১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:১৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৬
বিবাহিত জীবনের ছোট ছোট চাপা অভিমান, অভিযোগ থেকেই জন্ম হয় অনেক ভুল-বোঝাবুঝির। সংসারও ভেঙে যায় অনেক সময়। অন্য দম্পতিদের দেখে মনে হয়, ‘বাহ্, কী চমৎকার সম্পর্ক!’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনের জীবনে ছোটখাটো কিছু পদক্ষেপই অনেক ভুল-বোঝাবুঝির অবসান করতে পারে। শুধু দরকার একটু চেষ্টা। জেনে নেওয়া যাক তেমনই কয়েকটি পদক্ষেপ।
শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনের সীমা নির্ধারণ
সামাজিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়ি কিংবা বাবার বাড়ি উভয় আত্মীয়স্বজনেরই সহায়তা ও মিলেমিশে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখাও মেনে চলতে হয় বলে মনে করেন আইনজীবী এলিয়ট পোল্যান্ড। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দেখেন বহু মানুষই অভিযোগ করেন, তাঁর শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় তাঁর বিবাহিত জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আর এ ঝামেলা থেকে দূরে থাকার জন্য সংসার গঠনের পর বিবাহিত জীবনে সর্বদা একটা স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখা প্রয়োজন।
আকর্ষণ বজায় রাখা
বিবাহিত জীবন যেহেতু আদতে দুজন মানব-মানবীর সম্পর্ক। আর তাই এ বিষয়টি কখনোই ভুললে চলবে না, উভয়ে উভয়কে আকর্ষণ করাটা খুবই জরুরি। আর এ বিষয়টি যদি গুরুত্ব হারায় তাহলে বিবাহিত সম্পর্কের বাঁধনও ফিকে হয়ে যায়। এ কারণে বিবাহিত জীবনে সব সময়েই আকর্ষণ বজায় রাখার চেষ্টা করা জরুরি।
নিজের সম্পদের হিসাব রাখা
অধিকাংশ মানুষই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করার পর নিজের ও সঙ্গীর সম্পদের হিসাব পৃথকভাবে রাখতে পারেন না। মূলত উভয়ের আর্থিক ক্ষমতা একত্রিত করেই তাঁরা নানা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট গড়েন কিংবা সম্পদ ক্রয় করেন। আর এ বিষয়গুলো প্রচুর বাদানুবাদ তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা যদি উভয়ের সম্পদের একটি তালিকা সর্বদা রাখেন তাহলে তা বহু ঝামেলা এড়াতে পারে।
সঙ্গী বাছুন মিল দেখে
বিবাহিত জীবন সফল করার জন্য এ বিষয়টি আগেই জেনে রাখা উচিত। আপনার সঙ্গী হিসেবে যাকে বেছে নেবেন তাঁর অন্য সব বিষয়ের তুলনায় আপনার সঙ্গে মিল কতখানি রয়েছে তাই দেখুন আগে। এ ক্ষেত্রে আপনার মূল্যবোধ, জীবনযাপন, ব্যাকগ্রাউন্ড, সামাজিকতা ইত্যাদি বিষয় যদি তার সঙ্গে মিলে যায় তাহলে বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
শুনুন ও বলুন
একে অপরের সঙ্গে কথা বলুন। নিজের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো খুলে বলুন। অপরের কথাও শুনতে হবে। সঙ্গীকে বুঝতে দিন, কোন পদ্ধতিতে বেছে নিলে ভুল-বোঝাবুঝি বেশি হবে। কারণ, সবার বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা সমান নয়। চাপা স্বভাবের মানুষেরা কথা বলতে স্বচ্ছন্দবোধ করে না সাধারণত। নিজের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলো খুলে বলতে চান না। অভিযোগ না করে প্রশংসা করুন। অন্যের দোষ ধরার আগে নিজের দোষটা স্বীকার করুন। অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে।
কত কিছু করি
আমিই সব করছি—এই মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আপনার স্ত্রী কিংবা স্বামীর স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কিছু করে থাকলে বারবার সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো রুচিশীল নয়। তবে এই ‘করাটা’ শুধু একতরফা হয়ে গেলে আবার সমস্যা তৈরি করবে। তখন সেটা ‘আমরা করছি’ থেকে শুধু ‘আমি করছি’তে চলে যাবে।
পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস
বিষয়টি সবারই জানা, কিন্তু কিছু কিছু সম্পর্কে সেটা মানা হয় না। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক অনেকটাই নির্ভর করে এ দুটি বিষয়ের ওপর। বাইরের মানুষের সামনে বদনাম করাও শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস না থাকার কারণেই করেন অনেকে। তবে এই দুটি বিষয়ই অর্জন করে নিতে হয়। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
জোর করে ঝগড়া নয়
সাংসারিক জীবনে ছোটখাটো ঝগড়া হওয়া স্বাভাবিক। ঝগড়া না হলে সেটাই বরং বেমানান। ঝগড়ার পরে ভালোবাসাও নাকি বেড়ে যায়। পুরোনো কোনো বিষয় যদি আগে মিটমাট হয়ে যায়, বর্তমান সময়ে সেটা না মনে করিয়ে দেওয়াই ভালো। জোর করে কোনো বিষয়ে ঝগড়া না করার পরামর্শ দেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা।
ভুল স্বীকার করুন
আপনি যা ভাবছেন, যা করছেন—সেটাই ঠিক। এমনটাই যদি হয় আপনার মনোভাব, তাহলে আপনার সঙ্গী কিন্তু ক্রমাগতভাবে কষ্ট পাবেন। ‘ইগো’, অহংকার নানা কিছুর কারণেই অনেক সময় নিজের ভুল স্বীকার করা হয় না জীবনসঙ্গীর কাছে। এই সম্পর্কটা এমন যে এখানে ছোট হওয়ার কিছু নেই। বরং নিজের ভুলটা স্বীকার করে নিলে অনেক সমস্যাই সহজে সমাধান হয়ে যাবে।
একসঙ্গে কিছুক্ষণ
পেশাগত কাজের চাপে দুজনই কি দৌড়াচ্ছেন? একসঙ্গে গল্প করা হয় না অনেক দিন? অবসরের সময়টুকু হয়তো কেটে যায় টেলিভিশন কিংবা মুঠোফোনের স্ক্রিনে। অনেকেই ভাবেন, ‘পাশেই তো আছে, এটাই তো সময় কাটানো।’ এই ধারণা পোষণ করলে ভুল করছেন। কত ঘণ্টা সময় কাটাচ্ছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়; বরং সময় কীভাবে কাটাচ্ছেন, সেটার ওপর প্রাধান্য দেওয়াই ভালো। মাঝেমধ্যে সন্তান, বাড়ির কাজ থেকে বিরতি নিয়ে একসঙ্গে কিছুটা মুহূর্ত কাটান। শুধু নিজেদের নিয়ে গল্প করুন।
একলা কিছুক্ষণ
বিবাহিত জীবনে মাঝেমধ্যে কিছুক্ষণ একলা সময় কাটানোও দরকার। নিজের পছন্দের কাজটি করা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো—এমন অনেক কিছুই করতে পারেন। এতে মনমেজাজ সতেজ থাকবে। নিজের স্বাধীনতাটুকুও বজায় থাকবে।
ভালো দিকটি দেখুন
পরস্পরের খারাপ দিকগুলো দেখা বন্ধ করুন কিছুক্ষণের জন্য। পৃথিবীতে কেউই ‘পারফেক্ট’ নন। একটি সম্পর্ক দুজনে মিলে ত্রুটিহীন বানাতে হয়। ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করুন। সঙ্গীর কোনো কিছু পছন্দ না হলে সেটা তাকে বুঝিয়ে বলুন। তবে তাকে বদলে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়াও উচিত হবে না। খারাপ দিকগুলো নিয়ে অহেতুক অভিযোগ না করে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
ভালোবাসার প্রকাশ
‘ভালোবাসি তোমাকে’ কথাটি মুখ দিয়ে বলতে হবে। পছন্দের ফুল বা যেকোনো ছোট উপহার দিয়েও কথাটি প্রকাশ করতে পারেন। অনুভব করে নেওয়ার বিষয়টি তো আছেই। তবে কে না চাইবে ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকে এই তিনটি শব্দ শুনতে।
ভালোবাসার ছোঁয়ায়
শারীরিক সম্পর্ক বৈবাহিক জীবনের অন্যতম অংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ বৈবাহিক জীবনে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক থাকতে হবে। শুধু যৌনতা নয়, হাত ধরে থাকাও কিন্তু স্পর্শ। শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দূরত্ব সৃষ্টি হলে অনেক সময় মানসিক সম্পর্কের বেলায়ও সেটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D