১৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
সিলেটে নগরীতে অকশন ও জিডি নাম্বার লিখা সাইনবোর্ড ব্যবহার করে অবাধে চলছে নাম্বারবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশা।
কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ বিভিন্ন জেলার জিডি নাম্বার ও অকশনের কাগজ ক্রয় করে সিলেটে এক শ্রেণীর গাড়ি বিক্রির দালাল চক্র শত শত সিএনজি চালিত অটোরিক্সা বিক্রি করছে সাধারণ মানুষের নিকট। অনেকেই এসব গাড়ি ক্রয় করে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। গত কয়েক মাসে সিলেট নগরীতে অকশন ও জিডি নাম্বার লিখা সাইনবোর্ডধারী সিএনজিতে সয়লাব হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব সিএনজি মূলত কুমিল্লা, চট্টগ্রাম বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে পুরাতন বাঙাড়ি বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৩০/৪০ হাজার টাকায় ক্রয় করে সিলেটে এনে বডি ও ইঞ্জিন মেরামত করে ভূয়া অকশন ও জিডি নাম্বার লিখে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করছে। বিভিন্ন গাড়িতে লেখা জিডি ও অকশনের নাম্বারের সূত্রে ধরে দেখা যায়, এসব নাম্বার গুলো কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় করা জিডি। অনেক গাড়িতে দেখা যায় আদালত হতে নিলামকৃত গাড়ি বলে লিখে একটি অকশন নাম্বার ব্যবহার করেছেন। মূলত এগুলো সিলেটের কোন থানায় জিডি বা অকশন হয়নি।
অসাধু একটি চক্র কতিপয় ট্রাফিক পুলিশের মাসিক টুকেন বা মামলায় মাসিক ১২শ টাকার বখরার মাধ্যমে ওই গাড়ি নগরীতে চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় বলে জানা যায়। আর এসব গাড়ি চালানোর পেছনে রয়েছে বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার, টুকেন বিক্রেতার লাইনম্যান, সিলেট জেলা ও মহানগর সিএনজি পরিচালনা কমিটির নেতাকর্মীরা। এরা ট্রাফিক অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় বেশ কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট কে মাসিক বখারার মাধ্যমে এসব সিএনজি চলতে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।আর এসব নাম্বার বিহীন গাড়ি শহরে সয়লাবের ফলে গোঠা সিলেট নগরীতে তীব্র যানজট লেগে থাকে বিভিন্ন সিগন্যাল পয়েন্টে।
এদিকে সিলেট মহানগরীতে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য, অপরাধে জড়ানো ও তীব্র যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত সিএনজি অটোরিকশা। গ্রিল লাগিয়ে রিজার্ভ চলাচলের শর্তে রেজিস্ট্রেশন পাওয়া সিএনজি অটোরিকশা গুলো মানছে না কোনো নিয়মকানুন। যেখানে সেখানে স্ট্যান্ড দিয়ে সড়ক সংকোচিত করা ও ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ যাত্রী সাধারণের।
মহানগরীতে নাম্বার বিহীন অবৈধ সিএনজি বুক ফুলিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরলেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একদিকে এসব অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা চলাচলের কারণে নগরীতে যানজট লেগেই থাকে। অন্যদিকে অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা চলাচলের কারণে ঘন-ঘন সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। ফলে মহানগরী এলাকার রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে।
নগরীতে সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং-৭০৭) ও সিলেট জেলা অটোরিক্সা চালক শ্রমিকজোটের (রেজি নং-২০৯৭) ৮টি শাখা রয়েছে। এসব শাখার অধীনে রয়েছে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার রেজিস্ট্রেশন বিহীন সিএনজি অটোরিক্সা।
অভিযোগ রয়েছে, মহানগর পুলিশের কতিপয় অসাধু সদস্যদের সঙ্গে সমঝোতা করেন এসব স্ট্যান্ডের নেতারা। পুলিশের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন ‘টোকেন বা স্টিকার’। এ সব টোকেন বা স্টিকার দেখালেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। একেকটি সিএনজিকে ৩টি টোকেন দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের ওভার ব্রিজের নিচে শ্রমিকজোট শাখার সিএনজি অটোরিক্সার একটি স্ট্যান্ড রয়েছে। এই শাখায় প্রায় ৮শ গাড়ি রয়েছে রেজিস্ট্রেশন বিহীন। একই সড়কের বাইপাস এলাকায় রয়েছে আরো ৫ শতাধিক নাম্বার বিহীন সিএনজি। অকশন ও জিডি নাম্বার লিখে টোকেনের মাধ্যমে প্রতিটি গাড়ি থেকে মাসিক ১২শ টাকা নেয়া হয়। ওই স্ট্যান্ড থেকে গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, ঢাকা দক্ষিণ রোডে অবাধে চলছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি।’
দক্ষিণ সুরমার ভূঁইয়ার পাম্প থেকে বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর, গোয়ালাবাজার, তাজপুর বাজার, জালালপুর বাজার, গহরপুর বাজার, লালাবাজার ও বালাগঞ্জ রোডে চলে প্রায় দুই হাজার নম্বরবিহীন সিএনজি। নগরীর শিবগঞ্জ-সাদিপুর ফিলিং স্টেশন শাখায় চলে তিন শতাধিক নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা।
বাবনা-কামালবাজার-বিশ্বনাথ রোডে চলে নাম্বার বিহীন আরও ৭০০ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা। মেন্দিবাগ-মুরাদপুর-বাঘা রোডে অবৈধ ভাবে চলছে ৫ শতাধিক সিএনজি অটোরিক্সা।
রেজিস্ট্রেশনবিহীন ৫ শতাধিক গাড়ি চলছে টিলাগড় শাখা থেকে। মেজরটিলা ও পীরের বাজার ফিলিং স্টেশন স্ট্যান্ড থেকে চলে ৪শ অটোরিক্সা। সিলেট জেলা অটোরিক্সা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং-৭০৭) অন্তর্ভুক্ত আম্বরখানা-সালুটিকর শাখায় অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা চলছে প্রায় দেড় হাজার। আম্বরখানা শিবেরবাজার সড়কেও চলছে সমান ভাবে। সিলেট কুমারগাও-টুকেরবাজার-লামাকাজী রোডে চলাচল করে ১ হাজার ৫শতাধিক গাড়ী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চালক জানান, নতুন কৌশলে অকশন ও জিডি নাম্বার ব্যবহার করে পুলিশের সাথে মাসিক চাঁদার মাধ্যমে অবাধে নাম্বার বিহীন সিএনজি চলাচল করছে। কখনো পুলিশ গাড়ি আটক করে তবে টোকেন দেখালেই ছেড়ে দেয়। ওই টোকেনে লেখা থাকে স্ট্যান্ডের নাম ও শাখা নাম্বার। তারা জানান প্রতিগাড়ী বাবদ মাসে ১ হাজার ২শত টাকা পুলিশকে দেওয়া হয়।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D