ধর্মান্তরিত ইতালীয় নারীর ৯ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ৪:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬

রোম : ইসলামিক স্টেটের সমর্থনে দুই বছর আগে সিরিয়ায় প্রবেশ ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ইতালীয় এক নারীকে নয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।

মারিয়া গুইলিয়া সার্জিও (২৯) নামের ওই  নারীর অনুপস্থিতিতে গত সোমবার এ রায় দেয়া হয়।

মারিয়া ২০০৭ সালে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন এবং ২০১৪ সালে তার আলবেনীয় বংশোদ্ভূত স্বামীর সঙ্গে সিরিয়ায় চলে যান।

সেখানে গিয়ে তিনি তার বাবা-মা ও বোনকেও তাদের সঙ্গে যোগদানের জন্য আহ্বান জানান এবং ইসলামিক স্টেট শাসকদের  ‘জিহাদ’ বা পবিত্র যুদ্ধের ঘোষণা পত্রে সাক্ষর করেন।

সিরিয়ায় যেতে সম্মত হওয়ার পর তার বাবা-মা ও বোন তাদের ধন-সম্পদ বিক্রি করতে শুরুও করেন। কিন্তু ২০১৫ সালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের ইতালি ত্যাগ করা থেকে বিরত রাখা হয়।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত ও সন্ত্রাসবাদকে সহজতর করতে সিরিয়া যাওয়ার অভিযোগে মারিয়া গুইলিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

এছাড়া, সন্ত্রাসীদের সহায়তার অভিযোগে তার বাবাকে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে তার বোন সিরিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তাকে পাঁচ বছর চার মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১৫ সালে গ্রেপ্তারের কিছু দিন পরেই গুইলিয়ার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

মারিয়া গুইলিয়ার স্বামী আলডো কুবোজি’কে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে এখনো সিরিয়ায় আছেন। কিন্তু গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের সম্পর্কে তেমন কিছুই শুনা যাচ্ছে না।

সন্ত্রাসীদের সহায়তার জন্য মারিয়া গুইলিয়াসহ অন্যদের রিক্রুটিং করানোর অভিযোগে আদালত বুশরা হায়েক নামে কানাডিয়ান এক নারীকে নয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন।

মারিয়া গুইলিয়ার বাবার আইনজীবী জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করবেন। তিনি দাবি করেন, তার ক্লায়েন্ট ইসলামিক স্টেটে যোগদান করতে চেয়েছিলেন না। কেবল পরিবারের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতে চেয়েছিলেন।

মারিয়া গুইলিয়া দক্ষিণ ইতালির একটি রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন ফাতেমা তুজ জোহরা।

ইতালিয়ান গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়,  ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ধীরে ধীরে মৌলবাদী হয়ে ওঠেন এবং ২০১৪ সালে আলবেনীয় বংশোদ্ভূত কুবোজি’কে বিয়ে করেন।

২০১৫ সালে ‘কুরিয়ার ডেলা’ নামে ইতালীয় একটি পত্রিকাকে স্কাইপের মাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মারিয়া বলেছিলেন, ‘আমরা আল্লাহর নামে মানুষকে শিরশ্ছেদ করি। আমরা হত্যা করি কারণ এটা শরিয়া আইনের দাবি।’

আদালতে মারিয়া গুইলিয়াকে একজন ‘বিদেশি জঙ্গি’ হিসেবে চিহিৃত করা হয় এবং ইতালীয় সংবাদপত্রে তাকে ‘লেডি জিহাদি’ নামে ডাকা হয়।

সূত্র : রয়টার্স

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট