১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২১
ছোট্ট কাঠের ফুলের ওপর রং-তুলির প্রলেপ দিচ্ছেন সিনথী। রং শুকানোর পর আঠার সাহায্যে এই ফুল লাগানো হবে এক রঙা টিপের ওপর। এভাবে তৈরি হবে নকশী টিপ। রং মাখা হাতে, তুলি নিয়েই উঠে এলেন সিনথী। কাজের ফাঁকেই কিছুক্ষণ কথা বললেন নিজের উদ্যোগ নিয়ে।
সিনথীর পুরো নাম শাহরিন রহমান সিনথী। কাঠের গয়নার অনলাইন প্রতিষ্ঠান ‘অয়োময়ী’র কর্ণধার তিনি। জন্ম আর বেড়ে ওঠা দুটোই ঢাকা নগরীতে। অতি আদরে ছেলেবেলা কেটেছে সিনথীর। সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন বাবা। কিন্তু মাত্র ১৫ বছর বয়সেই বাবাকে হারান তিনি। বাবার মৃত্যুর পর কঠিন হয়ে পড়ে সিনথীর জীবন।
সিনথীর কাছে শুরুতেই জানতে চাই, প্রতিষ্ঠানের নাম অয়োময়ী কেন? সিনথী বলেন, অয়োময়ী নামকরণের পেছনে কারণটা খুব অদ্ভুত। আমি কোনো এক বইতে পড়েছিলাম অয়োময় অর্থ লোহা দিয়ে তৈরি। আমি নিজের ব্যক্তিগত জীবনে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েও গিয়ে শক্ত থেকেছি। তাই আমার মনে হয়েছিল অয়োময়ী নামটা লোহার মতো শক্ত মনোবলের এক মেয়ের প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরুর গল্প বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অনলাইন ব্যবসায়ের চিন্তা আমার অনেক আগে থেকেই ছিল কিন্তু নির্দিষ্ট সোর্সের অভাবে শুরু করা হয়নি। কাঠের তৈরি পন্যের প্রতি আমার বেশ আগে থেকেই ভালো লাগা ছিল। তাই কাঠের গয়না আর হাতে নকশা করা টিপ নিয়ে শুরু করেছিলাম অয়োময়ীর যাত্রা। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে অয়োময়ীর যাত্রা শুরু হয়।
আয়োময়ীর কিছু গয়না
আয়োময়ীতে রয়েছে কাঠের তৈরি মালা, দুল, হাতে নকশা করা টিপ। কিছু গয়নায় ফুটে উঠেছে বাংলার ঐতিহ্য। কোথাওবা দেখা যায় দেশি কোনো ফুলকে জীবন্ত করার চেষ্টা।
কাঠের গয়না নিয়ে বর্তমানে অনেকেই কাজ করছেন। নিজেকে কেন আলাদা মনে করেন? জানতে চাইলে সিনথী বলেন, আমি আমার উদ্যোগে ক্রেতা সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেই। বিক্রয়ের জন্য কোনো ক্রেতাকে জোর করি না এবং ক্রেতার আগ্রহ আর ভালোলাগাকে প্রাধান্য দেই। আমার মনে হয় এই দিকগুলো একজন ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
ব্যবসায়ে ক্রেতার সঙ্গে সমন্বয়কে মূখ্য বিষয় মনে করেন সিনথী। তিনি বলেন, ক্রেতাদের তুচ্ছ নজরে দেখা উচিত নয়। কারণ তারা আছেন বলে আমরা উদ্যোক্তাগন আমাদের উদ্যোগ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি এবং অনেকে সফলতাও অর্জন করছি।
ব্যবসাক্ষেত্রে নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে সিনথী বলেন, যেকোনো কাজেই ভালো আর খারাপ অভিজ্ঞতা তো থাকেই। ভালো অভিজ্ঞতা বলতে কিছু ক্রেতার ব্যবহার এত অমায়িক ছিল যা একজন উদ্যোক্তার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। অপর দিকে সবচেয়ে কষ্টকর হচ্ছে সেসব ক্রেতাদের সামলানো যখন তারা বলেন কমিয়ে রাখা যাবে নাকি কিংবা ডেলিভারি চার্জ দেওয়া কেন বাধ্যতামূলক। একবার তো একজন পণ্যের জন্য সম্পূর্ণমূল্য পরিশোধ করেছেন কিন্তু এরপর কোন ঠিকানায় পাঠাবো কার কাছে পাঠাবো না বলেই বেশ কিছুদিন লাপাত্তা ছিলেন যেটা আমার জন্য মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছিল।
কাজের ব্যাপারে সিনথীকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন মা ফারজানা ইসলাম। বাবার মৃত্যুর পর মা সব ক্ষেত্রেই তার অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিলেন।
কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করে সিনথী বলেন, বর্তমানে সৃজনশীল কাজের গ্রহনযোগ্যতা পূর্বের চেয়ে কমে গেছে বলে আমি মনে করি। নিজের কাস্টমাইজড পণ্যের কপি দেখলে মনে হতো থামিয়ে দেই সব কিংবা বন্ধ করে দেই। তখন আমি নিজেকে বুঝিয়েছি যে অল্পেই দমে গেলেই হবে না। ধৈর্য ধরে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে হবে।
একদিন নিজের উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেখার স্বপ্ন দেখেন সিনথী। তিনি তার স্বপ্নকে যেন খুব জলদি ছুঁতে পারেন সেই কামনায় আড্ডা শেষ করলাম।

EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D