৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:০৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২৪
সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন চার ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। শুক্রবার দিবাগত রাত পৌণে ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তবে দুর্ঘটনার পর স্থানীয় উত্তেজিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রীতিমতো তান্ডব চালিয়েছেন। ভাংচুর করেছেন একটি এম্বুলেন্স, হাসপাতালের আসবাবপত্র এবং জরুরী বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম। এছাড়া কর্তব্যরত ডাক্তারকে মারধর ও হাসপাতালের গ্যারেজে থাকা একটি নতুন জিপ গাড়িও জ্বালিয়ে দিয়েছেন তারা। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সালাহ্উদ্দিন মিয়া।
শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার পর প্রথমে দুজনের মৃতদেহ নিয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আসেন তারা। এসময় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক (ইএমও) হিল্লোল সাহা দুইজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর আরও দুজনকে নিয়ে আসেন কয়েকজন। তবে এই দুজনও আগে থেকেই মৃত ছিলেন। তাই আমাদের প্রকৃত অর্থে কিছুই করার ছিলো না।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের সামনেই আমরা ইসিজি করেও দেখিয়েছিলাম যে তাদের হাসপাতালে আনার আগেেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তারা তা মানতে রাজি নন। তারা আমাদের চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেছেন, জরুরী বিভাগসহ হাসপাতালে ভাঙচুর করেছেন। এমনকি আমাদের আবাসিক কমপ্লেক্সে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন।
এসময় পুলিশের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের সামনেই হামলা চালানো হয়েছে। তারা অন্তত দুই থেকে তিনশো লোক ছিলেন আর অল্প কয়েকজন পুলিশ, কিইবা করার আছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে ডা. মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া বলেন, দুইটি গাড়ি গ্যারেজে ছিলো। তারা গ্যারেজের তালা ভেঙে একটি এম্বুলেন্স ভাঙচুর করেছেন আর অপরটি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের আসবাবপত্র ও জরুরী বিভাগের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আবেগের বশবর্তী হয়ে নিহতের স্বজনরা এমনটি করেছেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।’
তবে এ ঘটনার সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার ব্যাপারটি অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনার আকিস্মিকতায় স্থানীয় উত্তেজিত জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। পরবর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের মধ্যস্ততায় ঘটনাটি সমাধান হয়। এখানে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়।
এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, শুনেছি গতকাল (শুক্রবার) রাতে তাদের চিকিৎসা নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা হাসপাতালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তদন্তপূর্বক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায় থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ জানান, জৈন্তাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মীদের সহযোগিতায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদেরকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুইজনকে আশংঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তারা মারা যান। পরে রাতেই ৪টি মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাদের নিজ নিহ বাড়িতে নেওয়া হয়।
জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, আবেগের বশবর্তী হয়ে নিহতের স্বজনরা এমটি করেছেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার সময় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মি জৈন্তাপুর থেকে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তামাবিলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪নং বাংলাবাজার রাংপানি লক্ষীপুর এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি মহাসড়কের পাশে খাদে পানিতে পড়ে যায়। এতে চারজনের মৃত্যু হয়।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D