সিলেটের ভোলাগঞ্জে জেলার প্রথম বর্ডার হাটের উদ্বোধন

প্রকাশিত: ৬:২৪ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২৩

সিলেটের ভোলাগঞ্জে জেলার প্রথম বর্ডার হাটের উদ্বোধন

কয়েকদফা পিছিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে জেলার প্রথম বর্ডার হাটের। শনিবার (৬ মে) সকালে এই হাটের উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকেই এখানে ক্রয়বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়।

হাটের উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও সিলেটে নিযুক্ত সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জয়শওয়াল। এসময় দু-দেশের প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এমন হাটের মাধ্যমে অর্থনৈতিক, সামাজিক সম্পর্কোন্নয়নের পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

ভারতের মেঘালয়ের ইস্ট খাসি হিলস ও কোম্পানিগঞ্জের ভোলাগঞ্জে অবস্থিত এই বর্ডার হাট প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার ২ দিন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। এখানে ভারতের ২৬ টি ও বাংলাদেশের ২৪ টি স্টল থাকবে। হাটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হবে এবং হাটের ৫ কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দারা পণ্য ক্রয়বিক্রয়ের সুযোগ পাবেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং জানান, আবেদনকারী বিক্রেতাদের মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে ২৪ জন বিক্রেতা বাছাই করা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্যান্য আবেদনকারী বিক্রেতাদেরকে লটারির মাধ্যমে সুযোগ দেওয়া হবে।

এদিকে আবেদনকারী ক্রেতাদের মধ্যে বর্ডার হাট ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরে কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের ভিজিটর কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, একজন ক্রেতা একদিনে সর্বোচ্চ ২০০ ডলারের সমমান টাকার পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। প্রবেশ ফি বাবদ কার্ডধারী একজন ক্রেতাকে দৈনিক ৩০ টাকা ও বিক্রেতাকে দৈনিক ৭০ টাকা প্রদান করতে হবে। এ টাকা বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদনক্রমে এই হাটের সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে।

বর্ডার হাটের ক্রয়বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্টানে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বন্ধুত্ব ভালোবাসেন। এজন্য ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় বর্ডার হাট স্থাপন করেছেন। এতে আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে।

মন্ত্রী বলেন, এ বর্ডার হাট পরীক্ষামূলক। এখান থেকে ভালো কিছু আসলে পরবর্তীতে সিলেটের সীমান্ত এলাকাগুলোতে আরও হাট বসানো হবে।

প্রবাসীকল্যানমন্ত্রী বলেন, এ হাট পরিচালনার ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবিকে আরো তৎপর হতে হবে। বর্ডার হাট ব্যবসার জন্য, স্মাগলিংয়ের জন্য না। এখানে আড্ডার জন্য যাওয়া যাবে না।

মন্ত্রী বলেন, বর্ডার হাটে কেউ খারাপ কোনো উদ্যেশ্য নিয়ে যেতে পারে। কেউ যাতে ভিতরে গিয়ে কোনো অপকর্ম করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার নিরাজ কুমার জায়সওয়াল বলেন, সিলেট থেকে যেসব পণ্য তৈরি হবে সেগুলো
বর্ডার হাটে বিক্রি করতে পারবেন। ভারতের তারাও বিক্রি করবে। এতে দুদেশের লাভ হবে।

তিনি বলেন, যাদের আত্মীয় স্বজন ভারতে আছেন বর্ডার হাটে তাদের সাথে দেখা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো ধরণের ভিসা লাগবে না। সিলেটে আরও কয়েকটি বর্ডার হাট হবে। সুনামগঞ্জে একটা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক সিলেট মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতি ছিলেন, ভারতের সহকারী হাই কমিশনার (সিলেট) নিরাজ কুমার জাসওয়াল, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইমরুল হাসান। এছাড়াও ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার হাট ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে বর্তমান ১৩ টি বর্ডার হাটের কার্যক্রম চালু রয়েছে। আরও ৩ টি বর্ডার হাট চালুর অপেক্ষায় রয়েছে।

২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রসারে সীমান্ত হাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের বাংলাদেশ এবং ভারতের জিরো পয়েন্ট (ভারত অভ্যন্তরে) এক একর জায়গার উপর প্রস্তাবিত এই বর্ডার হাটের কাজ শুরু হয়।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট