২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০১৬
বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো জঙ্গিরা। এ হামলা ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সন্দেহে ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তাজুল ইসলাম ওরফে তাজুল (২৯), জিয়াবুল হক ওরফে জিয়া (২৪), মোস্তাফিজুর রহমান সিফাত (২৭), জাহিদ আনোয়ার পরাগ (২২), নয়ন হোসেন (২১) ও জাহিদ হাসান মাইন (২১)।
র্যাবের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে পাঁচজন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। অন্যজন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) প্রযুক্তি শাখার পরিচালক।
র্যাব জানিয়েছে, ‘আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সিফাত আইএসের নামে দেশে চালানো ১১টি জঙ্গি হামলার দায় স্বীকারকারী একটি ওয়েব-সাইটের (আত-তামকীন) এডমিন।
দেশে-বিদেশে আলোচনায় আসতেই এরা আইএসের নাম ব্যবহার করতো বলে জানায় র্যা ব। বাকি পাঁচ যুবকের সবাই জেএমবির আত্মঘাতী টিম বা ইসাবার সদস্য। তাদের মধ্যে জিয়াবুল হক জিয়া মাদারীপুরের এক শিক্ষক হত্যা চেষ্টার জন্য প্রাথমিক নির্দেশ পেয়েছিলেন।
র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘জেএমবি এবং এবিটি দাওলাতুল ইসলাম নামের ব্যানার ব্যবহার করে যৌথভাবে কাজ করছে। এই ব্যানারে তারা হলি আর্টিজানসহ ১১টি হামলা ও তার দায় স্বীকার করেছে বলে জানান তিনি।’
মুফতি মাহমুদ খান জানান, ‘আটক হওয়া জেএমবির আত্মঘাতী টিমের সদস্যরা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। জঙ্গিরা স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে তাদের আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করে বলেও তথ্য পেয়েছে র্যারব। জঙ্গি কার্যক্রমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য তারা থ্রিমা, ইমো ও টেলিগ্রাম অ্যাপস ব্যবহার করে। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গ্রুপ পেজ খুলেও যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে।’
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাওব জানতে পারে, জেএমবি’র বেশ কিছু গ্রুপ বিগত জঙ্গি হামলার মতো নাশকতার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে এবং যেকোনো স্থানে তারা নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে জাহিদ আনোয়ার পরাগকে গ্রেপ্তার করে।’
তিনি বলেন, ‘তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর গাবতলীতে দুটি অভিযান চালিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ৭ রাউন্ড গুলি, ১৩টি ডেটোনেটর, ৩৪টি সার্কিট, ৪টি চাপাতি, ৫টি ছোট চাকু, নয়টি আইডি কার্ড, ৫টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১২টি চকলেট, ১০০ গ্রাম বারুদ, ৪০০ গ্রাম পাওয়ার জেল, ৮ গ্রাম সাদা গান পাউডার, ৫ গ্রাম লাল গান পাউডার ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা জেএমবি ও এবিটি সদস্য। জেএমবি’র সদস্যরা নিজেদের দাওলাতুল ইসলামের সদস্য বলে দাবি করেছে বলে জানান মুফতি মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান জেএমবি’র দাওলাতুল ইসলামের মুখপাত্র ‘আত্-তামকীন’ জঙ্গি সাইটের অ্যাডমিন। এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে মিডিয়াতে নিজেদেরকে আইএস হিসেবে সম্প্রচার করে। আত্-তামকীন ওয়েব সাইটের কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে একটি অনুবাদের কাজ করে, একটি গ্রুপ ফটোশপের কাজ, একটি গ্রুপ ভিডিও এডিটিংয়ের কাজ এবং অবশিষ্ট গ্রুপ প্রচারের কাজে নিয়োজিত থাকে। বিভিন্ন সময় হত্যাকাণ্ডের পর পর আত্-তামকীন আইএস-এর পক্ষে বাংলায় দায় স্বীকার করে। তবে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে এদের যোগাযোগের তথ্য প্রমাণ পায়নি র্যা ব।’
মুফতি মাহমুদ বলেন, অনুসন্ধানে এই দলে নারী সদস্যদের সক্রিয় উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে। সংগঠনের জঙ্গিরা সরাসরি ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে দাওয়াত অথবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে (ফেইসবুক) দাওয়াত দিয়ে সদস্য সংগ্রহ করে। এর আগে সদস্যের সাথে সরাসরি কথা বলে কিংবা ফেসবুকের পোস্টের ওপর ভিত্তি করে মনোভাব যাচাই করে থাকে।
কয়েকটি স্তর পেরিয়ে ও গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর যখন কোনো সদস্য জিহাদে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে তখন ওই সদস্যকে পর্যবেক্ষণে রেখে বিশ্বস্ততার ভিত্তিতে থ্রিমার আমির বা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ যোগাযোগ করেন এবং তাকে চূড়ান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। প্রশিক্ষণের উপর নির্ভর করে তাকে আত্মঘাতী হামলার জন্য মনোনীত করে।
এরপরই সে মিশনে বেরিয়ে পড়ে, যাকে তারা হিযরত নামে অভিহিত করে। সে হিযরতে বেরিয়ে গেলেই অফলাইন হয়ে যায়। অর্থাৎ আমিরসহ সবার সাথেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মিশন শেষে সে নিরাপদে ফিরতে পারলে কিছুদিন পর পুনরায় দলের সাথে যোগাযোগ করে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ‘এরা নিজেরাই চাঁদা দিয়ে অথবা শুভাকাঙ্খিদের কাছ থেকে ইয়ানত সংগ্রহ করে সংগঠন পরিচালনা করে। ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকার কারণে তারা তাদের আর্থিক লেনদেনের প্রক্রিয়াটি ব্যাংক অথবা বিকাশের মাধ্যমে সম্পন্ন করে না। এক্ষেত্রে তারা স্বর্ণচোরাকারবারী প্রক্রিয়ায় অর্থ সংগ্রহ করে। এর সুবিধা হলো যদি কেউ কখনো আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে তবে তাকে জঙ্গি হিসেবে নই; চোরাকারবারী হিসেবে চালিয়ে দেয়া সহজ হয়।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D