১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮
‘জাতীয় ঐক্য’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিই মূল টার্গেট বলে জানিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। তবে এই ‘জাতীয় ঐক্যে’ জামায়াতের কোনো স্থান নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার পাঁচ দফা দাবি ও নয়টি লক্ষ্য ঘোষণা করেছে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য- প্রক্রিয়া।
তাদের পাঁচ দফা দাবি হল:
১. আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
২. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।
৩. কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-ছাত্রীসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
৪. নির্বাচনের একমাস আগে থেকে নির্বাচনের পর ১০ দিন পর্যন্ত মোট ৪০ দিন প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।
৫. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা ও পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ যুগোপযোগী সংশোধনের মাধ্যমে গণমুখী করতে হবে।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মনে করেন ‘যুক্তফ্রন্টের পাঁচ দফা দাবি বিএনপি’র দাবির কাছাকাছি। আমার মতে এই দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় ঐক্য হতে পারে’।
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে আসছি। আর যুক্তফ্রন্ট বলেছ যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না। আমার মনে হয় দুটি দাবি পাশাপাশি রাখলে অর্থ একইরকম দাঁড়াবে। আর সংসদ ভেঙে দিতে হবে নির্বাচনের আগে।নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। প্রশাসনে স্বচ্ছতা এবং নির্বাচনে সেনাবাহিনী রাখতে হবে এগুলোতো আমাদেরও দাবি। তাই জাতীয় ঐক্য হতে বাধা নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে’।
সরকার এই দাবিগুলো নিয়ে আলোচনায় বসলে একটি সমাধানে আসা যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন শামসুজ্জামান দুদু।
এই ঐক্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে সক্ষম হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার এমনিতেই চাপে আছে। প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনলেই তা বোঝা যায়। ছোটখাটো বিষয়েও তিনি যেভাবে রিএ্যাক্ট করেন তা স্বাভাবিক মনে হয়না’।
পাঁচ দফা দাবি দেয়ার পর এখন যুক্তফ্রন্টের কাজ কী হবে?
তারা কি সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানাবেন?
জবাবে যুক্তফ্রন্টের শরীক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকারকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে কি লাভ হবে? অতীতে তো অনেক আহ্বান জানানো হয়েছে৷ সরকারতো সাড়া দেয়নি। এখন আমরা ব্যাপক গণসংযোগের মাধ্যমে মানুষের কাছে ৫ দফা তুলে ধরবো। এর মাধ্যমে দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে। আমরা এরইমধ্যে সারাদেশে জনসংযোগ ও জনসভার কর্মসূচি দিয়েছি’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শনিবার পাঁচ দফা ঘোষণার সময়ও বলেছি। আমরা জাতীয় ঐক্য করব। এখন বিএনপি যদি মনে করে আমাদের দাবির সঙ্গে তাদের দাবির মিল আছে তাহলে তো ভাল। ঐক্য হবে’।
তবে বিএনপির ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিতই দিচ্ছেন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা। মান্নার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে আমরা ঐক্য করার কথা কখনো বলিনি। জামায়াতের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না’।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকার গঠন, বিচারিক ক্ষমতায় দিয়ে সেনা মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে যুক্তফ্রন্ট যে দাবি জানিয়েছে তা অপ্রাসঙ্গিক, অবাস্তব, অপ্রয়োজনীয় ও অসাংবিধানিক। এখন সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকার করার তো প্রয়োজন নেই’।
রবিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আরো তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই আমাদের দেশেও নির্বাচন হবে। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী, এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি আছে। এখন মামাবাড়ির আদার করলে তো চলবে না। সংসদের শেষ অধিবেশন অক্টোবর মাসের ২০ তারিখের আগেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর আর নির্বাচন পর্যন্ত সংসদ বসবে না। এই সংসদের সদস্যদের কোনও ক্ষমতা ও কার্যকারিতা থাকবে না’।
জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সেনা মোতায়েন হবে না, এটা আমরা বলবো না। প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েন হবে। যদি সময় এবং পরিস্থিতিতে মোতায়েন করা দরকার হয়, সেই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করলে, সরকার প্রয়োজনে এবং বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে কিভাবে মোতায়েন হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সময় এখন নেই। এখানে তো বিএনপিরও প্রতিনিধি রয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই রাষ্ট্রপতি এ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে’।
যুক্তফ্রন্টের পাঁচ দফা বিএনপির দাবির সঙ্গে মিলে গেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা মিলে গেল কিনা তা দেখা আমাদের কোনও বিষয় না। বিএনপি কার সঙ্গে যাবে, কিভাবে যাবে তা আমাদের বিষয় না। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যুক্তফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামী থাকলে, তারা বিএনপির সঙ্গে যাবে না। এখানে তো আমাদের কোনও মন্তব্য নেই। তবে নতুন নতুন জোট হলে স্বাগত, শত ফুল ফুটুক। গণতন্ত্র তো, অসুবিধা নেই। নতুন নতুন জোট হোক, নির্বাচন করুক’। তবে এ নিয়ে সরকার কোনো ধরনের চাপে নেই বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D