লিয়াজোঁ কমিটির নাম ঘোষণা করেছে ঐক্য প্রক্রিয়া

প্রকাশিত: ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮

লিয়াজোঁ কমিটির নাম ঘোষণা করেছে ঐক্য প্রক্রিয়া

বিকল্প ধারার সভাপতি বি. চৌধুরীর বারিধারাস্থ বাসভবনে বৈঠক করেছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের নেতারা। বৈঠকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যকে একটি সাংগঠনিক রূপ দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিএনপিকে কিভাবে এই ঐক্যপ্রক্রিয়ায় আনা হবে তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে প্রথমবারের মত বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান টুকু।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় বি চৌধুরীর বারিধারাস্থ বাসভবনে বৈঠক শুরু হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের- জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন এবং দলের কেন্দ্রয়ি নেতা তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাহিদুর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী, দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার ওমর আলী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ, গণফেরামের কেন্দ্রীয় নেতা আওম শফিক উল্লাহ এবং অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন।

লিয়াজো কমিটি গঠন
বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যকে এগিয়ে নিতে একটি লিয়াজো কমিটি গঠণ করেছে অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। দুই জোটের শরীকদলগুলোর নেতাদের নিয়ে গঠিত এই কমিটি যৌথভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রনয়ণসহ সাংগঠনিক বিষয়াদি দেখাশুনা করবে। কমিটির সদস্যরা হলেন- সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুুল মান্নান, ব্যারিস্টার ওমর আলী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিন এবং নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহিদুল ইসলাম।

মঙ্গলবার রাতে যুক্তফ্রন্টের চেয়াম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বারিধারার বাসভবন ‘মায়াবী’তে অনুষ্টিত যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতাদের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে লিয়াজো কমিটি গঠন ছাড়াও যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি এবং আরও নয় দফা লক্ষ্য বাস্তবায়নে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যকে এগিয়ে নিতে জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠণের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়ার জন্য বলা হয়। এছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং চাঁদপুরে জনসভা আয়োজন নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপির জনসভায় যোগ দেয়া নিয়েও আলোচনা হয় এই বৈঠকে।

আরো পড়ুন : বিবিসি বাংলার সাথে সেই সাক্ষাৎকারে যা বলেছিলেন ড. কামাল
বিবিসি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:১৮

বাংলাদেশে নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনের মূল উদ্যোক্তাদের একজন ড. কামাল হোসেন বিবিসি বাংলাকে গত রোববার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন।

রেডিও-তে প্রচারিত সাক্ষাৎকারটির ওপর ভিত্তি করে বিবিসি বাংলার অনলাইনে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয় তার শিরোনাম ছিল “বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে নীতিগত আপত্তি নেই ড. কামালের”।

ওই সাক্ষাৎকারের সূত্র ধরে সোমবার সাংবাদিকরা ড. হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন যে বিবিসি বাংলা তার বক্তব্য ঠিকভাবে উদ্ধৃত করেনি। বিবিসি বাংলার সঙ্গে ওই সাক্ষাৎকারে তিনি যা বলেছিলেন, নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হলো।

ড. কামাল হোসেনের কাছে বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথমেই জানতে চেয়েছিলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া কি নির্বাচনী জোট, না-কি সরকার বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ?

ড. কামাল হোসেন : পুরো সুষ্ঠু নির্বাচন করার জোট, যে কারণে এটা সম্ভব হয়েছে ইমিডিয়েটলি করে নেয়া।

বিবিসি বাংলা : তাহলে আপনি বলছেন এটি ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের কোনো জোট নয়?

ড. কামাল হোসেন : না না, মোটেই না। সরকার আসতে পারে তো এখানে।

বিবিসি বাংলা : কিন্তু আমরা তো এরকম একটা সমালোচনা শুনছি যে আপনারা আসলে সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য এবং বিরোধী দল বিএনপিকে মাঠে নামার সুযোগ করে দেয়ার জন্য এই জোটটা করেছেন।

ড. কামাল হোসেন : ওনাদেরকে একটু আশ্বাস দিতে পারেন যে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের মাথায় ছিলই না যখন আমরা এটা করি।। শুরু ছিল যে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যারাই নির্বাচনে, ইনক্লুডিং সরকারও, এই জোটে আসতে পারে।

বিবিসি বাংলা : তো এই যে আপনারা বলছেন যে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আপনারা এই জোটটা করেছেন তো সেই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী কী পূর্বশর্ত আপনারা সরকারকে দিচ্ছেন যে কোন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আসলে করা সম্ভব হবে?

ড. কামাল হোসেন : এই যেমন সুষ্ঠু নির্বাচন হল যে, ভোটার লিস্টগুলো নিরপেক্ষভাবে, সঠিকভাবে তৈরি করা হবে। সকলকে সেই সুষ্ঠু ভোটার লিস্টের ভিত্তিতে ভোট দেয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

বিবিসি বাংলা : কিন্তু নির্বাচনটা যে সরকার পরিচালনা করবে সেই সরকার কেমন হবে, কোন কাঠামোতে সেই সরকার পরিচালিত হবে, সে ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্যটা কী?

ড. কামাল হোসেন : সেটা তো আইনেই আছে। বুচ্ছেন না। সেখানে ইলেকশনের সময় যারা পরিচালনা করবেন তারা নিরপেক্ষ থাকবেন, তারা কোন দলীয় প্রভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকবেন না। ইলেকশন হবে। মানে যেটা শুড বি, নট অনলি ফেয়ার, বাট বি সিন টুবি ফেয়ার, বুচ্ছেন না, এটা মানে …

বিবিসি বাংলা : কিন্তু এখন বাংলাদেশের যে সংবিধান, সেই সংবিধানে কি আসলে এমন নিরপেক্ষ লোক দিয়ে সরকার গঠনের কোনো সুযোগ আদৌ আছে?

ড. কামাল হোসেন : না, সেটাতো মানে, সংবিধানে এটা তো মানুষের চরিত্রের ব্যাপার। আমরা বলছি যে বিভিন্ন দলের যারা নেতৃবৃন্দ আছেন তারা যখন একটা স্বাক্ষর করবেন যে, আমরা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করবো না, আমরা এই প্রক্রিয়াকে একটা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া হিসেবে হতে দেব। তখন আমরা ধরে নিতে পারি যে সরকারের পক্ষে যারা ওথ নিয়ে কথাগুলো বলবেন, আমাদের পক্ষে যারা ওথ নিয়ে বলবেন, তাদের তো একটা ন্যূনতম দায়িত্ববোধ থাকবে আর কী, যেটা বলবেন সেটা রক্ষা করবেন।

বিবিসি বাংলা : কিন্তু এখন যে বাংলাদেশের সংবিধান, এই সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে কিভাবে আসলে এই সরকারটা গঠন করা হবে। আপনাদের কি কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে?

ড. কামাল হোসেন : না, সেগুলো তো আইন এবং সংবিধান দেখলে তো ওখানে বলা আছে, নির্বাচন হবে, নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে, সকলেই যারা এখানে, মানে প্রতিযোগিতা করতে চান, এসে করতে পারবেন। এবং সেটা নির্বাচন কমিশন এটার রেফারি হিসাবে পরিচালনা করবে। কোনো রকমের যদি নিরপেক্ষতা থেকে কেউ সরে যায় তো সেটাকে তারা চিহ্নিত করবে এবং এটাকে অবৈধ বলবে। এবং যদি সে, এরকম অবৈধ কোন জিনিষ না হয়, যেটা নিয়ে ইলেকশন কমিশন কে বলতে না হয় যে এ নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হলো না, তখন তারা এটার রায় দেবে না আর কী। তো এগুলো তো ইলেকশন আইনের মধ্যেই আছে।

বিবিসি বাংলা : তার মানে আপনি কী, আপনারা কী এটা বলতে চাইছেন যে এখন বাংলাদেশের যে সংবিধান এবং এই সংবিধানের অধীনে এখন বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায়, এই সরকারের অধীনে আপনারা নির্বাচনে যেতে রাজি?

ড. কামাল হোসেন : ইন প্রিন্সিপাল, ইন প্রিন্সিপাল। এটা বলা হচ্ছে যে তারা যেগুলো, মানে আইনে আছে, এগুলো মেনেই করবেন। যদি এখান থেকে কোনো দেখা যায় যে না তারা এখান থেকে সরে যাচ্ছে, অথবা কোনো রকমের প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছে, তখন যদি এটা দৃষ্টিতে আসে, তখন তো প্রচণ্ড আপত্তি করা হবে যে এটা থেকে আপনারা বিরত থাকেন। যদি এটা থেকে বিরত … যদি করতে থাকেন, আমি বলবো না যে করবেন, যদি আইদার সাইড দেখে যে না, এটা কোনো কেউ এটা রীতিনীতি না মেনে করা হচ্ছে, তখন তো নির্বাচনকে বাতিল করার জন্য কোর্টে যেতে হবে। কোর্টকে বলতে হবে যে, এসব কারণে এটা অবাধ নিরপেক্ষ হল না, যেটা আইনের বিধান আছে যে এটা হতে হবে, সো আপনারা কোর্ট এটাকে বিবেচনা করে ডিক্লেয়ার করেন যে এটা হল না। এটা ইলেকশন এখানে সংবিধান অনুযায়ী হয়নি, তো যার কারণে এখন নতুন করে ইলেকশন আবার করতে হয়।

বিবিসি বাংলা : এই যে আপনি বলছেন ইন প্রিন্সিপাল বা নীতিগতভাবে বর্তমান সরকারের অধীনে, নির্বাচনে যেতে আপনারা রাজি, এটি কি শুধু আপনাদের কথা বলছেন, নাকি আপনাদের প্ল্যাটফর্মে যতো দল এসেছে বিএনপিসহ সবার কথা বলছেন – সবাই যেতে রাজি?

ড. কামাল হোসেন : না, আসলে তো আমরা এভাবে বসে এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয় নাই। আমি আমাদের দলের কথা বলছি আর কী। আর, এটা তো একটা সিম্পল প্রভিশনের আমি মনে করি যে সবাই এটা, মানে, বলতে দ্বিধাবোধ করবেন না। তবে কোন সিদ্ধান্ত এ রকম বসে আমরা নিই নাই।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট