চিরচেনা বাংলাদেশ, চিরচেনা সেই হার

প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০২১

চিরচেনা বাংলাদেশ, চিরচেনা সেই হার

Manual6 Ad Code


পুরনো রোগটা নতুন করে পেয়ে বসেছে। ব্যাটসম্যানরা নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। এতে আবার সামনে আসলো বাংলাদেশ দলের টেস্ট সামর্থ্য! শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচে বোলাররা তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়েছেন। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২০৯ রানে হেরে সিরিজ খোয়াতে হলো বাংলাদেশ দলকে। ফলে কোনো জয় ছাড়াই শেষ হলো বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মিশন।

পাঁচদিনের ম্যাচের শেষ দিনে জয়ের জন্য টাইগারদের প্রয়োজন ছিল ২৬০ রান, হাতে পাঁচ উইকেট। লিটন দাস ১৪ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ রানে নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে জটিল অঙ্কের হিসেবটা মেলাতে পারলেন না। সুবিধা করতে পারেননি লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরাও।

৪৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্কোর বোর্ডে ২২৭ রান তুলে অলআউট টাইগাররা। ২০৯ রানে ম্যাচ হারের সঙ্গে সিরিজটাও হারালেন মুমিনুল হকরা।

Manual7 Ad Code

চোট আর ফিটনেস ইস্যুতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের স্কোয়াডে একাধিক নিয়মিত সদস্যকে পায়নি স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। তবে লঙ্কানদের পাইপলাইনের গভীরতা জানান দিয়েছেন প্রবীন জয়াবিক্রমা, রমেশ মেন্ডিসরা। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বাঁহাতি স্পিনার জয়াবিক্রমা প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও পান ৫ উইকেট। এতেই চতুর্থ স্পিনার হিসেবে অভিষেকে ১০ উইকেটের স্বাদ পান তিনি।

করোনার কারণে এবার আলাদা ভেন্যুতে খেলা রাখেনি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড। দুই ম্যাচই হয়েছে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। সেখানে প্রথম ম্যাচ নিষ্প্রাণ ড্র হয় ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায়, উইকেটের সহায়তাও ছিল ঢের। একই মাঠে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ হলেও খেলা হয়েছে টেস্টের চিরাচরিত উইকেটে। ম্যাচের দুদিন পরেই ভাঙতে শুরু করে পিচ, ধীরে ধীরে সহায়তা পান বোলাররা। এমন উইকেটে লঙ্কান স্পিনারদের সঙ্গে লড়াই জমাতে পারেননি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।

Manual2 Ad Code

শেষ দিনে বাংলাদেশ দলের সামনে বেশ কঠিন সমীকরণ ছিল। আগের দিন ৫ উইকেট হারানো লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ম্যাচ জিততে হলে করতে হতো ২৬০ রান। এই সমীকরণ মেলাতে লিটন ১৪ ও মিরাজ ৪ রানে নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেন। তবে সুবিধা করতে পারেননি লিটন। আগের রানের সঙ্গে ৩ রান যোগ করে মাত্র ১৭ রানে আউট হন দিনের তৃতীয় ওভারেই।

জয়াবিক্রমার শর্টেস্ট লেংথ ডেলিভারি লিটনের ব্যাটের ফাঁক গলে খুঁজে নেয় তার পা। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান, কিন্তু বল স্টাম্প স্পর্শ করায় কোনো লাভ হয়নি।

Manual7 Ad Code

লিটনের আউটের পর উইকেটে আসেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে জুতো খুলে স্ট্যাম্পের ওপর পড়ে দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়েছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ভালো কিছু করে ক্ষততে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ ছিল তার সামনে। তবে মাত্র ২ রান করে আউট হন তিনি। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ফ্লাইট ডেলিভারি থার্ডম্যান অঞ্চলে খেলতে চেয়েছিলেন, বল টার্ন করায় ঠিক মতো খেলতে পারেননি। তাইজুলের ব্যাটে লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকওয়ালার হাতে।

তাইজুলের পর তাসকিন আহমেদ ৭, মিরাজ ৩৯ ও আবু জায়েদ শূন্য রানে আউট হলে শেষদিনের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৭ রানে অল আউট হয়ে ২০৯ রানে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ দল। সঙ্গে ২ ম্যাচ সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হার।

Manual1 Ad Code

এই ম্যাচ হারের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ দলের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অধ্যায়। করোনার কারণে চ্যাম্পিয়নশিপের নির্ধারিত ৬টি সিরিজ খেলা হয়নি টাইগারদের। যে কটি ম্যাচ খেলেছে, সেখানে মাত্র একটি ড্র করে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের একদম তলানিতে থেকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অধ্যায় শেষ করলো অধিনায়ক মুমিনুল হকের দল।

এর আগে ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে লাহিরু থিরিমান্নে ও অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের শতকের সাহায্য স্কোর বোর্ডে ৪৯৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। পরে তামিম ইকবালের ৯২ ছাড়া আর কনো ব্যাটসম্যান পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলতে না পারলে ২৫১ রানে প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের। পরে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৯৪ রান তুলে আবারো ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা।

সবে মিলিয়ে বাংলাদেশ দলের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৩৭ রানের। এই রান তারা করে জিততে হলে বাংলাদেশকে গড়তে হতো বিশ্ব রেকর্ড। এর আগে কোনো দল এত রান তাড়া করে জেতেনি। সে রেকর্ড গড়া হয়নি টাইগারদের। ব্যাটসম্যানরা সামর্থ্য প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। তামিম (২৪), সাইফ (৩৪), শান্ত (২৬), মুমিনুল (৩২), মুশফিক (৪০), মিরাজরা (৩৯) উইকেটে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে না পারার খেসারত দিতে হয়েছে গোটা দলকে। ফলে ম্যাচ হারতে হয়ে ২০৯ রানে। এতে সিরিজটাও হারাল বাংলাদেশ দল।


এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code