৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০১৯
বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২১ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমানের আদালতে মামলার আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পেনাল কোডের ১২৩ (এ), ১২৪ (এ) ও ৫০০ ধারায় এ মামলা আমলে নেওয়ার জন্য ব্যারিস্টার সুমন আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলা খারিজের আদেশ দেন।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের অভিযোগ ছিল, প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করার অভিযোগে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার ঘোষণা দিয়ে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন জানান, মামলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার প্রথম প্রহরেই মামলা করা হবে।
শুক্রবার রাতে ফেসবুক পেজে দেওয়া ভিডিও বার্তায় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘ট্রাম্পের নিকট প্রিয়া সাহা যে বক্তব্য দিয়েছেন, এটি পুরোপুরি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। উনি বলেছেন, প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ মাইনরিটি মানুষকে বাংলাদেশে গুম করে দেওয়া হয়েছে। বাকি যারা আছে তারাও নাকি গুম হওয়ার পথে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হয়ে আমেরিকার মতো জায়গায় গিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমি মনে করি এটা শুধু ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না; এটা রাষ্ট্রদ্রোহের এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এজন্য আমি ব্যারিস্টার হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রবিবার কোর্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ওনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে মামলা করব।’
দুদকের একজন কর্মকর্তার স্ত্রী হয়ে কীভাবে বললেন, উনার সব জায়গা জমি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশ্ন তুলে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘ আমি মনে করি, এটা একটা চক্রান্ত ও পুরো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং এই রকম ষড়যন্ত্রে আমরা বসে থাকতে পারি না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উদাহরণ। যেখানে আমাদের মাইনরিটি ভাইদের বিপদ হলে ঝাঁপিয়ে পড়ি। মুসলমানদের নামাজে হিন্দু ভাইয়েরা পাহারা দেন। যেখানে হিন্দু ভাইদের বাসায় গিয়ে আমরা দাওয়াত খাই। তারপরেও আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আমি মনে করি এটা ষড়যন্ত্র।’
এজন্য প্রিয়া সাহাকে বাংলাদেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা ফরজ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ব্যারিস্টার সুমন। তিনি জানান, মামলা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।
এরপর তিনি বলেন, এখন সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর হারিয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি।
ভিডিওতে দেখা গেছে, এক পর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীল হয়ে ওই নারীর সঙ্গে হাত মেলান। কারা এমন নিপীড়ন চালাচ্ছে? ট্রাম্পের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘দেশটির মৌলবাদীরা এসব করছে। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে।’
প্রিয়া সাহার দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির বহু উদাহরণ সোশ্যাল মিডিয়া তুলে ধরছেন নেটিজেনরা।
৭১ এর চেতনায় গঠিত যে দেশে সব ধর্মের নাগরিক সমান অধিকারে সহাবস্থান করে বিশ্বে অসাম্প্রদায়িকতার মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে সেই দেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাঠে প্রিয়া সাহার এমন বক্তব্য কখনই মেনে নেওয়ার মতো নয় বলেও অভিমত দিচ্ছেন সচেতনরা।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D