১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দলের জাতীয় সম্মেলন খুব গুরুত্ব বহন করে। সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে আরো শক্তিশালী এবং নেতাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়।
সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে পুনঃগঠন এবং দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে যে শক্তি সঞ্চয় হয় তা আগামী দিনগুলোতে দলকে সঠিকভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে।
বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং বর্তমানে দেশের একমাত্র বৃহৎ দল ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। দলটির নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি দিন বছর অন্তর অন্তর জাতীয় সম্মেলন করে থাকে। দলের নেতাদের পুনঃগঠন, নতুন নেতৃত্ব এবং দিক-নির্দেশনা ঘোষণা করার জন্য।
আগামী ২২-২৩ শে অক্টোবর বর্তমানে সরকারে থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে বিশাল পরিকল্পনা যা অতীতের সব সম্মেলনকে ছাপিয়ে গেছে।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের প্রচার-প্রচারণার অন্ত থাকে না। দেখা যায় দলের প্রচার-প্রচারণার নামের যে পোস্টার-ব্যানার বানায় তাতে দলের প্রধানদের ছবি দেওয়া হয় নামে মাত্র। বিশেষ করে স্ট্যাম্প সাইজের ছবি বেশি ব্যবহার করা হয়। আর যে ব্যক্তি প্রচার করছে পুরো পোস্টার জুড়ে তার ছবি এবং নাম ব্যবহার করা হতো।
তবে এবারই প্রথম যে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যে প্রচার-প্রচারণা করা হবে তাতে দলের কোনো নেতার ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
প্রচারণার পোস্টার বা ব্যানারে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় বা তাদের পরিবারের কোনো সদস্য ও প্রয়াত জাতীয় নেতৃবৃন্দের ছবি দিতে হবে।
প্রচার-প্রচারণা এবং সাজসজ্জার জন্য আওয়ামী লীগ থেকে দেওয়া হয়েছে কিছু নির্দেশনা-
১. সম্মেলন সংক্রান্ত তোরণ, দেয়াল লিখা, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধু, নেত্রী, সজীব ওয়াজেদ জয়, বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও প্রয়াত জাতীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়া অন্য কারো ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
২. মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটি প্রেরিত ডিজাইনের আলোকে সাজসজ্জা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
৩. লাল সবুজ ও আওয়ামী লীগ এর দলীয় পতাকার রং ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
৪. শালীনতা ও সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে শুধুমাত্র ব্যক্তি, সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের নাম ও পদবী ব্যবহার করা যাবে। কোনো নিজস্ব ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
৫. সরকারের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাইলাইটস করতে হবে।
৬. সাজসজ্জা বিষয়ক তথ্যের জন্য ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই সম্মেলনের প্রচার শুরু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ অক্টোবর থেকে প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে। ঢাকা শহর থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং গ্রাম পর্যায়ে চলবে এ প্রচারণা।
সাজানো হবে বিভিন্ন রং এর তোরণ, দেয়াল লিখা, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড। ঢাকা শহরের প্রবেশ পথগুলোতে থাকবে বিশাল বিশাল গেট। সম্মেলনে প্রবেশের জন্যও থাকবে সাতটি গেট। প্রধানমন্ত্রীর গেট, ভিআইপি গেট, ভিভিআইপি গেট, তিন নেতার মাজার গেট, মন্দিরের সামনে একটি গেট, বাংলা একাডেমির সামনে একটি গেট, টিএসসিতে একটি এবং চারুকলার সামনে একটি গেট থাকবে।
প্রচার-প্রচারণায় নেতাকর্মীদের সতর্ক করতে অনেক আগে থেকেই দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা শিখিয়ে আসছে নিয়ম নীতি এবং বারবার সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রচার-প্রচারণা সম্পর্কে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো ভাবেই এবারের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা এবং জয়ের ছবি বা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য ছাড়া ব্যানার পোস্টার অন্য কারো ছবি দিয়ে প্রচারণা করা যাবে না।’
তিনি বলেন, সম্মেলনে আমাদের ফোকাস থাকবে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয় এবং তার পরিবারের সদস্যদের ওপর।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, দলের নেতাদের বারবার বলে দেওয়া হয়েছে এবারের সম্মেলন অন্য বারের তুলনায় অনেক ব্যতিক্রম। সম্মেলনে কেউ প্রচার-প্রচারণায় ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সম্মেলনে আমরা সবাই কর্মী শুধুমাত্র সভানেত্রী শেখ হাসিনা নেত্রী। সকল নেতাকর্মীকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।
সাজসজ্জা উপকমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এবারের সম্মেলন আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সব থেকে বৃহৎ এবং জাকজমকপূর্ণ সম্মেলন। সম্মেলনে নেতাকর্মীদের নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। প্রচার- প্রচারণায় কোনো ভাবেই কোনো ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করা যাবে না এবং সাজসজ্জা সম্পর্কে নেতাদের যে সিডি দেওয়া হয়েছে। সেখানে যেভাবে বলা হয়েছে ঠিক সেভাবে সব কিছু করতে হবে।
মির্জা আজম বলেন, নেতাকর্মীরা প্রচারণার নামে দলের নেত্রীর প্রচারণার পরিবর্তে নিজের প্রচারণা করেন। দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু এবং নেত্রীর স্ট্যাম্প সাইজের ছবি দেয় আর ব্যক্তির ছবি দেওয়া হয় বিশাল আকার করে। এবার শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু, নেত্রী, সজীব ওয়াজেদ জয়, বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও প্রয়াত জাতীয় নেতৃবৃন্দের ছবি দিতে হবে।
এবারের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তাই তারা মনে করে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আয়োজন হলে একদিকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হবে, অন্যদিকে সাধারণ জনগণের কাছে দলের ভাবমূর্তি ফুটে উঠবে।
এতে সার্বিকভাবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার হাত আরো বেশি শক্তিশালী হবে। আর এ চিন্তা থেকেই অতীতের যে কোনো সম্মেলনের থেকে এবারের সম্মেলনে ভিন্নমাত্রা আনা হচ্ছে।
সম্মেলনে বিভিন্ন নেতাকর্মী ছাড়াও থাকবেন কাউন্সিলর, দেশি বিদেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বিশেষ ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবি ও ডেলিগেটসহ নানা পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
সম্মেলনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে মঞ্চ তৈরির কাজ। তবে এবারের সম্মেলন যে ইতিহাসের অন্যান্য সম্মেলন থেকে ব্যতিক্রম এবং জাঁকজমকপূর্ণ হচ্ছে তা সম্মেলনের জন্য মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি দেখলেই বোঝা যায়।
এবারের সম্মেলনে সর্বাধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এসব কিছুর পেছনে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভুমিকা রয়েছে। তার পরিকল্পনায় সম্মেলনের সার্বিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।
১৫০ ফুট দীর্ঘ এবং ৮৪ ফুট প্রস্থ সম্মেলন মঞ্চের চারপাশে থাকবে বিভিন্ন আকৃতির তোরণ, মন রাঙানো সব নকশা এবং বাহারি রকমের কারুকার্য। থাকছে মেডিকেল ক্যাম্প, খাবারের জন্য থাকছে ফুড কর্নার আরো সব উন্নত মানের পরিবেশনা। মঞ্চের সামনে থাকবে সুবিশাল প্যান্ডেল। থাকবে গেস্ট রুম।
প্যান্ডেলে থাকবে তিনটি সারি। প্রথম সাড়িতে থাকবে সোফা, দ্বিতীয় সাড়িতে থাকবে চায়না চেয়ার এবং সব শেষ তৃতীয় সাড়িতে থাকবে প্লাস্টিকের চেয়ার। প্যান্ডেলে আনুমানিক ৫০ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D