ধাক্কা কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ, ৩২ ওভারে সংগ্রহ ৮৮/২

প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০১৬

চট্টগ্রাম : দলীয় ২৯ রানে ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হককে হারানোর প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ। জুটি গড়ে দলকে সামনে এগিয়ে নিচ্ছেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরই মধ্যে পঞ্চাশ রানের পার্টনারশিপ ছাড়িয়েছেন দু’জন।

মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগের ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন মঈন আলী। ইমরুলকে (২১) ক্লিন বোল্ড করার পর মুমিনুল হককে (০) বেন স্টোকসের ক্যাচে পরিণত করেন এ ‍ডানহাতি অফস্পিনার।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ২৯৩ রানের জবাবে টাইগারদের সংগ্রহ ৩২ ওভার শেষে দুই উইকেটে ৮৮। তামিম ৪৫ ও মাহমুদউল্লাহ ১৯ রানে ব্যাট করছেন।

দ্বিতীয় দিনে ৩৫ রান তুলতেই ইংলিশদের বাকি তিন উইকেটের পতন হয়। আগের দিনের পাঁচ উইকেট শিকারি মেহেদি হাসান মিরাজের হাত ধরেই ১০৫.৫ ওভারে অলআউট হয় সফরকারীরা।

১০৩তম ওভারের প্রথম বলেই অলআউট হতো সফরকারীরা। রিভিউর কল্যাণে বেঁচে যান স্টুয়ার্ট ব্রড! নিজের ‍তৃতীয় উইকেটের লক্ষ্যে তাইজুল ইসলামের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন কুমার ধর্মসেনা। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগ স্টাম্প মিস করছে।

শেষ পর্যন্ত মিরাজের হাত ধরেই ইংলিশ ইনিংসের কবর রচিত হয়। ব্রডকে (১৩) মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করে নিজের উইকেট সংখ্যাটা ৬-এর ঘরে নিয়ে যান এ উঠতি অফস্পিন অলরাউন্ডার।।

দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই উইকেট উদযাপনে মাতেন তাইজুল ইসলাম। লেগ শর্টে দাঁড়ানো মুমিনুল হকের তালুবন্দি হন ক্রিস উকস (৩৬)। ১০১তম ওভারে অাদিল রশিদকে (২৬) সাব্বির রহমানের ক্যাচ বানিয়ে নিজের ‍দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন এ বাঁহাতি স্পিনার।

দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরতেন রশিদ। প্রথম দিনের নায়ক মিরাজের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়াও দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি।

এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে সফরকারীরা। টেস্ট অভিষেকেই মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) প্রথম দিনে একাই পাঁচটি উইকেট তুলে নেন মিরাজ। দিন শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় সাত উইকেটে ২৫৮। বাকি দু’টি নেন সাকিব আল হাসান।

প্রথম ইনিংসের দশম ওভারে বেন ডাকেটকে (১৪) ক্লিন বোল্ড করে ব্রেকথ্রু এনে দেন মিরাজ। পরের ওভারে ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককে (৪) ফেরান সাকিব আল হাসান। এ ম্যাচ দিয়ে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন কুক।

এর পরের ওভারেই দলীয় ২১ রানে আরেকটি উইকেটের পতন ঘটে। টানা তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মুখেই পড়ে ইংলিশরা। গ্যারি ব্যালান্সকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মিরাজ।

চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে প্রাথমিক চাপ সামাল দেন জো রুট ও মঈন আলী। ৩০তম ওভারে দু’জনের ৬২ রানের জুটি ভাঙেন মিরাজ। ইংল্যান্ডের ব্যাটিংস্তম্ভ রুটকে (৪০) সাব্বিরের ক্যাচে পরিণত করেন ১৮ বছরের এ উঠতি অলরাউন্ডার।

৪১তম ওভারে আবারো সাকিব আঘাত। এবার বেন স্টোকসের (১৮) স্টাম্প ভাঙেন টেস্টের সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ১০৫ রানে পাঁচ উইকেট হারায় ইংলিশরা। কিন্তু জনি বেয়ারস্টোকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৮৮ রান যোগ করেন মঈন।

এদিন ‘ভাগ্যদেবী’ বোধ হয় মঈনের ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন! তিনবার আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। বাংলাদেশেরও দু’টি রিভিউ আবেদন বিফলে যায়। তবে এতোবার জীবন পেয়েও লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি।

ম্যাচের ৬৮তম ওভারের শেষ বলে মঈনকে ফিরিয়ে দলে স্বস্তি এনে দেন মিরাজ। মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন ২৯ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৮২তম ওভারে অফস্পিন ভেল্কিতে আরেক ‘পথের কাটা’ বেয়ারস্টোকে (৫২) বোল্ড করার মধ্য দিয়ে পাঁচ উইকেটের অভিজাত ক্লাবে নাম লেখান মিরাজ।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, শফিউল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম রাব্বি।

ইংল্যান্ড একাদশ: অ্যালিস্টার কুক (অধিনায়ক), বেন ডাকেট, জো রুট, গ্যারি ব্যালান্স, বেন স্টোকস, জনি বেয়ারস্টো (উইকেটরক্ষক), মঈন আলী, ক্রিস ওকস, আদিল রশিদ, গ্যারেথ বেটি এবং স্টুয়ার্ট ব্রড।