শরীরে মাংসপেশি টেনে ধরার কারণ

প্রকাশিত: ১:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০১৬

প্রায় প্রতিটি মানুষই জীবনে বিভিন্ন সময় হঠাৎ মাংসপেশিতে টানের সমস্যায় ভুগে থাকেন। বিশেষ করে হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়।

মেডিকেল পরিভাষায় এ সমস্যাকে বলা হয় কাফ মাসল। কারো কারো ক্ষেত্রে রাতে বিছানায় ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ের মাংসপেশি টেনে ধরে মনে হয় যেন টেনডনটি ছিঁড়ে যাবে।

অনেক সময় দেখা যায়, বসা থেকে উঠতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে উঠতে পারে না। পায়ের মাংসপেশি টেনে ধরে। যাকে মেডিকেল পরিভাষায় মাসল ক্রাম্পিং বা মাসল স্পাজস বলা হয়।

এবার যেনে নিন মাংসপেশি টেনে ধরার কারণঃ

বিভিন্ন কারণে এই মাংসপেশি টেনে ধরতে পারে। যেমন : আমাদের শরীরে রক্তের মধ্যকার ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কমে যায়। তখন এ সমস্যা দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া পটাশিয়াম কমে গেলেও হঠাৎ মাংসপেশি টেনে ধরতে পারে। তা ছাড়া খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে খেলাধুলার সময় হঠাৎ মাংসপেশি টেনে ধরে। বিশেষ করে ঊরুর পেছনে মাংসপেশিকে মেডিকেল পরিভাষায় হ্যামস্ট্রিং বলে ও হাঁটুর নিচে মাংসপেশি, যেটিকে কাফ মাসল বলে।

এছাড়া কিছু ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে মাংসপেশির সংকোচন হতে পারে। ডাই-ইউরেটিক্স জাতীয় ওষুধ, যেমন- স্ক্রুসিমাইড, কাবন, ডাইউরোটিকগের জন্য হঠাৎ করে শরীরের পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম কমে যেতে পারে।

কিছু ভিটামিনের ঘাটতিজনিত কারণে মাংসপেশির সংকোচন হতে পারে। যেমন- থায়ামিন (বি-১), প্যানথোনিক এসিড (বি- ৫) এবং পাইরিডক্সিল (বি-৬)

তাছাড়া পায়ের রক্তনালিগুলোর মধ্যে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক না থাকলেও পায়ের মাংসপেশিগুলো ক্যাম্প বা টেনে ধরতে পারে। মেডিকেল পরিভাষায় সেটিকে ইন্টারমিটেন্ট ক্লাউডিকেশন বলা হয়। এটি সাধারণত কাফ মাসল বা হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে হয়ে থাকে।

মাংসপেশি টান ধরলে করণীয়ঃ

এ ধরনের সমস্যা নিয়মিত হতে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং কারণটি নির্ণয় করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য একটি স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বা ব্যায়ামই এটি ভালো করার জন্য যথেষ্ট। তা ছাড়া হঠাৎ আক্রান্ত হলে, আক্রান্ত স্থানে মৃদু গরম সেক দিয়ে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন।

সেক্ষেত্রে সাময়িকভাবে কমে যাবে। কিন্তু মাংসল স্পাজম ডিহাইড্রেশনের জন্য হলে দ্রুত ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স করতে হবে। তা ছাড়া মাংসপেশি রিলাক্স করার জন্য কিছু ওষুধের ব্যবহার করতে হয়।

যেমন : স্লাইক্লোবেনজাপ্রিন হাইড্রোক্লোরাইড, টলপেরিসন হাইড্রোক্লোরাইড, ব্যাকলোফেন, ইপেরিসন হাইড্রোক্লোরাইড, টিজিনাডিন ইত্যাদি।

যারা খেলোয়াড়, তাদের ক্ষেত্রে খেলা শুরু করার আগে ওয়ার্মআপ এক্সারসাইজ ও খেলা শেষে কুলডাউন এক্সারসাইজ করতে হবে। তাহলে খেলার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত মাসল স্পাজম এড়ানো সম্ভব। যাদের ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিনের ঘাটতি আছে, তাদের সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে।