২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০১৬
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার সময় তাদের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো এবং লোডশেডিং থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়া।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রচারণার একটি বড় বিষয় ছিল ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে ‘চরমভাবে ব্যর্থ’ হয়েছে। সেজন্য বিদ্যুৎ হয়ে উঠে একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যু।
প্রায় আট বছরের মাথায় সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী তারা ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। সেজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে ‘আলোক উৎসব’ উদযাপন করছে।
কিন্তু গত আট বছরের মধ্যে সরকার বড় ধরনের কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে সক্ষম হয়নি। যদিও কয়লা-ভিত্তিক বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ চলছে।
জ্বালানী বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম. তামিম মনে করেন জনগণকে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকার সফল হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কয়লা-ভিত্তিক বড় ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে না আসলে এ সফলতা কতটা ধরে রাখা যাবে- তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সংশয় আছে।
অধ্যাপক তামিম বলেন, ‘বেশিরভাগ যে সংযোজন হয়েছে সেগুলো এসেছে তেল-ভিত্তিক সংযোজন। এখন তেলের দাম কম হওয়াতে আমরা মোটামুটি সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যেতে হবে। কিন্তু সে ব্যাপারে সরকার পিছিয়ে আছে’।
সরকার বলছে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন এখন কয়েকটি বড় ধরনের কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যার মধ্যে সুন্দরবনের কাছে রামপালে একটি, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি এবং কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে আরেকটি কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কেনো এতো সময় সময় লাগছে? সরকারের জন্য আট বছর সময় কি পর্যাপ্ত নয়?
বিলম্ব হওয়ার যুক্তি তুলে ধরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানালেন, ‘বাংলাদেশে কয়লার জন্য কোন টার্মিনাল নেই। আমদানি করা কয়লা রাখার জন্য গভীর সমুদ্রে টার্মিনাল নির্মাণ করতে হচ্ছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে এ টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে যেটি ২০২২ সাল নাগাদ চালু হবে বলে জানালেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। সেখানে ৬বিলিয়ন ডলার বা ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। সে টার্মিনাল নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করা বেশ কঠিন’।
তিনি বলেন, ‘আপাতত ছোট কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করে সেগুলো ছোট জাহাজের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু সেটির খরচ বেশি হবে’।
জ্বালানী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তামিম বলছেন ২০১০ সালে সরকার ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন করেছিল। সে পরিকল্পনায় বলা হয়েছিল ৫০ভাগ বিদ্যুৎ কয়লা থেকে আসতে হবে। ২০১৫ সালে এ পরিকল্পনা হালনাগাদ করে বলা হয়েছে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৫ শতাংশ কয়রা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আসতে হবে’।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছেন কয়লা রাখার জন্য গভীর সমুদ্রে টার্মিনাল নির্মাণ করতে না পারলে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব নয়। সরকার যে যুক্তি তুলে ধরুক না কেনো।
জ্বালানী বিশেষজ্ঞ তামিম বলছেন, এ সময়ের মধ্যে কিছু কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এগুলো সময় সাপেক্ষ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ সরকার ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসে তখন প্রথম তিন-চার বছর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তাদের ধীর গতি ছিল। দীর্ঘ মেয়াদী কাজটা যদি তখন থেকে জোরে-শোরে শুরু করতো তাহলে আমি মনে করি যে এতদিনে দু’চারটা প্রকল্পের বেশ কিছু অগ্রসর হতো’।
সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছেন কয়লা-ভিত্তিক যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেগুলো উৎপাদনে আসলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।
সূত্র : বিবিসি
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D