউ হাম্বিল” নামক একটি ইনজেকশন পুষ করলে হাতিটি নড়ে-চড়ে উঠে। এ সময় বন্য প্রাণী বিভাগের বন কর্মকর্তা শেরপুর হাবিবুল্যাহ হাবিব, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গবিন্দ দাস, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রাণী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী ভেটেনারি সার্জন আতিকুল ইসলাম ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চল পরিদর্শক অসীম মল্লিক সাথে ছিলেন।
গত ৩ আগষ্ট ভারতের আসাম প্রদেশের প্রাণী বিশেষজ্ঞ ভেটেনারি সার্জন রিতেশ ভট্টাচার্য ও ভেটেনারি সার্জন শর্মা কৌশল কনুয়ার বাংলাদেশে এসে হাতি উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে স্বদেশ চলে যান।

জানা যায়, বন্য হাতিটি গত ২৮ জুন ভারতের আসাম প্রদেশ থেকে বন্যার পানিতে ভেসে এসে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করে। পরে জামালপুরের দেয়ানগঞ্জ উপজেলার যমুনা নদীর দ্বীপচর ডাকাতিয়ায় এক ছন ক্ষেতে ২ দিন অবস্থানের পর আবারো পানিতে ভেসে মাদারগঞ্জ উপজেলার নব্বইয়ের চরে এক দিন অবস্থান নেয়। হাতিটি পানিতে ভাসতে ভাসতে বগুড়ার ধনুট সারিয়াকান্দি হয়ে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় ছেন্নার চরে সপ্তাহ খানেক অবস্থান নেয়। এর পর যমুনার প্রবল স্রোতে পানিতে ভেসে হাতিটি ২৩ জুলাই সরিষাবাড়ী উপজেলায় প্রবেশ করে। দীর্ঘ ৪৪ দিন পর অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সরিষাবাড়ীর কয়ড়া নামক গ্রামে উদ্ধারকারী টিম টাংকুলাইজার গান মেশিন দিয়ে ভেকসিন পুষ করে হাতিটিকে অজ্ঞান করে ধরা হয়।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চল পরির্দশক অসীম মল্লিক জানান, হাতিটির সুস্থতা ফিরে আসা পর্যন্ত কয়ড়া গ্রাম নামক স্থানে থাকবে। তাকে চিকিৎসা ও খাওয়ার ব্যবস্থা ওই খানেই হবে। তার পর হাতিটিকে গন্তব্যে নেয়া হবে। এ জন্য আরো ২-৩ দিন সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট