২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২
শেষবারের মতো ছেলেকে দেখার আকুতি মা-বাবার
তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সুনামগঞ্জ থেকে : ইতালী যেতে ভূমধ্যসাগরে ডুবল সাজ্জাদ আহমেদ (২৪) নামের এক তরুণের রঙ্গীন স্বপ্ন। তার বাড়ি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভিমখালী ইউনিয়নের ফেকুল মাহমুদপুর গ্রামে। সাজ্জাদের মা রহিমা খাতুন তার ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে পুত্রশোকে বুক চাপড়িয়ে বিলাপ করছেন। বিলাপের মাঝে হঠাৎ সংজ্ঞা হারান তিনি।
দানা-পানি ছেড়ে পুত্রশোকে শয্যাশায়ী হয়ে আছেন দুখিনী মা। বার-বার বিলাপ করে বলছেন ‘তোমরা আমার ফুয়ারে আইন্যা দেও (আমার ছেলেকে এনে দাও)। আমার ফুয়া অখন কই আছে?’ এছাড়া আর কোনো কথা বলছেন না তিনি। শুধু বিলাপ করেই কাঁদছেন। স্বজ্জনরা ও প্রতিবেশীরা তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিজেরাও চোখ মুছে ফিরছেন।
এ দিকে পুত্র হারিয়ে শোক ও কঠিন মানসিক আঘাত নিয়ে পিতা নূরুল আমিন নির্বাক হয়ে গেছেন। সরকারের কাছে তিনি ও তার পরিবার জোর দাবি জানিয়েছেন, মৃত ছেলে সাজ্জাদকে তাদের কাছে শেষবারের মতো ফিরিয়ে দিতে। প্রিয় সন্তানকে চোখের জলে শেষ বিদায় জানাতে চান তারা।
জানা গেছে, দালালের মাধ্যমে প্রথমে সাজ্জাদকে লিবিয়া পাঠানো হয়। সেখান থেকে স্বপ্নের দেশ ইউরোপের ইতালিতে নৌ-পথে যাবার পথে গত ২৫ জানুয়ারি তীব্র ঠান্ডায় ভূমধ্যসাগরের বুকে নৌকাতেই মারা যান জামালগঞ্জ উপজেলার ভিমখালি ইউনিয়নের ফেকুল মামুদপুর গ্রামের নূরুল আমিনের ছেলে সাজ্জাদ আহমেদ (২৪)।
চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সাজ্জাদ আহমেদ নূরুল আমিন ও রহিমা খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। সাজ্জাদ আহমেদের পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩ ডিসেম্বর লালুখালি গ্রামের ফয়জুর রহমানের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় তাকে লিবিয়া পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছার পর অন্য আরেকজন দালালের মাধ্যমে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য আরো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়।
ছেলেকে লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য পিতা নূরুল আমিন জমি বিক্রি করে দালালের হাতে আরো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন। গত ৩ ডিসেম্বর পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ছাড়েন ২৪ বছর বয়সী স্বপ্নবাজ তরুণ সাজ্জাদ আহমেদ।
গত ২২ জানুয়ারি রাতে বাবাকে ফোন করেন সাজ্জাদ। তার কথা অস্পষ্ট। কেঁপে কেঁপে কথা বলছিল ছেলে সাজ্জাদ। অবশ্য বেশি কথা বলতে পারেনি ছেলেটি। ফোন লাইন কেটে যায়। ছেলের ফোনের পরেই বুক ধড়ফড়ানি শুরু হয় বাবা নূরুল আমিনের।
এরপরই লালুখালি গ্রামের দালাল ফয়জুর রহমানের কাছে ফোন দিয়ে ছেলের বিষয়ে জানতে চান তিনি। পরে ২৬ জানুয়ারি রাতেই তিনি তার ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েন। ছেলের মৃত্যুর পর লিবিয়া থেকে ইতালি নেওয়ার দালাল নিহতের বাবাকে ৩ লাখ টাকা ফিরিয়ে দেন। এখন তার একমাত্র প্রত্যাশা – ছেলের মুখ শেষবারের মতো স্ত্রীকে নিয়ে দেখতে চান। চোখের জলে বিদায় জানাতে চান প্রিয় সন্তানকে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D