৩০ লাখ অভিবাসীকে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প

প্রকাশিত: ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০১৬

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বিক্ষোভের মধ্যেও অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে আগের অবস্থানেই রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিবিএস টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর ২০ থেকে ৩০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। অভিবাসীদের নিয়ে বিতর্কিত নানা বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মধ্যেও গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে জয়ী হন রিপাবলিকান এই প্রার্থী। তার জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের নানা শহরে সহিংস বিক্ষোভ চলছে, যার মধ্যে অভিবাসীসহ অভিবাসী অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনও রয়েছে। এর মধ্যেই সিবিএস টিভিকে সাক্ষাৎকার দিতে বসেন ট্রাম্প। বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে তা প্রচারের কথা থাকলেও এর চুম্বক অংশ ওয়েবসাইট তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যমটি। সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আমরা যা করতে যাচ্ছি তা হলো অপরাধী ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের রেকর্ড রয়েছে, অপরাধী চক্রের সদস্য, মাদক ব্যবসায়ী- এ ধরনের প্রচুর লোক রয়েছে, সম্ভবত দুই মিলিয়ন- এমনকি এটা তিন মিলিয়নও হতে পারে, তাদের বের করব। আমরা তাদের দেশ থেকে বের করছি বা জেলে ঢুকাচ্ছি। আমরা তাদের দেশ থেকে বের করতে যাচ্ছি। তারা অবৈধভাবে এখানে আছে। সীমান্ত সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, একবার এটা করা গেলে ইমিগ্রেশন ব্যুরো ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট দেশে থেকে বাকি অবৈধ অভিবাসীদের সম্পর্কে ধারণা পাবে। সীমান্ত সুরক্ষিত এবং সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে গেলে কারা ‘দুর্র্ধর্ষ’ তা বের করা যাবে বলে মনে করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার যে কথা তিনি নির্বাচনি প্রচারে বলেছিলেন, তা বাস্তবায়নেরও ঘোষণা দেন ট্রাম্প। সত্যি সত্যি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে (মেক্সিকোর সঙ্গে) দেয়াল নির্মাণ করতে চান কি না- প্রশ্নের জবাবে তিনি সরাসরিই বলেন, হ্যাঁ। ভোটের প্রচারে মুসলিমদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধের কথা বলে সমালোচনার মুখে পড়ার পর তা থেকে সরে এখন ট্রাম্প বলছেন, যেসব দেশ থেকে সন্ত্রাসী আসছে, সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করবেন তিনি। নিউ ইয়র্কের এই ধনকুবের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নিয়েই প্রচার চালিয়ে গিয়েছিলেন। নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্যের জন্যও সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল তাকে। ভোটে জিতলেও ‘ট্রাম্পের পতন হোক’, ‘ট্রাম্প আমাদের প্রেসিডেন্ট নন’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধারাবাহিক বিক্ষোভ চলছে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, মিয়ামি, লস এঞ্জেলেস, সিয়াটল, ওকল্যান্ড ও পোর্টল্যান্ডসহ বিভিন্ন শহরে। সাক্ষাৎকারে নির্বাচনে জয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকার কথা বলেছেন আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া ট্রাম্প। তবে ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে টুইটার ও ফেসবুক ব্যবহারে সংযত হওয়ার কথা বলছেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, সংবাদমাধ্যমে ‘নেতিবাচক খবর’ প্রচারের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া তাকে ঘুরে দাঁড়ানোর একটি পথ তৈরি দেয়। সোশ্যাল মিডিয়াকে ‘অসাধারণ’ অভিহিত করেন তিনি। ট্রাম্প এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখছেন বলেই সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে দুই কোটি ৮০ লাখ মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান ট্রাম্প। এটা খুব ভালোবাসি তা আমি বলছি না। তবে এটা বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়।