সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্সের কাছে হেরে শিরোপার স্বপ্ন ভেঙেছে ইংল্যান্ড ও বেলজিয়ামের। এ দুটি দলই শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে নামবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ খেলতে।

ফাইনাল খেলতে না পারার দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলতে তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে দুটি দলই। এ ম্যাচ জিতে ভালোভাবে বিশ্বকাপ শেষ করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ও বেলজিয়ামের ম্যানেজার রবার্তো মার্টিনেজ।

দুইটি দলই ‘জি’ গ্রুপ থেকে উঠে এসেছে সেমিফাইনালে। কিন্তু সেখানে ইংল্যান্ড ২-১ গোলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ও বেলজিয়াম ১-০ গোলে ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে যায়।

দ্বিতীয়বারের বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এবারের আসর শুরু করে ইংল্যান্ড। সেই স্বপ্ন ব্যর্থ হলেও তৃতীয় স্থান নির্ধারনী ম্যাচে জয়ী হয়ে এসব দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলতে চায় ইংল্যান্ড।

কোচ সাউথগেট বলেন, আমাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না এটি কত বড় কষ্টের। কিন্তু আমাদের সামনে এখনও একটি ম্যাচ রয়েছে। এই ম্যাচ দিয়ে আমরা কোনো স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো না। তবুও বিশ্বকাপের ম্যাচ হিসেবে এটিও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বকাপে একটি ম্যাচ জয় করা অনেক বড় কিছু। তাই এই ম্যাচ জিতে আমরা ভালোভাবে বিশ্বকাপ শেষ করতে চাই। ছেলেদের মনের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। তবে তারা বাস্তবতার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। বেলজিয়ামের বিপক্ষে খেলার জন্য মুখিয়ে আছে পুরো দল। আশা করবো, তৃতীয় হয়েই বিশ্বকাপ শেষ করতে পারবো আমরা।

ইংল্যান্ডের মত তৃতীয় স্থান চায় বেলজিয়ামও। তবে কাজটি কঠিন হবে বলে মনে করেন বেলজিয়ামের কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিলো সেমিফাইনাল খেলা। আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি।

তারপরও ছেলেদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে আমাদের ফাইনালে যাবার ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছিলো, কিন্তু ভাগ্য আমাদের সাথে ছিলো না। তবে বিশ্বকাপের শীর্ষ চারের মধ্যে আমরা থাকতে পারবো।

আমার মনে হয়, এটি আমাদের জন্য দুর্দান্ত অর্জন। এই অর্জনকে আরও ভালোভাবে শেষ করার উপায় এখন আমাদের সামনে। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জিততে পারলে আমরা চ্যাম্পিয়ন- রানার্স আপ দলের পরই থাকতে পারবো। তাই এই সুযোগটা আমরা নিতে চাই। ইংল্যান্ড পুরো টুর্নামেন্টে ভালো খেলেছে। তাদেরকে হারানো সহজ হবে না।

পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়ে বেলজিয়াম তাদের ফুটবল ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। ১৯৮৬ সালে প্রথমবারে তারা সেমিফাইনালে ফেলে। সেবারও ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে হেরে চতুর্থ স্থান হয়েই বিশ্বকাপ শেষ করতে হয় তাদের। বেলজিয়ামের এই অভিজ্ঞতা থাকলেও বিশ্বকাপে কখনো তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ খেলেনি ইংল্যান্ড।

এখন পর্যন্ত ২২ বার মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড ও বেলজিয়াম। এরমধ্যে অধিক সংখ্যক জয় নিয়ে এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড। এই ২২ ম্যাচের মধ্যে ইংলিশদের জয় ১৫ বার ও বেলজিয়ামের ৩ বার। ড্র হয়েছে ৪টি ম্যাচ।

রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের আগে ১৯৫৪ ও ১৯৯০ সালে দুবার দেখা হয়েছিলো বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ডের। এর মধ্যে ১৯৫৪ সালের ম্যাচটি ৪-৪ গোলে ড্র হয়। আর ১৯৯০ সালে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারায় ইংল্যান্ড।