জনসমাবেশ সহিংসতার ইঙ্গিত দিচ্ছে সরকার : গয়েশ্বর

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮

জনসমাবেশ সহিংসতার ইঙ্গিত দিচ্ছে সরকার : গয়েশ্বর

সরকার বিএনপির আগামীকালের ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসমাবেশ ঘিরে কোনও সহিংস ঘটনা ঘটানোর দুরভিসন্ধিমূলক আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল রবিবারের বিএনপির সমাবেশস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। এর আগে দুপুর দেড়টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকালের জনসভাস্থল পরিদর্শনে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এর সঙ্গে ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান সারোয়ার, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

গয়েশ্বর বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে গত ক’দিন ধরে অনেক কথা বলা হচ্ছে। তারা বলেছেন রাজপথে বিএনপিকে মোকাবিলা করা হবে। বিএনপি সমাবেশে সহিংসতা করবে। এই যে আগাম কথা বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে এখানেই আমাদের সংশয়। এখানেই সরকারের দুরভিসন্ধি।

সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মিটিংয়ে বিএনপি কেন অস্থিরতা তৈরি করবে? সহিংসতা করবে? আমার ধারণা সরকার কোনও একটা ঘটনা ঘটানোর জন্য এই ধরনের আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং কঠোর নজরদারির মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের মতো করে আমাদের আগামীকালের সমাবেশ করবো। আগামীকাল সমাবেশে লোক আসার পর আপনারা মন্তব্য করবেন কত লোক এসেছে সমাবেশে।’

এর আগে বিএনপির সমাবেশের দিন সরকার সারা দেশের গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছিল, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্শন করা হলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকার তাদের স্বভাবসুলভভাবে অনেক কিছু করতে পারে। তারা গাড়ি বন্ধ করতে পারে, রিকশা বন্ধ করতে পারে, ট্রেন বন্ধ করতে পারে আবার লঞ্চও বন্ধ করতে পারে। তারা অনেক কিছুই করতে পারে। তারা সবকিছু করবে, তারপরও আমরা সেটাকে অতিক্রম করবো। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে দাবিগুলো আছে সেগুলোকে একত্র করে মিটিংয়ে আমরা সেগুলোকে উপস্থাপন করবো।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট যেমন গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট ও বাম জোট আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। আগামীকাল সমাবেশে আমরা সুস্পষ্টভাবে আমাদের অবস্থান তুলে ধরবো। কেমন লোকসমাগম হবে সেটা আগাম বলা ঠিক হবে না। আমাদের অর্থ নেই যে লোক ভাড়া করে আনবো। গাড়ি দেবো। কালকের সমাবেশে লোক আসবে সতঃস্ফূর্তভাবে। দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করার তাগিদ নিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যতোই সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশ করি না কেন তারপরও সরকারের যে চিরাচরিত স্বভাব আছে সেই স্বভাব থেকে তারা বিরত থাকবে না। এই অনুমতি দিতে যেহেতু এতো টালবাহানা করেছে তাহলে ফাঁকে ফাঁকে শুনেছেন না তারা রাজপথ দখল করবে, দেশ দখল করবে। সবই তো দখল করেছে। কোনও কিছু দখল করতে বাকি নেই। নির্বাচন কমিশন দখল করেছে, পাবলিক সার্ভিস কমিশন দখল করেছে। আবার সংবাদপত্রও দখল করে ফেলেছে। এখন সর্বশেষ দেশ দখল করবে। দেশ দখল করবে এই কথার আড়ালে আরও কথা আছে না?’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির সাথে নির্বাচনের কোনও শর্ত নেই। খালেদা জিয়ার মুক্তি নিঃশর্ত। উনি মুক্তি পাওয়ার, জামিন পাওয়ার সকল অধিকার রাখেন আইনগতভাবে। সুতরাং খালেদা জিয়ার মুক্তি তো দিতেই হবে। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন সেই কারণেই উনি জেলখানায়। সেই গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হলে, সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে তাঁকে অনুপস্থিত রেখে বা জেলে রেখে তা সম্ভব না।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে এদেশে নির্বাচন করা সম্ভব না, এই কথাটা সরকার বুঝতে পারছে না। তবে আশা করি তারা খুব শিগগিরই বুঝতে পারবে।’

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘সরকার খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়েছে। এখন আবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জেলে নেয়ার প্ল্যান করছে। এখন আমাদের দলও রক্ষা করতে হবে। সেইসঙ্গে কর্মীসহ নেতৃত্বকেও রক্ষা করতে হবে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে সব রাজনৈতিক কারণে। রাজনৈতিক কারণেই তাদের রক্ষা করার জন্য আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করবো।’

সমাবেশে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে- এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, ‘মিটিংটা শুধু বিএনপির। সেখানে কাকে আমন্ত্রণ জানালাম আর জানালাম না সেটা বড় কথা না। মিডিয়ার যারা আছেন তারা আমাদের পক্ষে লেখেন আর বিপক্ষে লেখেন আপনারাও সবাই আমন্ত্রিত।’

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট