গোটা বাংলাদেশ নির্যাতিতা খাদিজার প্রতিচ্ছবি : আলাল

প্রকাশিত: ২:৩২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০১৬

মিডিয়াকে ধমক দিয়ে নিপীড়ন চালাচ্ছে সরকার

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, চাপাতি যখন ছাত্রলীগ নেতা বদরুলদের হাতে থাকে তখন সেটা হয় মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার এবং ভুলক্রমে অন্যদের হাতে থাকলে তারা হয় জঙ্গি। এই হলো বর্তমান দেশের অবস্থা। ১৯৯৬ সালে ধর্ষণে সেঞ্চুরির উৎসব করা মানিককে আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয়  প্রেসকাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ আয়োজিত ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের হামলায় আহত খাদিজাকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠিয়ে সু-চিকিৎসার দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এ সব কথা বলেন। : আলাল বলেন, এদেশের বর্তমানে নারী-শিশুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা উল্টালেই কোনো না কোনো নির্যাতনের খবর আমাদের দেখতে হচ্ছে। সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের নৃশংস হামলায় মেধাবী ছাত্রী খাদিজা আক্তার এখনো জীবন-মৃত্যুর সন্ধিণে। লক্ষ্মীপুরেও এভাবে নৃশংস হামলার শিকার হয়েছে ফারহানা। আর সরকার হামলার দায়ভার না নিয়ে নতুন নতুন সংকট সৃষ্টি করছে। দেশের মা-বোনেরা এখন আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ, : যুবলীগের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। গোটা বাংলাদেশ আজ নির্যাতিত খাদিজা, রিশা, তনুর প্রতিচ্ছবি। দেশে আজ শুধু খাদিজা, রিশা, তনু, মিতু, নির্যাতিত নয়। গোটা বাংলাদেশের মানুষ আজ ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্যাতিত। বিচার যদি শুধু বিরোধী দলের বেলায় হয় তাহলে খাদিজা, তনুর মতো ঘটনা  থামবে না, আরও ঘটতেই থাকবে। সরকার নিজেদের লোকদের বিচার করছে না বলেই একের পর এক হত্যা হচ্ছে কিন্তু তার কোনো বিচার হচ্ছে না। : তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জঙ্গি নিধনের নামে নাটক করছে। আওয়ামী লীগ  বিপদে পড়লেই জঙ্গি নিধনের নামে একটি নাটক করে। সরকার বলছে জঙ্গিদের পরিচয় পেলে জানাবেন। তাহলে যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারা কারা, তাদের যদি পরিচয়ই না জানেন তাহলে কি করে বুঝলেন তারা জঙ্গি। সরকার জঙ্গিদের পরিচয় ইচ্ছে করে দিচ্ছে না কারণ জঙ্গিদের পরিচয় দিলে আবার অন্য কিছু বেরিয়ে আসে নাকি এই ভয়ে। গুলশানে যে জঙ্গি হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতার ছেলে ছিল। জঙ্গিদেরকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হচ্ছে কিন্তু তাদের কোন পরিচয় দিতে পারছে না নিশ্চয়ই এর মধ্যেও কিন্তু রয়েছে। : তিনি আরো বলেন, এদেশে যখনই আওয়ামী লীগ মতায় এসেছে তখনই মানুষ নানামুখী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দেশে এম. ইলিয়াছ আলী, চৌধুরী আলম, সাজেদুল ইসলাম সুমনের মতো সুপরিচিত নন্দিত নেতারা দিনের আলোতে গুম হয়ে গেলেও সরকার এ বিষয়ে এখনো কিছু জানে না। গত ৭ বছরে সারাদেশে সহস্রাধিক খুন হয়েছে। আর ৫ শতাধিক গুম হয়েছে। সরকার তাদের অবৈধ মতা টিকিয়ে রাখার জন্য এই পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে দেশে লুটপাট করছে। এক টাকার বাজেট দশ টাকা করছে। জনগণের উপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে সরকারের নেতারা আলীশানি জীবনযাপন করছে। গণতন্ত্রকে উন্নয়নের সাথে তুলনা করছে। এক সময়ে আইয়ুব খান যেমন উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে পিছনে ফেলেছিল, বর্তমান সরকারও তাই করছে। তাহলে কি এখন এ সরকার আইয়ুব খানের পথেই চলছে? : এসময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আলাল বলেন, আপনি সংসদে দাঁড়িয়ে বদরুলকে দোষারোপ না করে বরং মানুষকে দোষারোপ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে লজ্জা হয়। বিডিআর বিদ্রোহের সময় আপনার আদেশের অভাবে সেনাবাহিনী অভিযান করতে পারেনি। যার ফলে আমরা ৫৭ জন সেনাবাহিনী ভাইকে হারিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ প্রেসকাবের সামনে এক মানববন্ধনে বলেন, রামপাল বিরোধীরা দণিবঙ্গে গেলে ধাওয়া খাবেন। তার এ বক্তব্যের সমালোচনা করে আলাল বলেন, পশ্চিমবঙ্গে গেলে কারা ধাওয়া খায় তা দেখার সুযোগ করে দিন একবার। তবেই বুঝা যাবে কারা ধাওয়া খাচ্ছে। : বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ বলেন, সিলেটে খাদিজার ওপর নৃশংস হামলা করেছে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল। খাদিজার পর দেশের কয়েকটি স্থানে ছাত্রলীগ মা-বোনদের ওপর হামলা, নির্যাতন করছে। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। ছাত্রলীগ এখন সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আমি অতিদ্রুত খাদিজাকে বিদেশে পাঠিয়ে সুচিকিৎসার দাবি করছি। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, শাহবাগ থানা কৃষকদলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম, ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মো. ওমর ফারুক পীরসাহেব প্রমুখ।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট