কমলগঞ্জে শিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪

প্রকাশিত: ৫:৪৫ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২৫

কমলগঞ্জে শিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে শিক্ষক রোজিনা বেগম হত্যার ঘটনার প্রধান আসামী সাগর এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

গত ২৬ মে সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার ভাষানীগাঁও গ্রামে নৃশংসভাবে হত্যাসহ আরো তিনজনকে কূপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে প্রতিাপক্ষের সন্ত্রাসী সাগর। ঘটনার রাতে নিহত স্কুল শিক্ষিকার ভাই বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানান, ভাসানীগাঁও গ্রামের নবদূত পাঠশালা (কেজি) স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ও গ্রামের প্রয়াত নিজাম উদ্দীনের কনিষ্ট কন্যা ছিলেন রোজিনা বেগম। এলাকায় তাঁর ব্যাপক পরিচিতি ছিল এবং মানুষের সুখে-দু:খে পাশে দাঁড়াতেন। যে কারনে নিহত রোজিনা বেগমের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সন্ত্রাসী রেজাউল করিম সাগর কর্তৃক হত্যার ঘটনায় ক্ষোব্দ রয়েছেন গ্রামের মানুষজন। নিহত রোজিনার ১১ বছর বয়সী এক সন্তান রয়েছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঘটনার দিন সকালে ভেকু মেশিন দিয়ে কৃষিজমির মাটি কাটাচ্ছিলেন স্থানীয় আব্দুর রহিম। খবর পেয়ে নিহত রোজিনার বোনজামাই জালাল মিয়া প্রতিপক্ষকে আপত্তিকৃত জমিতে মাটি কাটায় বাঁধা দেন। এসময়ে প্রতিপক্ষ দা দিয়ে জালাল আহমেদের হাতে পায়ে কূপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে জালাল মিয়াকে রক্ষায় হারুন মিয়া, তার স্ত্রী নুরুন নাহার লুবনা ও ছোট বোন শিক্ষিকা রোজিনা বেগম দৌঁড়ে সেখানে গেলে আব্দুর রহিম ও তার ছেলে রেজাউল আহমেদ সাগর, মনির মিয়া, সাগরের মামা আজিবুর রহমান ও আবুল হোসেন দা ও বল্লম দিয়ে সবাইকে এলোপাতাড়ি কূপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে স্থানীয়রা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যান্য আহতদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিলেটে প্রেরণ করা হয়।

এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক আব্দুর রহিমসহ ৩ জনকে আটক করে। ২৬ মে রাতে নিহত রোজিনা বেগমের বড় ভাই শাহজাহান আহমদ বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় ৬ জনকে ও অজ্ঞাতনামা আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৭ মে বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে বনগাঁও গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রামবাসীর সহায়তায় আজিবর রহমানকে গ্রেফতার করে। তবে প্রধান আসামী রেজাউল করিম সাগর পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মসজিদ ঈমাম খায়রুল ইসলাম, শিক্ষক মোশাহিদ আহমদ, রাজনৈতিক নেতা মামুনুর রশীদ, আইনজীবি কামরুল ইসলামসহ এলাকাবাসী ২৭ মে জানাজার নামাজের পূর্বে পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী রেজাউল করিম সাগর ও তার পিতা আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে শিক্ষিকা রোজিনা বেগমকে কূপিয়ে হত্যা করে একটি অবুঝ শিশুকে এতিম বানিয়েছে। আরো তিনজনকে গুরুতর জখম করেছে। অস্ত্রধারী এই সন্ত্রাসী ঘাতক সাগরসহ সকল আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শামীম আকনজি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে সাথে সাথেই আটক করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে গ্রামবাসীর সহায়তায় আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামী সাগরকে গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।