নাসিকের ওপর নির্ভর করছে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ : মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: ২:৫০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬

ভোটের পরিবেশ তৈরি ও সেনা মোতায়েনের দাবি

এম আর কামাল/নজরুল ইসলাম বাবুল : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে ধানের শীষের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার নাসিক নির্বাচনে সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় সাখাওয়াতকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব এবং ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা শহরের মিড টাউন এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। পায়ে হেঁটে বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে গণসংযোগকালে মহাসচিবের পেছনে হাজারো নেতা-কর্মী ছিল। বিপণী বিতানের দোকানে পাশে মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াতের জন্য ভোট চান মির্জা ফখরুল। শহরের কেন্দ্র বিন্দু মিড টাউনের জেলা কার্যালয়ে নিচে প্রচারণা শুরুর প্রাক্কালে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভোট চেয়ে বলেন, দেশের মানুষ আজ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে। এই নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়, তার ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, তার ওপর নির্ভর করবে আরেকটি নির্বাচনের ভবিষ্যৎ। তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের ফলে অবশ্যই জনগণের বিজয় হবে এবং আগামী দিনগুলোতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। : নারায়ণগঞ্জের ভোটারদের প্রতি আবেদন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা আজকে সবাই একত্রিত হয়েছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থী, ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন। এরপর দলের চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ধানের শীষের ছড়া সিটি মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের হাতে তুলে দেন। মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ভোটাদের দোয়া ও ভোট চান। : তিনি বলেন, এই নির্বাচন হচ্ছে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার নির্বাচন। আজ নারায়ণগঞ্জে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমি আপনাদের দোয়া ও ভোট চাই। একই সঙ্গে আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, এই নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সকলে মাঠে থাকবো। এর আগে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থেকে বিএনপি মহাসচিব জোটের নেতাদের নিয়ে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জে আসেন। মির্জা ফখরুল শহরের মিড টাউন, কলিবাজার, পুরান কোর্ট, গলাচিপা, চাষাড়ার ডিপো বাজার প্রভৃতি স্থানে লিফলেট দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চান। : মির্জা ফখরুল বলেন, এ নির্বাচনে বিশ দলীয় জোটের প্রার্থী তথা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থী হলেন সাখাওয়াত। এ সরকারের আমলে কেউ নিরাপদ না। এ সরকার গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার, ভোটের অধিকার হরণ করেছে। মানুষ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আজ (শনিবার) বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। কিন্তু দেশে মানবাধিকার নেই। হত্যা, খুন, গুম সবই চলছে দেশে। শুধু বিএনপির নেতাকর্মী না সাধারণ মানুষও মামলায় জর্জরিত। সে কারণে এ (সিটি করপোরেশন) নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ। এ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। গুম-খুনের বিরুদ্ধে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ এটাই আমার প্রত্যাশা। ধানের শীষে ভোট দিলে গণতন্ত্রের অধিকার আদায় হবে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বক্তব্য শেষে ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন কল্যাণ পার্টির প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, জাতীয় পাটির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব  সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, নিপুন রায় চৌধুরী, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজ্জামেল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী, সহ-সভাপতি সেলিমুজ্জামান সেলিম, ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গির হোসেন, সহ- কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান, নগর বিএনপির সভপিতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শাহ আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, জেলা যুবদল সভাপতি মোশাররফ হোসেন, জেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব প্রমুখ। ২০ দলীয় জোটের অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ, সাহাদাত হোসেন সেলিম, সাইফুদ্দিন মনি, শেখ জুলফিকার চৌধুরী বুলবুল, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, মুফতি মহিউদ্দিন একরাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  : বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নাসিক নির্বাচনে প্রধান সমন্বয়ক গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেছেন, এই নির্বাচনটা আমাদের কাছে, জাতির কাছে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নির্বাচনটা সুষ্ঠু ও অবাধ হলে জনগণের মতামতের প্রতিফলন হবে। এই প্রতিফলনের মধ্য দিয়ে জনগণ সন্ত্রাসকে না বলবে, গুম-খুনকে না বলবে এবং অগণতান্ত্রিক সরকারকে না বলবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই হিসেবেই আমরা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। দীর্ঘদিন যাবত মানুষ তার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। আজকে ভোটের অধিকার উদ্ধার করাই আমাদের একমাত্র সংকল্প। : দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আপনারা ভোট কেন্দ্রে থাকবেন। এবং আপনাদের ভোট রক্ষা করার জন্য কেন্দ্র পাহারা দিয়ে রাখবেন। গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট কেন্দ্র ছাড়বেন না। আজক আপনাদের বুঝতে হবে, বাংলাদেশে নৌকার অবস্থা কেমন। সেটা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভীর বক্তব্যে বোঝা যায়।  তিনি (আইভী) বলেন ‘মার্কা যা-ই হোক ভোট দেবেন আমাকে।’ অর্থাৎ নৌকার অবস্থা যে ভালো না নৌকায় চড়ার মাধ্যমে তিনি বিপাকে পড়েছেন। আমাদের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতকে নারায়ণগঞ্জ তথা সারাদেশের মানুষ চেনে। বিশে^র যে সকল দেশে বাংলাদেশের মানুষ বাস করে তারাও চেনে। কারণ শীতলক্ষ্যায় ভেসে ওঠা ৭টি লাশের ঘটনায় জেলা বারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাখাওয়াত হোসেন একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে অত্যন্ত সাহসিকতার সহিত সকল হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে তিনজন সামরিক কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় এনেছেন। এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি ৭ খুন মামলা পরিচালনা করেছেন। এই সাহসী ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনেক কিছু দিতে পারবেন। নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করতে পারবেন। এবং তার সততা ও সাহসিকতা নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য অনেক সাফল্য বয়ে আনবে বলে বিশ^াস করি। : গয়েশ^র রায় আরো বলেন, আজকে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছেন। তাই আপনারা সাখাওয়াত হোসেনকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হবেন। : বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, আ’লীগের দুঃশাসনে দেশের মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছে। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে জয়ী করা মানে বেগম খালেদা জিয়াকে জয়ী করা। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে জয়ী করানোর জন্য আমাদেরকে প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা জানি না, তবে আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। তিনি বলেন, ধানের শীষের ঢলের স্রোতে ভেসে যাবে নৌকা, এবার নাসিক মেয়র নির্বাচনে ধানের শীষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দলের নেতাকর্মীদের সাহসিকতার সাথে কাজ করে যেতে হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহবান জানান। : বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপনারা ধানের শীষের প্রতীককে নির্বাচিত করলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচিত করা হবে। গত নির্বাচনে আইভীর বাক্সে যেমন গায়েবী ভোট পড়েছিল, ঠিক এবার আমার পক্ষেও গায়েবী ভোট পড়বে। সাখাওয়াত বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে সেনাবাহিনীর কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে অতীতে হয়ে যাওয়া বিভিন্ন নির্বাচনে যেভাবে পেশী শক্তির ব্যবহার করে ভোট ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, তাতে করে সাধারণ ভোটাররা আশংকার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই তারা আমাকে প্রশ্ন করছে, নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারবে কিনা। ভোটারদের এসব শংকা ও ভয় দূর করতে হলে বৈধ-অবৈধ সকল অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে সেনাবাহিনী চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি। : তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বোয়ালিয়া খাল ভরাট করে বিল্ডিং করেছে। এরকম আরো চারটি খাল সে ভরাট করে ফেলেছে। ফলে নগরবাসীর জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জের মানুষকে শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের আশা দিয়ে ভোট নিয়েছে, কিন্তু তাদের সে আশা পূরণ করেনি। আর তাই তাকে নারায়ণগঞ্জের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। তার মিথ্যা আশ্বাসে আর ভুল করতে চায় না তারা। আর তাই আমি যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই ধানের শীষের পক্ষে গণ জোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এই জোয়ার ঠেকানো যাবে না। ২২ তারিখ ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে ধানের শীষকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করে মেয়র পদটি নেত্রীকে উপহার দেবো : সিদ্ধিরগঞ্জে বিকেলে গণসংযোগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম :  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সারা দেশে সংগ্রামী মানুষ হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে বেগম খালেদা জিয়া ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে মনোনীত করেছেন। এ নির্বাচন শুধু একটা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নয়। এ নির্বাচন সমগ্র দেশের মানুষ আজকে যে গন্ত্রতন্ত্রের সংগ্রাম করছে, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার সংগ্রাম করছে, তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পাওয়ার সংগ্রাম করছে, মানবধিকার ফিরে পাওয়ার সংগ্রাম করছে, সেই সংগ্রামের প্রতীক হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তিনি বলেন, আজকে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ রায় দেবে, তারা কি একনায়কতন্ত্রবাদের অধীনে থাকতে চায়, অথবা তারা কি আজ ফ্যাসিবাদের অধীনে থাকতে চায়, দেশে খুন, গুম, গ্রেফতার, অন্যায় অত্যাচার দেখতে চায়, না কি তারা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের সরকার দেখতে চায়। সেটাই এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। নাসিক নির্বাচনকে আমরা সেই আন্দোলনের একটা অংশ হিসেবে নিয়েছি। : মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে নারায়ণগঞ্জের জনগণ প্রমাণ করবেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। কারণ তারা তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। যে ভোট তারা দিতে পারেনি ২০১৪ সালে, সেই ভোট তারা দিতে চায় নারায়ণগঞ্জে। সেই ভোটের মধ্য দিয়ে গণত্রান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে  সাখাওয়াত হোসেনকে তারা নির্বাচিত করতে চায়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপনাদেরকে সালাম দিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন। তিনি যে সংগ্রাম শুরু করেছেন, ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরের জনগণ সাখাওয়াত হোসেনকে ভোট দিয়ে সেই সংগ্রামকে আপনারা জয়যুক্ত করবেন সেই আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। : দুপুর ২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের এসিআই পানিরকল এলাকা খেকে শুরু করে গোদনাইল রসুলবাগ, চিত্তরঞ্জন, চৌধুরীবাড়ি, ২নং বাসস্ট্যান্ড, বার্মাস্ট্যান্ড, আদমজী, কদমতলী, সাইলো রোড ও সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ শেষে সিদ্ধিরগঞ্জপুলস্থ থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে  মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। : শামীম ওসমান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন-সাখাওয়াত : নারায়গঞ্জের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন নাসিক নির্বাচনে বিএনপি’র মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। গতকাল শনিবার নির্বাচনি গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি। : অভিযোগে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন আ’লীগ এমপি শামীম ওসমান। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি তা পারেন না। এটা আচরণবিধি লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। এ ব্যাপারে নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শনিবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন, আইভির পক্ষে ভোট চাওয়ায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান নির্বাচনি আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন কি-না? এর জবাবে সিইসি বলেন, কি করলে আচরণ বিধি লঙ্ঘন হয় তা আইনেই বলা রয়েছে। আমরা বিষয়টি জানলাম, রিটার্নিং কর্মকর্তারা কি ব্যবস্থা নিয়েছে তাও জানবো। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে অবশ্যই রিটার্নিং কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেবেন। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আগেও অনেক সংসদ সদস্যকে আমরা কারণ দর্শাতে (শোকজ) বলেছি। : মিজানুর রহমান মিনুর নেতৃত্বে শহরের ১৩নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ চলছে : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক সফল মেয়র এবং শহরের ১৩ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক মিজানুর রহমান মিনু শুক্রবার থেকে শহরের ১৩নং ওয়ার্ডে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বায়ে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এ সময় তার সাথে থাকছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খন্দকার, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, স্থানীয় বিএনপি নেতা কাজী আসলাম ও আবুল কালাম আজাদ। : গণসংযোগকালে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, এবারের নির্বাচনে যদি ভোটাররা অবাধে ভোট দিতে পারে, তাহলে ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার আসবে। সরকার সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম করছে, সেটি কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না। সুযোগ পেলে তারা ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে। তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে। এটিই তাদের শেষ নির্বাচন। আমরা আশা করব, শেষ নির্বাচনটি তারা সুষ্ঠু করে অতীতের কালিমা মোচনের চেষ্টা করবেন।     : ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ব্যাপক গণসংযোগ : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনীত ও বিশ দলীয় সমর্থিত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো: সাখাওয়াত হোসেন খানকে ধানের শীষ মার্কায় ভোট প্রদানের আহবান জানিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করেছেন ঢাকা মহানগর বিএনপি। গতকাল শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত স্থানীয় চাষারা মোড়, ২নং রেলগেট ও বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকার বিভিন্ন মার্কেট, পৌরমার্কেট, দোকানপাট ও বিপনী বিতানগুলোতে এ সময় ব্যাপক সংযোগ করেছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। বিএনপির সহ-সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর যুগ্ম আহবায়ক কাজী আবুল বাশার ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য ও খিলগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আলহাজ মোঃ ইউনুস মৃধার নেতৃত্বে বিএনপির নেতা রবিউল আউয়াল (সোহেল মিয়া), আশরাফুল ইসলাম, শেখ হাবিবুর রহমান হাবিব, দেলোয়োর হোসেন দুলু, আকবর হোসেন ভূইঁয়া নান্টু, এম জামান, মুকসেদুর রহমান আবীরসহ শতাধিক নেতাকর্মী গণসংযোগে অংশ নিয়ে লিফলেট বিতরণসহ স্থানীয় জনগণকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রদানের জন্য আহবান জানান। : ডা. জেডএম জাহিদের নেতৃত্বে ২১নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে শহরের ২১ নং ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনীত ও বিশ দলীয় সমর্থিত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো: সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা হয়েছে। এ সময় আমিরুজ্জামান খান শিমুল, জাহানারা বেগম, ডা. সাইফুদ্দিন নেছার আহমেদ, ডা. ফারুক, ডা. জাহিদুল কবির, ডা. জাবেদ আহমেদ, ডা. জহির, ডা. মনোয়ারুল কাদির রিযু, ডা. জনি, ডা. জুয়েল, ডা. ফারুক হোসেনসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করেন। : নাজিমউদ্দিন আলমের নেতৃত্বে ৫ নং ওয়ার্ডে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ : বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলমের নেতৃত্বে  ৫ নং ওয়ার্ডে ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ হয়েছে। এ সময় তারা ঘরে ঘরে গিয়ে সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে ধানের শীষে ভোট চান। গণসংযোগ শেষে তারা একটি সভা করে। এতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। এছাড়াও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, কৃষকদল নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, জাহাঙ্গির আলমসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। : নাসিক নির্বাচনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে গণসংযোগের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ : কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, ড. সুকমল বড়–য়া ও সঞ্জিব চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, খুলনা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কেন্দ্রীয় সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জন গোমেজ ও অমলেন্দ্র অপু, কেন্দ্রীয় সহ-প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক অপর্ণা রায় দাস, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, সুশীল বড়ুয়া ও নিপুন রায়।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট