১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:২৩ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
নাইপেদো: মায়ানমারের রাখাইনে বর্মি সামরিক বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। থামেনি গণহত্যাও।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই এ সম্পর্কিত রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। গণহত্যা ও নির্যাতন বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপকে অগ্রাহ্য করেই এসব দমন-পীড়ন চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
গত মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে উত্তর মংডুর ‘কিয়ানপাক পাইজু’ গ্রামে অভিযান চালায় বার্মিজ সৈন্যরা। এসময় তাদের হাতে দুই কিশোরী বোন গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার ভোরে অভিযান শুরুর পরপরই সৈন্যরা গ্রামের পুরুষ লোকদের গ্রেপ্তার করার জন্য একটানা ধাওয়া করে এবং তাদের গ্রামটি থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। তারপর সৈন্যরা গ্রামের সব নারীদেরকে একটি স্থানে একত্রিত করে। সেখানে কয়েক ডজন অল্প বয়স্ক নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়।
নাম গোপন রাখার শর্তে রোহিঙ্গা ভিশনের প্রতিবেদককে গ্রামটির একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘সৈন্যরা নারীদের শরীর তল্লাশি করে তাদের (নারীদের) অলংকার লুটপাট করে এবং তারপর তাদের কাপড় খুলে নগ্ন করা হয়। পরে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গে ক্রমাগত হাত দিতে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘এটা অপমানজনক এবং অসহনীয়।’
ধর্ষণের শিকার ওই দুই কিশোরী গ্রামের নুরুল ইসলামের (আসল নাম নয়) কন্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে ১৭ ও ১৯ বছর। তাদের একটি ঘরের মধ্যে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে টানা কয়েক ঘণ্টাব্যাপী গণধর্ষণ করে সৈন্যরা।
ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে অবরোধ অবস্থা থেকে ওই দুই কিশোরীকে গ্রামের পূর্বদিকে অবস্থিত একটি বনের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হলে তারা মুক্ত হয়।
বর্মি সৈন্যদের ওই একই গ্রুপ সোমবার ( ১২ ডিসেম্বর) ‘জিপিন চাং’ গ্রামের ‘শঙ্খলা’ পল্লীতে অভিযানের সময় তাদের হাতে আট রোহিঙ্গা নারী গণধর্ষণের শিকার হয়।
উত্তর মংডু থেকে রোহিঙ্গা ভিশনের সংবাদদাতা জানান, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে তদন্ত কমিশন পার্শ্ববর্তী ‘ইয়িখেচাং খোসুন’ গ্রাম ত্যাগ করার পরপরই বর্মি সৈন্যরা তিন নারীকে নিকটবর্তী একটি জঙ্গলে ধরে নিয়ে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্ষণ করে।
সহিংসতা বন্ধ করার জন্য অব্যাহত আন্তর্জাতিক চাপ অগ্রাহ্য করে বর্মি সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর অমনুষ্যোচিত নির্যাতন চালাচ্ছে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মনোবল ভেঙে দিতে এবং যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ক্রমবর্ধমানভাবে নারীদের ধর্ষণ করে যাচ্ছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে বর্মি প্রেসিডেন্ট কর্তৃক তৈরি করা একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত দল মংডুতে পাঠানো হয়। উত্তর মংডুতে তদন্ত দলটি তাদের সফর শেষ করেছে এবং বর্মি সামরিক বাহিনীর নৃশংসতাকে আড়াল করতে একটি সাজানো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, মায়ানমারে অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে যে আচরণ করছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের প্রধান যাইদ রাদ আল হুসেইন বলেছেন, তারা মায়ানমার থেকে প্রায় প্রতিদিনই হত্যা, নির্যাতন এবং ধর্ষণের মতো ঘটনার খবর পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাখাইন রাজ্যের সমস্যা মোকাবেলায় মায়ানমার সরকার যে নীতি নিয়েছে তাতে বরং উল্টো ফল হচ্ছে।
গত ৯ অক্টোবর থেকে রাখাইন রাজ্যের মংডুতে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী।
সর্বশেষ সহিংসতায় ৭ শতাধিকেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছে। অন্তত ৩,০০০ ঘরবাড়ি ধ্বংস করার মাধ্যমে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। তাদের নির্যাতনে ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে এবং ৫ শতাধিকেরও বেশি রোহিঙ্গা নারী বর্মি সৈন্যদের হাতে ধর্ষিত হয়েছেন।
রোহিঙ্গা ভিশন অবলম্বনে মো. রাহুল আমীন
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D