ঢাবি ছাত্রদলের সবাই চান নতুন কমিটি, বিভক্তিতে বিশৃঙ্খলা

প্রকাশিত: ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২১

ঢাবি ছাত্রদলের সবাই চান নতুন কমিটি, বিভক্তিতে বিশৃঙ্খলা

Manual7 Ad Code

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। সারা দেশের আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বর্তমান অবস্থা ভালো না। সরকারি দলের নির্যাতন ও নিজেদের মধ্যে বিভক্তি তাদেরকে শোচনীয় অবস্থায় নিয়ে গেছে।

Manual5 Ad Code

আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের ঢাবি শাখায় তৈরি হয়েছিল পাঁচটি গ্রুপ। যার সংখ্যা এখন বেড়ে সাতটিতে পৌঁছেছে। এই সাতটি গ্রুপ ছাড়াও ছোট ছোট অনেক সাব গ্রুপও তৈরি হয়েছে। এসব গ্রুপের নেতৃত্বে যারা আছেন তারা অধিকাংশই আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের অনুসারী।
২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিন মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয়ার পর কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার। কিন্তু তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন কমিটিতে থাকা একাধিক যুগ্ম আহ্বায়ক। তাদের মতে, ওই কমিটিরই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে একুশ মাস আগে। আহ্বায়ক কমিটিতে কাক্সিক্ষত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীদের অনেকের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সভাপতি খোকন গ্রুপের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের প্রভাবে আহ্বায়ক হিসেবে রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সদস্যসচিব আমান উল্লাহ আমানসহ আরো ৪৭টি পদ দেয়া হয়। যার ফলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিভক্তি চরম আকার ধারণ করে। পরে আমান উল্লাহ আমান কেন্দ্রীয় সভাপতি খোকন গ্রুপ থেকে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেও মূলত সভাপতি গ্রুপের প্রভাবেই তিনি এ দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি হলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেসব কমিটি নিয়েও আছে অভিযোগ। অধিকাংশ হল কমিটিতে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটিতেও আছেন এবং শুধু অতিরিক্ত গ্রুপিংয়ের কারণেই এখন পর্যন্ত সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের কমিটি ঘোষণা দিতে পারেনি বলেও জানান একাধিক নেতাকর্মী।

Manual3 Ad Code

সংগঠনকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে তাই নেতাকর্মীদের চাওয়া অবিলম্বে একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি পদপ্রার্থী ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মাহমুদুল হাসান রনি বলেন, আমাদের এখন সব থেকে বেশি যেটা দরকার তা হলো একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি। আমাদের সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে যাচ্ছে কমিটি না থাকায়। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির কথা কেউ শোনে কেউ শোনে না। ফলে সাংগঠনিক কার্যক্রমে বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে। যারা নিয়মিত রাজনীতির মাঠে তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে অর্থাৎ পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতাদের চিহ্নিত করে অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিই সবার প্রত্যাশা।

Manual4 Ad Code

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করার সময় আরেক সভাপতি প্রার্থী ও বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাফী ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কমিটি সবারই প্রত্যাশা। সামনে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের ডাক আসবে কিন্তু আমরা এখন অনেকটা বিভক্ত হয়ে আছি বলা চলে। ছাত্ররাজনীতির মূল যে জায়গাটা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) সেখানে যদি আমরা বিভক্তির কারণে আন্দোলন কঠোর অবস্থানে নিতে না পারি তাহলে সারা বাংলাদেশের আন্দোলন নিয়ে সত্যিই দুশ্চিন্তা করতে হয়। তাই অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে যোগ্যদের চিহ্নিত করে কমিটি দেয়া হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

দলের সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে ছোট ছোট দায়িত্বে থাকা নেতাকর্মীরাও চান অবিলম্বে একটা কমিটি দিয়ে সংগঠনকে যেন গতিশীল করা হয়। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত সাহিত্য সম্পাদক প্রার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য শাহীনুর ইসলাম শাহীন বলেন, আমরা আমাদের প্রাণের সংগঠনের এমন অচলাবস্থা দেখতে চাই না। আমরা চাই বিপদে-আপদে, ভালো খারাপ উভয় সময়ই সংগঠন তার আপন গতিতে চলতে থাকুক। এর জন্য যদি এই মুহূর্তে কমিটি দেয়া লাগে তাহলে তাই দেয়া হোক।

Manual3 Ad Code

সামনের দলীয় আন্দোলনে কমিটি প্রভাব ফেলবে কি না এই নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। আহ্বায়ক কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে তথা জাতীয় আন্দোলনে গ্রুপিং কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে কমিটি দ্রুত দিলে তখন যেটুকু প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে সেটুকুও আর থাকবে না।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code