২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০১৬
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মিয় নিয়মানুসারে বিশেষ করে ভিক্ষুসংঘকে চীবর অর্থাৎ বস্ত্র দান করা হয়। বৌদ্ধদের বিশ্বাসমতে সমস্ত দানের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এ চীবর দান। কঠিন চীবর দান উৎসব ‘চীবর’ শব্দের অর্থ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র। গাছের শেকড়, গুঁড়ি, ছাল, শুকনো পাতা, ফুল ও ফলের রঙ অনুসারে এর ছয়টি রঙ নির্দিষ্ট। তবে ভিক্ষুসংঘ সাধারণত লাল ফুলের রঙের বস্ত্রই বেশি ব্যবহার করে, যা সাধারণ গৃহীদের পরিধেয়ের বস্ত্র থেকে পৃথক ও বৈচিত্র্যহীন। কঠিন চীবর দান প্রচলনের পূর্বে ভিক্ষুসংঘ পাংসুকুলিক চীবর (শ্মশানে বা অন্য কোথাও পড়ে থাকা ময়লা ছিন্নবস্ত্র) পরিধান করত। এতে ভিক্ষুদের রোগাক্রান্ত হওয়াা এবং স্বাস্থ্যহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকত প্রচুর। তাদের সুস্বাস্থ্য ও নীরোগ দেহের কথা চিন্তা করে রাজগৃহে বর্ষাবাস কালে বুদ্ধদেব চীবর অর্থাৎ পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করার অনুমতি দেন। গৃহীরা তাদের এ বস্ত্র দান করে। তবে সকল ভিক্ষুই চীবর পরিধান করতে পারে না; যারা ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস সমাপ্ত করেছে কেবল তারাই চীবর ব্যবহার করতে পারে। প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে কার্তিকী পূর্ণিমার পূর্ব পর্যন্ত একমাস ব্যাপী এ চীবর দান অনুষ্ঠান পালিত হয়।
‘চীবর দান’ কথাটির সঙ্গে ‘কঠিন’ শব্দটি যুক্ত হওয়ার কারণ সম্পর্কে মহাবগ্গ গ্রন্থে বলা হয়েছে: যেদিন চীবর দান করা হবে সেদিনের সূর্যোদয় থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সুতাকাটা, কাপড় বোনা, কাপড় কাটা, সেলাই ও রঙ করা, ধৌত করা ও শুকানো এ কাজগুলি সম্পন্ন করে উক্ত সময়ের মধ্যেই এ চীবর ভিক্ষুসংঘকে দান করতে হবে। এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম-কানুন আছে, যা দাতা এবং গৃহীতা উভয়ের জন্যই পালন করা বেশ কঠিন। তাই এ অনুষ্ঠানের নাম হয়েছে কঠিন চীবর দান। চীবর দানের ফল সম্পর্কে শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, শতবর্ষের দান কিংবা পৃথিবীর সকল প্রকার দান একত্র করলে তার যে ফল তা একখানি চীবর দানের ফলের ষোলো ভাগের এক ভাগও নয়। সুতরাং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বৌদ্ধদের জন্য চীবর দানের গুরুত্ব অপরিসীম। এ দান জন্মজন্মান্তরে সুফল প্রদায়ী। প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে বছরে একবার মাত্র এ চীবর দান করা হয়। এদিন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ গৃহীরা ভিক্ষুসংঘকে চীবর দান করে। ভিক্ষুসংঘও তাদের বিনয়-বিধানের সকল নিয়ম অক্ষুণ্য রেখে পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে এ চীবর গ্রহণ ও ব্যবহার করে। কঠিন চীবর দানের বহুধা গুণের কথা স্মরণে রেখে প্রত্যেক বৌদ্ধ জীবনে অন্তত একবার হলেও চীবর দান করার মানসিকতা পোষণ করে।
এ উপলক্ষে সিলেট বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২১ অক্টোবর শুক্রবার সিলেট নগরীর আখালিয়া নয়াবাজার ব্রাক্ষনশাসন বৌদ্ধ বিহারে সিলেটস্থ বৌদ্ধ সমিতির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। চীবর দান উপলক্ষে শুক্রবার সকালে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা উৎসর্গ, সংঘদান, অট্্টপরিক্ষার দান, বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও ধর্মদেশনা, ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, মধ্যাহ্ন ভোজ, আলোচনা সভা, পঞ্চশীল গ্রহন, স্বধর্মালোচনা, প্রদীপ প্রজ্জ¦লন ও সন্ধ্যায় ফানুস উত্তোলনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপনী হয়।
আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম রাউজান জ্ঞানানন্দ বিহোরের উপাধ্যক্ষ শ্রীমৎ বজিরানন্দ মহাথের এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সিলেট বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি বাবু জ্যোতি মিত্র বড়ুয়া মিটুল, বক্তব্য রাখেন দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান উদযাপন এর আহবায়ক বাবু দিলীপ বড়–য়া, সম্পাদকিয় প্রতিবেদন পেশ করেন বৌদ্ধ সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু শান্তি বিকাশ চাকমা, ধর্মদেশনা পেশ করেন শীমৎ আয়পাল মহাথের, উ সুনন্দা থের, শ্রীমৎ ভিক্ষু করুনা, শ্রীমৎ করুনা প্রিয় ভিক্ষু, শ্রীমৎ দেবমিত্র ভিক্ষু, শ্রীমৎ সংঘানন্দ থের। অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক কাজল বড়ুয়া ও সদস্য সচিব লাবলু বড়ুয়া অনুভুতি প্রকাশ করেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D