কাঙ্খিত ‘পদবঞ্চিত’ নেতারা এড়িয়ে চলছেন

প্রকাশিত: ৩:০২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১২, ২০১৬

সদ্য ঘোষিত বিএনপির ৫০২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে ‘জাতীয় নেতা’র ভাবমূর্তি রয়েছে এমন অনেককেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ছাড়া রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এমন অনেক নেতা কাঙ্খিত পদ পাননি। এ নিয়ে ক্ষোভ-হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। কমিটির ঘোষণার পর কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নেতাদের মধ্যে দু’এক প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেখালেও বেশির নেতা এখনোই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটনাতে নারাজ। ফলে তারা অনেকটাই মিডিয়াকে এড়িয়ে চলছেন।

বলা হচ্ছে, দলের জন্য অপরিহার্য নেতাদের উপদেষ্টা কমিটিতে রাখায় বিএনপির রাজনীতি স্থবির হয়ে পড়বে। এরই মধ্যে দুই নেতা পদত্যাগও করেছেন। আবারো অনেকে পদত্যাগের চিন্তা-ভাবনা করছেন। সব মিলে এখন বিএনপির ভেতরে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এর কিছুটা সত্যতাও মিলেছে। তবে কাঙ্খিত পদ পাননি এমন অনেক নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের অনেকেরই মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে, আবার যাদের ফোন খোলা আছে তাদের ফোন রিসিপ হচ্ছে না।

বিগত কমিটির বিশেষ সম্পাদক অ্যাড. নাদিম মোস্তফা এবার কাঙ্খিত পদ পাননি। ঘোষিত নতুন কমিটিতে তাকে দেওয়া হয়েছে নির্বাহী সদস্য পদ। এতে তিনি ও তার সমর্থকরা ক্ষুব্ধ। সমর্থকরা এটাকে তাদের নেতার পদাবনতি হিসেবেই দেখছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নাদিম মোস্তফাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফোনে রিং হলেও কেউ রিসিপ করেননি।

এছাড়া জাতীয় নেতা হওয়ার মতো ভাবমূর্তি রয়েছে, আলোচনায় থাকা এমন অনেককেই স্থায়ী কমিটির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এম মোর্শেদ খান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান। তারাও প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নারাজ। একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

তবে পদ পায়নি বলে এমন অনেকে দল থেকে পদত্যাগ কিংবা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবেন এমন কথা মানতে নারাজ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তারা বলছেন, বড় দল হিসেবে এখানে পদ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে কিছুটা ক্ষোভ থাকবেই। এত বড় দলে সবাইকে পদে আসীন করা সম্ভব নয়। কিছুদিনের মধ্যেই সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তারা।

বিএনপির যৃগ্মমহাসচিব হারুণ অর রশিদ বলেন, প্রত্যেকটি বড় দলের কমিটি গঠন নিয়ে এমনটি হয়ে থাকে। বড় দলে নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা থাকবেই, এটা দোষের কিছু নয়। কাঙ্খিত পদ না পেয়ে যারা কিছুটা মনোক্ষুন্ন হয়েছেন কিছুদিনের মধ্যেই সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

কমিটি ঘোষণার পর মেজর (অব,) হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদসহ অনেকের সঙ্গে কথা হলেও  তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারা সবাই বলেন, ‘নো কমেন্ট’।

তবে নোমান বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলের অনেক নেতাকর্মী ফোন করে তাদের হতাশার কথা জানিয়েছেন। ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান জানিয়েছেন, ‘আমাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকার আমার কোনো ইচ্ছা নেই।’

আরেক নেতা বলেন, ‘কোনো মন্তব্য করব না; নীরব হয়ে যাব।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক নেতা বলেন, ‘কী করব? রাজনীতি করব না।

নোমানসহ বাদ পড়া নেতাদের পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির প্রবীণ নেতারাও ঘোষিত কমিটি নিয়ে হতাশা জানিয়ে একই ধরনের কথা বলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট