জাফলংয়ে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ১০:৩০ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২৫

জাফলংয়ে অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ইসিএ (ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া) ঘোষিত জাফলং নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ করে চা-বাগান রক্ষার দাবিতে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করেছে জাফলং চা-বাগানের শ্রমিকরা।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে জাফলং চা-বাগান সংলগ্ন নদীপাড়ে ও ব্রিজের ওপর দুই ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনের আয়োজন করে চা-বাগানবাসী।

চা-বাগানের ব্যবস্থাপক সাহাব উল্লাহ সরকারের সভাপতিত্বে ও সাবেক ইউপি সদস্য সারবেন মাহালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রভাবশালী একটি চক্র সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে জাফলং নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে যন্ত্রচালিত ‘বোমা মেশিন’ ব্যবহার করে বালু ও পাথর উত্তোলন করছে। এতে নদীর প্রকৃতি ধ্বংসের পাশাপাশি দেশের বৃহত্তম সমতল চা-বাগান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, এসব কর্মকাণ্ডের ফলে নদীভাঙন দেখা দিচ্ছে, বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় তটস্থ হয়ে উঠেছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। প্রতিবাদ করলেই চক্রটি প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়।

চা-বাগানের ব্যবস্থাপক সাহাব উল্লাহ সরকার বলেন, ‘বোমা মেশিন মূলত পাওয়ার পাম্প ও পাইপ দিয়ে তৈরি একটি যন্ত্র। এটি চালু হলে বোমা বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ হয়, তাই এর নাম ‘বোমা মেশিন’। গভীর রাতে এসব মেশিন চালু হলে এলাকার মানুষ ঘুমাতে পারে না। পাশাপাশি নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে চা-বাগান ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য সইলেন দেব বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে জাফলং নদীতে ১০০-১৫০টি বোমা মেশিন দিয়ে পাথর তোলা হয়। প্রশাসন অভিযানে এসে কেবল আংশিকভাবে মেশিন ভাঙে, পরে তা আবার মেরামত করে চালু করা হয়। এতে বোঝা যায়, প্রশাসন ইচ্ছা করলেই এই অবৈধ কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করতে পারে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন, ফিল্ড সুপারভাইজার কফিল উদ্দিন লিটন, ইউপি সদস্য রিনি প্রধান, পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা সজল রঞ্জন চাষা, পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিতাই পাল এবং সদস্য অঞ্জলি মাহালী প্রমুখ।

এ মানববন্ধনে জাফলং চা-বাগানের শত শত শ্রমিক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা অবিলম্বে অবৈধভাবে যন্ত্র দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।