১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৬
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
এ দিনে বাঙালির প্রাণের এ কবি নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও অসামান্য রচনা ও কাজের মধ্যে আজও বেঁচে আছেন তিনি প্রেরণাদাতা হয়ে।
‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে প্রথম বাঙালি এবং এশীয় হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। নোবেল ফাউন্ডেশন তার এই কাব্যগ্রন্থটিকে বর্ণনা করেছিল একটি ‘গভীরভাবে সংবেদনশীল, উজ্জ্বল ও সুন্দর কাব্যগ্রন্থ’ রূপে। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি…’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।
রবীন্দ্রনাথ শুধু বাঙালির নয় বাংলাদেশ ও ভারত দুদেশের মানুষের কাছেই তিনি মানবমুক্তির বারতা নিয়ে উদ্ভাসিত। দুদেশের মানুষের সম্পর্কে সেতুবন্ধ রচনায় রবীন্দ্রনাথ দেখিয়ে দিয়েছেন নতুনতর মহিমায়।
রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়েছিল কলকাতার এক পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে। জন্ম ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮; মৃত্যু ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ। বাংলার দিকপাল কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি প্রথম কবিতা লেখেন।
১৮৮৭ সালে মাত্র ষোল বছর বয়সে ‘ভানুসিংহ’ ছদ্মনামে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়।
রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক চেতনা ছিল– শুধু নিজের শান্তি বা নিজের আত্মার মুক্তির জন্য ধর্ম নয়। মানুষের কল্যাণের জন্য যে সাধনা তাই ছিল তার ধর্ম। তার দর্শন ছিল মানুষের মুক্তির দর্শন। মানবতাবাদী এই কবি বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানবতায়।
জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শনের অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, সাহিত্যের অন্যান্য শাখার লেখনী মানুষকে আজো সেই অন্বেষণের পথে, তার অন্বিষ্ট উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহুমুখী সৃজনশীলতা বাংলা সাহিত্য ও শিল্পের প্রায় সবকটি শাখাকে স্পর্শ করেছে, সমৃদ্ধ করেছে। তার লেখা গান বাঙালির হূদয়ে প্রতিধ্বনিত হয় আজো।
আনন্দে, বেদনায় এমনকি দ্রোহে এখনো রবীন্দ্রনাথ বাঙালির প্রেরণার উত্স। রবীন্দ্রনাথ আমাদের মন-মানস গঠনের, চেতনার উন্মেষের প্রধান অবলম্বন। তিনি গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় নন্দিত। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা সাহিত্য ও সংগীতে রবীন্দ্রনাথ এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন।
রবীন্দ্রনাথের লেখা বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে সম্মানের আসনে পৌঁছে দিয়েছে।
আজকের কর্মসূচি
কবিগুরুর ৭৫তম মৃত্যুদিবস উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন চ্যানেলের আয়োজনে উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকছে নাটক, টকশো, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীতানুষ্ঠান, প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
বাংলা একাডেমি দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ ২২ শ্রাবণ শনিবার বিকাল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আহমদ রফিক রচিত ‘রবীন্দ্রজীবন (তৃতীয় খণ্ড)’-এর প্রকাশনা উত্সবের আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অধ্যাপক শফি আহমেদ এবং অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
রবিবার বিকাল ৪টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং রবীন্দ্রপুরস্কার-২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রবীন্দ্রবিষয়ক একক বক্তৃতা প্রদান করবেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এ বছর রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করা হবে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন এবং শিল্পী তপন মাহমুদকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আজ ছায়ানট মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আজ সন্ধ্যা ৬.৩০টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনু্ষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আকতার কামাল ও ড. বিনায়ক সেন। ফারহানা চৌধুরী বেবীর পরিচালনায় বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস পরিবেশন করবে নৃত্যালেখ্য ‘ষড়ঋতু’।
শুক্রবার জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা আয়োজন করেছিল সঙ্গীত সন্ধ্যা। শুরুতেই সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন ‘সমুখে শান্তির পারাবার, ভাসাও তরণী হে কর্ণধার’। সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে শুরু হয় একক পরিবেশনা। আঁখি বৈদ্য গেয়ে শোনান ‘তার বিদায়বেলার মালাখানি দেবো’, অভীক দেব ‘জীবন মরণের সীমানা’, অনিরুদ্ধ সেন ‘আর রেখো না আঁধারে’, তপন সরদার, ‘ক্লান্তি আমায় ক্ষমা’, লিটন বৈদ্য ‘জড়ায়ে আছে বাধা’, কুশল রায় ‘বাদল দিনের প্রথম কদম’, সাজ্জাদ হোসেন ‘তোমার অসীমে প্রাণমন’, আঞ্জুমান ফেরদৌসী কাকলী ‘আজ কিছুতেই যায় না মনের’, সেলিনা পারভেজ ‘ওগো আমার শ্রাবণ মেঘের’, সুমাইয়া ইমাম ইমা ‘বরিষ ধরা মাঝে’, সুমাইয়া ফারাহ খান ‘শ্রাবণ তুমি বাতাসে’, সীমা সরকার ‘যা হারিয়ে যায়’, কনক খান ‘আজি ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে’ ইত্যাদি।
উত্তরা ক্লাবে রবীন্দ্রনাথ স্মরণে আন্তর্জাতিক সম্মেলন
বাংলাদেশ-ভারত-জাপান-চীনের রবীন্দ্র গবেষক, রবীন্দ্রবিষয়ক শিক্ষার্থীদের নিয়ে উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে শুরু হয়েছে দুদিনের ‘রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা-ভাবনা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষা-ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ হায়াত্ মামুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্রের অধিকর্তা মুনমুন গঙ্গোপাধ্যায়, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াসমীন আরা লেখা, চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চেন শিনের, জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাছাহিকো টোগাওয়া।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D