বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় কোটি টাকার ভূমি নিয়ে মুখোমুখি

প্রকাশিত: ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০১৬

ওয়েছ খছরু ।। সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় কোটি টাকার ভূমি নিয়ে দুই মহিলার দ্বন্দ্ব এখন তুঙ্গে। দু’জনের পক্ষে-বিপক্ষে হামলা পাল্টা হামলার পর মামলাও হয়েছে। ইতিমধ্যে দুইজন সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরের বিরুদ্ধে করেছেন বিষোদগার। মুখোমুখি দুই মহিলার মধ্যে রয়েছেন আহমদ হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান হেলেন আহমদ ও বিমানবন্দর এলাকার বড়শালা এলাকা জহুরা জিয়া চৌধুরী। আহমদ হাউজিং এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান হেলেন আহমদ দাবি করেছেন, শাহাদত রহিম নামের এক ব্যক্তি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। ওই টাকা না দেয়ার কারণে মীমাংসিত ভূমি দখলে নিতে একের পর এক চক্রান্ত চালানো হচ্ছে। মরহুম জিয়া উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী জহুরা জিয়া চৌধুরী মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে হেলেন বেগমের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। তিনি বলেছেন, তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী আহমদ হাউজিংয়ের এমডি হেলেন আহমদ তার সহায় সম্পত্তি জবর দখলের জন্য বিভিন্ন ধরনের পাঁয়তারা শুরু করেন। তার হুমকিতে তিনি গত ৯ই জুলাই এয়ারপোর্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গত ১০ই জুলাই ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে বাড়ির প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে ও গেইট তালাবদ্ধ করে রাখে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়। জহুরা জিয়া চৌধুরী জানান, সিলেটের ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত হেলেন আহমদ ও মিসবাউল ইসলাম কয়েছ মামলাবাজ ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসেবে সকলের নিকটই পরিচিত। আহমদ হাউজিংয়ের অভ্যন্তরে মিরিটারি এস্টেটের কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। ২০০৮ সালে ১৯শে জুন হাউজিংয়ের অবৈধ দখল থেকে যৌথবাহিনী প্রায় ১২ কোটি টাকার জায়গা উদ্ধার করে। পরবর্তীতে হেলেন ও কয়েছ পেশী শক্তির বলে আবার সেই জমি দখল করে নেয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ দিনমজুর মানুষকে হয়রানি করা যেন তার নিত্যদিনের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা হামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এদিকে, গতকাল সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আহমদ হাউজিং এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান হেলেন আহমদ। তিনি দাবি করেন, কোম্পানির কাছে জায়গা বিক্রি করার দীর্ঘদিন পর একটি চক্র তা অস্বীকার করছে। তিনি বলেন, ১৯শে জুলাই বড়শলা নিবাসী জহুরা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে কোম্পানীর আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মিছবা-উল ইসলামকে যুক্ত করে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেন। সম্পত্তি দখল, দেয়াল ভাঙচুরসহ নানা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তিনি জানান, আহমদ হাউজিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা তার শ্বশুর মরহুম ফরিদ-উদ্দিন আহমদের কাছ থেকে জহুরা জিয়ার স্বামী জিয়া উদ্দিন খরিদ সূত্রে প্রাপ্ত বড়শলা মৌজার ৩০১২ দাগের সাকুল্য ভূমি বিক্রি করেন। দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর পর জহুরার আত্মীয় শাদত রহিমের প্ররোচনায় জিয়া উদ্দিনের উত্তরাধিকারীরা তাদের বাড়ির পূর্ব ও উত্তর সীমানার পার্শ্বের ভূমি মৃত জিয়া উদ্দিনের বিক্রি অস্বীকার করে দখলের পাঁয়তারা করছেন। গত ১০ই জুলাই ভোরে আহমদ হাউজিং-এর অন্তর্ভুক্ত এইচএম এগ্রো ফার্মের প্রায় ৮৫০ ফুট লম্বা সদ্য নির্মিত পাকা সীমানা প্রাচীর জহুরা জিয়া স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে ভাঙচুর করান। হেলেন বলেন,  আহমদ হাউজিংয়ের কেয়ারটেকার পানি নিষ্কাশনের পাকা ড্রেনের কাজ ও এগ্রো ফার্মের পশ্চিম সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ তদারকি করা অবস্থায় জহুরা জিয়ার অপকর্মের সহযোগী শাহাদত রহিম  ও তার সহযোগীরা অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাকার কাজ বন্ধ করার জন্য প্রাণনাশের হুমকি ও চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়া তারা বিভিন্ন সময়ে নানা ঘটনার জন্ম দেয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট