২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৫১ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০১৮
ঈদে বাড়ীর ‘যুদ্ধ’ চলছে কমলাপুর রেল স্টেশনে। আগাম টিকিট বিক্রির শুরুতে আগের দিন রাতে লাইনে দাড়ালেও মঙ্গলবার থেকে একদিন আগে দাড়িয়েও টিকিটের শঙ্কায় কাটছে টিকিট প্রত্যাশীদের সময়।
গত ১ জুন থেকে আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। বুধবার (৬ জুন) দেওয়া হচ্ছে ১৫ জুনের টিকিট। অনেকেই আগের দিন বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসের অফিস করে শুক্রবার (১৫ জুন) বাড়ির পথে রওনা দেবেন। এজন্যই আজকের টিকিটে রয়েছে বাড়ছি চাপ। এদিনের টিকিট পেতে অনেকেই মঙ্গলবার (৫ জুন) সকালে এসে অপেক্ষা করছেন। টিকিট বিক্রি শুরু হয় বুধবার (৬ জুন) সকাল আটটায়। ১৫ জুনের টিকিট পেকে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৭ ঘন্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হয়েছে।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে চলছে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। বিক্রির শেষ দিনেও আজ বুধবার স্টেশনে উপচে পড়া ভিড়। ঢাকায় ফিরতি পথের টিকিট ১০ জুন থেকে বিক্রি শুরু হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিনের মতো আজও সকাল আটটায় ২৬টি কাউন্টারে একযোগে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট হাতে পেয়ে অনেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন। তবে বেশির ভাগের ছিল ‘কাঙ্ক্ষিত’ টিকিট না পাওয়ার ক্ষোভ।
টিকিট বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণ পরই স্টেশনের বিভিন্ন কাউন্টার থেকে জানানো হয় তাপানুকূল কোচগুলোর টিকিট শেষ। এতে দীর্ঘ সময় লাইনে অপেক্ষমাণ মানুষের মধ্যে চিৎকার ও হইচই শুরু হয়ে যায়। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রত্যাশিত টিকিট না পাওয়া লাইনে দাঁড়ানো বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুর রাকিব জানান, গতকাল থেকে লাইনে আছি এখন বলছে টিকিটি নাই। তাহলে টিকিট নিলো কে। আমরা লেইনে দাঁড়িয়ে আছি কেন?
রেলস্টেশনের ২৬টি কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি চলছে। এর মধ্যে দুটি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত। আজ ২৭ হাজার ৪৬১টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তবে নারীদের কাউন্টার দুটির উল্লেখ থাকলেও কেবল একটি কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি দেখা গেছে।
টিকিটপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোর থেকে অনেকে লাইন ধরেছেন। অনেকে লাইনে আছেন গতকাল সকাল, বিকেল কিংবা সন্ধ্যা থেকে। তারা স্টেশনেই পত্রিকা বা মাদুর বিছিয়ে রাত কাটিয়েছেন। রাতের খাবার ও সেহরি আশপাশেই করেছেন।
সকালে টিকিটপ্রত্যাশী মানুষের দীর্ঘ লাইন কাউন্টার থেকে স্টেশনের সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। তবে লাইন ভেঙে টিকিট নেওয়া বা কালোবাজারে টিকিট বিক্রির কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ‘কাঙ্ক্ষিত’ টিকিট না পেয়ে কিছুক্ষণ পর পরই টিকিট প্রত্যাশীদের লাইনে শোরগোল ও হইচই হচ্ছে।
টিকিটপ্রত্যাশীদের অনেকে অভিযোগ করেন, গতকাল সকাল, দুপুর বা সন্ধ্যায় স্টেশনে এসেও তাঁরা কাঙ্ক্ষিত তাপানুকূল কোচের টিকিট পাননি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতি ট্রেনের টিকিট কিনতে আসা অপেক্ষমাণ সারির তৃতীয়, অষ্টম, চৌদ্দতম অবস্থানে থাকা মানুষ কাঙ্ক্ষিত এসির টিকিট পাননি।
ডাক বিভাগের কর্মচারী রফিকুল ইসলাম কমলাপুর স্টেশনে এসেছেন গতকাল দুপুরে। লাইনে তিনি ছিলেন সাতজনের পরে। তিনি সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের চারটি এসির টিকিট চেয়েছিলেন। পেয়েছেন তিনটি। পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবেন। তিনি ঈদে বাড়ীর ‘যুদ্ধ’ চলছে কমলাপুর রেল স্টেশনে। আগাম টিকিট বিক্রির শুরুতে আগের দিন রাতে লাইনে দাড়ালেও মঙ্গলবার থেকে একদিন আগে দাড়িয়েও টিকিটের শঙ্কায় কাটছে টিকিট প্রত্যাশীদের সময়। তিনি বলেন, ‘এখন আমি বাকি একটা টিকিট কই পাই। ভারী বিপদে পড়লাম তো। এতক্ষণ দাঁড়ায়ে কী লাভটা হইল। উল্টো ঝামেলায় পড়লাম।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘গতকালের মতো আজকেও কাউন্টারগুলোতে প্রচুর ভিড়। লোকজন টিকিট কাটছে। ১০ মিনিট আগেও কাউন্টারে খোঁজ নিয়েছি, রাজশাহীর পথে ঈদ স্পেশালের এসির টিকিট আছে। নির্দিষ্ট কাউন্টারসহ নারী কাউন্টার, ৬ নম্বরে সামরিক বাহিনীর কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এসি, নন-এসি বিক্রি হচ্ছে। কোন ট্রেনের টিকিট চাইছে, তা তো জানি না। হয়তো যে স্টেশনে টিকিট কম বরাদ্দ আছে, সে স্টেশনে টিকিট চাইছে, এ জন্য পাচ্ছে না। টিকিট কিন্তু কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে, এখনো টিকিট আছে। আজ দু-একটি ট্রেন ছাড়া অন্যান্য ট্রেনের টিকিট থেকে যাবে। ছোট পথের ভ্রমণে যেমন দেওয়ানগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, আখাউড়া, ময়মনসিংহ—এসব পথে টিকিট বেশি বিক্রি হচ্ছে।’
তাপানুকূল কোচের টিকিট বিষয়ে সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রতিদিনই বলা হয় এসি টিকিটের সংখ্যা কম। টিকিট একটা থাকলেও আমরা দিয়ে দেব। টিকিট তো আমাদের প্রয়োজন নেই, যাত্রীদের প্রয়োজনে।
অনলাইনে টিকিট বিক্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনলাইনের কোনো টিকিট অবিক্রীত থাকলে ৪৮ ঘণ্টা আগে কাউন্টারে চলে আসবে।
ঈদযাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে স্টেশনের এই ব্যবস্থাপক বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করব ট্রেনগুলো যথাসময়ে ছাড়ার। কেউই চায় না দেরি করতে। আমরাও চাই, বাকিটা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D