স্বপ্নের চেয়েও বড় অভিষেক হয়েছে : মিরাজ

প্রকাশিত: ২:০৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০১৬

টেস্ট অভিষেকেই পাঁচ উইকেট নিয়ে অভিজাত ক্লাবে নাম লেখালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮২তম ওভারে জনি বেয়ারস্টোকে নিজের পঞ্চম শিকারে পরিণত করেন ১৮ বছর বয়সী এ অফস্পিন অলরাউন্ডার।

ম্যাচ পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের মিরাজ বলেন, এমন অভিষেক হবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি। ভেবেছিলাম হয়তো ২ বা তিন উইকেট পাবো। স্বপ্নের চেয়েও বড় অভিষেক হয়েছে।

সাফল্যের পেছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে মিরাজের? তিনি জানালেন, দীর্ঘ সময় লাইনে বল করে যাওয়া। অধিনায়ক মুশফিক আমাকে বলেছিলেন, তোমাকে উইকেটের চিন্তা করতে হবে না। তুমি শুধু লাইন-টু-লাইন বল করে যাও।

ঘরোয়া ক্রিকেটে মিরাজ দিনে ৩০ থেকে ৪০ ওভার বল করেছেন। তার এ ধৈর্য তাকে এ সফলতা এনে দিতে সহায়তা করেছেন বলেন জানান মিরাজ।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে অভিষেক ৫ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। সবচেয়ে কম বয়সী বাংলাদেশী বোলার হিসেবে অভিষেকে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। এর আগে টেস্ট অভিষেকে বাংলাদেশর সাতজনের এই কীর্তি আছে।

মিরাজের উইকেটগুলো হলো- জো রুট, গ্যারি ব্যালান্স, বেন ডাকেট, মঈন আলী ও জন ব্যারিস্টো।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মিরাজ খেলেছেন এ পর্যন্ত ১২টি ম্যাচ। ১৪ ইনিংস ব্যাট করে তিনি করেছেন ৫২৪ রান। আর বল হাতে ১৯ ইনিংস বল করে নিয়েছেন ৪১টি উইকেট।

দীর্ঘ চৌদ্দ মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই বোলিংয়ে আলো ছড়াচ্ছে বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৮৪ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৪০। মেহেদী পাঁচটি আর সাকিব আল হাসান নিয়েছেন দুই উইকেট।

এর আগে টস হেরে বোলিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া মুশফিকুর রহিমের দল শুরু থেকেই সফরকারীদের স্পিন ফাঁদে ফেলার ছক কষে। তাতে সফলতাও আসে দ্রুতই। ইনিংসের ১০তম ওভারে অভিষিক্ত মিরাজের আঘাতের পর সাকিবের উইকেট ও মিরাজের দ্বিতীয় আঘাতে প্রথম সেশনটি নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকরা।

দারুণ এক বলে বাঁহাতি বেন ডাকেটকে (১৪) বোল্ড করে শুরুটা করেন মিরাজ। পরের ওভারে সাকিব এসে তুলে নেন অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককে (৪)। দ্বাদশ ওভারে আবারো আঘাত হানেন মিরাজ। তবে তার এলডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার প্রথমে সাড়া না দিলে রিভিউ নিতে দেরি করেননি অধিনায়ক মুশফিক। তাতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে পরিবর্তনও আসে। গ্যারি ব্যালান্সকে (১) সাজঘরে ফিরে যেতে হয়।

ম্যাচের ২৪তম ওভারে তাইজুল ইসলামের তৃতীয় বলে আরো একবার এলবিডব্লিউয়ের জোরালো আবেদন ওঠে। এবারের ব্যাটসম্যান ছিলেন মঈন আলি। আম্পায়ার সাড়া না দিলে আরো একবার রিভিউ নেন টাইগার অধিনায়ক। তবে রিপ্লে পর্যবেক্ষণের পর এবার নটআউটের সিদ্ধান্তই আসে।

পরে ২৭তম ওভারের পঞ্চম বলে মঈন আলিকে প্রায় আউটই করে ফেলেছিলেন সাকিব! লেগবিফোর উইকেটের আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ারও। কিন্তু সেই দফা রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মঈন। তার এই বেঁচে যাওয়ার তালিকা লম্বা হয় মধ্যাহ্ন বিরতির পরও। সাকিবের এক ওভারে দুইবার আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত আসার পর রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান দুদফাই।

সেই হতাশা কাটিয়ে উঠতে আবারো হন্তারকের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হন মিরাজ। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আভাস দেওয়া রুটকে (৪০) স্লিপে সাব্বিরের ক্যাচ বানিয়ে স্বাগতিক শিবিরকে উল্লাসে ভাসান এই অভিষিক্ত। পরে বেন স্টোকস (১৮) সাজঘরে পাঠিয়ে সফরকারীদের ওপর রাজত্ব বহাল রাখেন সাকিব।

এদিন তিন জনকে অভিষিক্ত করে একাদশ সাজিয়ে বাংলাদেশ। অলরাউন্ডার মিরাজ ছাড়াও ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান ও পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিকে টেস্ট ক্যাপ দিয়েছে স্বাগতিকরা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট