১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬
মেয়েটির বয়স ১৫। বাড়ি বাংলাদেশে। রুবেল নামের একজনের প্রেমের ফাঁদে ফেঁসে গেছে সে। রুবেলের মিথ্যা প্রলোভনে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ায়। তারপর পরিবারের অমতেই বিয়ে। কিন্তু সংসার আর করা হলো না গরিব পরিবারের এ কিশোরীর। চোরাইপথে তাকে চলে আসতে হয়েছে দেশের মায়া ত্যাগ করে ভারতে। এখানে রুবেলের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ইটভাটায় আশ্রয় নেয় শ্রমিক হিসেবে। অল্প টাকায় ইটভাটার কাজ করতে রাজিও হয়ে যায় গরিব পরিবারের এ কিশোরী। আর পাচারকারী রুবেল তাকে যৌনপল্লীতে বিক্রির সুযোগ খুঁজতে থাকে। ঢাকার এক মানবাধিকার কর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশ হাওড়ার বঁদর এলাকার ইটভাটা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, রুবেল দেওয়ান নামে এক নারী পাচারকারী তাকে এ দেশে নিয়ে আসে। বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে তারা এখানে ঢোকে। রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাচারকারী রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাংলাদেশ থেকে ২৫ জন মেয়েকে সে এ দেশে নিয়ে এসে মুম্বাইয়ের যৌনপল্লিতে বিক্রি করেছে। এক থেকে সাত লাখ টাকায় সে মেয়েদের বিক্রি করে। পুলিশ জানায়, পাচারকারীরা প্রেমের নাটক করে বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিশোরী, তরুণীদের এ দেশে আনে। ওই কিশোরী পুলিশকে জানায়, ভারতে ভাল ব্যবসা করে বলে রুবেল জানিয়েছিল। এরপরেই মেয়েটিকে বিয়ে করে সে এ দেশে নিয়ে আসে। এদিকে এখানে এসে মেয়েটি জানতে পারে মানিকগঞ্জে রুবেলের স্ত্রী ও সন্তান আছে। মুম্বাইয়ে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য তাকে মিথ্যা কথা বলে নিয়ে আসা হয়েছিল। কোথায় বিক্রি তা ঠিক করতে দেরি হওয়ায় ইটভাটায় আত্মগোপন করেছিল তারা। সম্প্রতি হাওড়ার পুলিশ মছলন্দপুর থেকে মহম্মদ ডালিম নামে এক আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারীকে গ্রেফতার করে। বছর বত্রিশের ডালিমের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, সে স্বরূপনগর ও গাইঘাটা সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে এ দেশে যাতায়াত করে। পুলিশকে সে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ থেকে গরিব পরিবারের মেয়েদের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে এসে মুম্বাই, চেন্নাই, দিল্লি ও পাটনার যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বনগাঁর পুলিশও সম্প্রতি দুই বাংলাদেশি কিশোরীকে উদ্ধার করেছে। তাদের পাচার করে আনা হয়েছিল। স্থানীয় এক পাচারকারীর বাড়িতে তাদের রাখা হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশের বক্তব্য, বনগাঁ, বসিরহাট মুম্বাই নারী পাচারের দল বেশ সক্রিয়। বাংলাদেশ থেকে আসা মেয়েদের বেশিরভাগই পারিবারিক অবস্থা খুব খারাপ। তাদের বিউটি পার্লারের কাজ, মোটা টাকায় পরিচারিকার কাজের লোভ দেখিয়ে এ দেশে আনা হয়। আসার পথেই যৌন নির্যাতনের শিকার হন অনেকে। এমন কী ধর্ষণেরও শিকার হন অনেকেই। এরপরই দালালদের হাতে পড়ে তাদের জায়গা হয় মুম্বাই, পুণে, দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন শহরের যৌনপল্লীতে। পাচারের পর দেশে ফেরার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাতে তারা মেয়েদের কান্নাকাটির আওয়াজ পান। সীমান্তের চোরাপথে বিশেষ করে গাইঘাটার আংরাইল ও স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্ত দিয়ে বেশি চোরাপথে যাতায়াত হয়। ওই পথ বন্ধ করা না গেলে নারী পাচার সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করা যাবে না বলে এলাকাবাসীর দাবি। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নারী পাচার বন্ধ করতে বিএসএফের সঙ্গে যৌথ ভাবে বৈঠক করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী থানাগুলোকেও সতর্ক করা হয়েছে।’
তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D