গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি : বিএনিপর নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ভূমিকায় হতাশ জনগণ

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি : বিএনিপর নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ভূমিকায় হতাশ জনগণ

ভোক্তা পর্যায়ে দেড় বছরের ব্যবধানে সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়ালো বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। দুই দফায় গড়ে গ্যাসের দাম বাড়বে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ। এ দাম কার্যকর হবে প্রথম দফায় আগামী ১ মার্চ থেকে আর দ্বিতীয় দফায় ১ জুন থেকে। এর ফলে গাড়িতে ব্যবহৃত সিএনজির তুলনায় গৃহস্থালিতে দাম বেশি বাড়ায় প্রভাব পড়বে জনজীবনে। দুই বছরের মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সব মহলেই।

সরকারি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনিপর নেতৃত্বাধীন বিরোধী ২০ দলীয় জোট কোনো কর্মসূচি না দেয়ায় হতাশ হয়েছে দেশের জনগণ। হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচিতে না গেলেও অন্তত বিক্ষোভের ডাক দিতে পারত তারা, এমনটি ভাবনা সাধারণ জনগণের। কিন্তু বাস্তবে উদ্বেগ প্রকাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে বিএনপি।

বিএনপি জোটের অন্য শরীকদের অবস্থাও একই অবস্থা। তারাও শক্ত কোনো কর্মসূচি দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারেনি। এতে হতাশা দেখো গেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

২০০৯ সালে গ্যাসের দাম ১১ শতাংশ বৃদ্ধির পর সর্বশেষ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ফের বাড়ানো হয়েছিল ২৬ শতাংশ হারে। এ হিসাবে ছয় বছরের ব্যবধানে ওই দুই দফায় মিলে গ্যাসের দাম বেড়েছিল ১৭ শতাংশের কিছু বেশি। এবার পর পর দুই মাসে দুই দফায় তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।

অনেক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নয় বরং কামনোর পক্ষে কথা বলার সরকার ২০১৬ সালের পর দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সরকার সে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গিয়ে নতুন করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পরল।

সরকারি এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক জোট, যারা আগামীতে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে, তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কর্মসূচি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও কয়েকদিন আগে থেকেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা চলছিল। গ্যাসের মতো জনসম্পৃক্ত খাতে বিএনপির আগাম কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল না বলেই তারা কর্মসূচি দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

বিরোধী জোটের নেতৃত্বদানকারী বিএনপির কোনো কর্মসূচি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জোট সঙ্গী কয়েকটি দলের নেতারাও।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাধারণ মানুষের মতামত না নিয়ে সরকারের গ্যাসের দাম বৃদ্ধি গণবিরোধী ও অযৌক্তিক।

তিনি বলেন, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের এমন অনৈতিক, অযৌক্তিক, গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি। জনগণকে জিম্মি করে রাজস্ব আদায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না।

এদিকে ‘সরকারের নির্দেশে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (বিইআরসি) কর্তৃপক্ষ গ্যাসের মূল্য ২২.৭ শতাংশ বাড়ানোর অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে’ দেয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারাও দলীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি।

এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত ১৮ মাসের ব্যবধানে গ্যাসের মূল্য দ্বিতীয়বার বৃদ্ধি করার সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত জাতির উপর চাপিয়ে দিয়ে দেশের দরিদ্র এবং সাধারণ জনগণের ওপর চরম জুলুম করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০১৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ২ চুলার বিল ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা এবং একচুলার বিল ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছিল এবং সিএনজি প্রতি ঘনমিটারের দাম ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা বর্তমানেও বহাল আছে। মাত্র ১৮ মাসের ব্যবধানে গ্যাসের দাম এতো অধিক পরিমাণে বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট