একনায়কতন্ত্র চলবে না : মমতা

প্রকাশিত: ১:২৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০১৬

ভারতে নোট বাতিল ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, একনায়কতন্ত্র চলবে না। যে আমাদের সঙ্গে টক্কর নেবে, সে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

বুধবার দুপুরে পাটনার জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি জরুরি অবস্থার থেকেও খারাপ। এটা অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা।

এদিন প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিগ বাজারের বিগ বস দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তানাশাহি নেহি চলেগা, যো হমসে টকরায়েগা, চুর চুর হো জায়েগা। নোটবন্দি ওয়াপস লো (একনায়কতন্ত্র চলবে না। যে আমাদের সঙ্গে টক্কর নেবে, ধূলিসাৎ হয়ে যাবে)।

রাজ্য ও লোকসভায় বিরোধী সাংসদদের দফায় দফায় ওয়াকআউট আর বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা করে আক্রমণ এই জোড়া তিরে বুধবার বেশ অস্বস্তিতে পড়ল মোদী সরকার।

মমতা আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য আমাদের এই লড়াই চলবে। সাধারণ মানুষ, কৃষক ও শ্রমিকদের টাকা, রাজ্যের টাকা কেড়ে ওরা বলছে ওদের আয় বেড়েছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। শিল্প উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ওরা কো-অপারেটিভ ব্যাংক বন্ধ করে দিয়ে বিগবাজারকে ব্যাংকে পরিণত করেছে। দেশের অধিকাংশ গ্রামে ব্যাংক নেই। সেখানে মানুষ কীভাবে বাঁচবেন? ওদের পরিমাণমতো নোট ছাপানোর ক্ষমতা নেই। এই অবস্থা স্বাভাবিক হতে অন্তত দু’বছর লাগবে। মানুষ কীভাবে তাদের জীবনধারণ করবে? কে তাদের ২ হাজার টাকার নোট ভাঙিয়ে দেবে? এখন মাসমাইনের সময় আর ব্যাংক ও এটিএম -এ টাকা নেই। কীভাবে চলবে মানুষের?

সিনেমা জগতের কিছু লোক নোট বাতিলকে সমর্থন করেছেন। হয়তো ওদের ভয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু বহু অর্থনীতিবিদ এই নোট বাতিলের বিরোধিতা করেছেন। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনীতিবিদরা অনেকেই এই নোট বাতিলের বিরোধিতা করেছেন। আরবিআই গর্ভনরের বদলে মোদী এই ঘোষণা করেছেন। এটা পদ্ধতিগতভাবেও একটা ভুল।

প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন সকলকে ১৫ লাখ টাকা ফিরিয়ে দেবেন। কোথায় সেই টাকা? উল্টো গরিবের রক্ত পানি করা পরিশ্রমের রোজগার উনি কেড়ে নিতে চাইছেন।

ওরা মনে করে শ্রমিক, কর্মচারী, গৃহকর্ত্রী এদেরও কালো টাকা আছে? এর উত্তর মানুষ এদের ভোটবাক্সে দেবে।

মোদী বিদেশ সফর করেছেন। কিন্ত বিদেশ থেকে কত কালো টাকা ফেরত এনেছেন? নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার দিনও ওরা নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনেক টাকা জমা করেছে।

নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর ওরা কেন ওদের সাংসদ, বিধায়কদের অ্যাকাউন্টের হিসেব চাইছে? ওদের পুরনো রেকর্ডও দেখা উচিত।

গত সেপ্টেম্বর মাসেও ওরা পার্টির নামে জমি কিনেছে। আগে থেকেই ওদের সবকিছু জানা ছিল। ওনার পোশাক ও জীবনযাত্রা দেখুন। নিজের সভায় বাইরে লোক নিয়ে আসেন উনি।

প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছেন পে-টিএম ব্যবহার করার জন্য। আমি তাকে প্রশ্ন করতে চাই আলিবাবা কে? মোবাইল কোম্পানি আর পেটিএমের সঙ্গে কীসের লেনদেন মোদীজির।

সরকারের দায়িত্ব সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখন ওদের কাজের জন্যই দুর্ভোগের স্বীকার। বর্তমানে পরিস্থিতি জরুরি অবস্থার থেকেও ভয়ংকর। স্বাধীনতার ৬০ বছর পরেও মানুষের স্বাধীনতা জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা।

সূত্র : দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি