১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
আজ পিলখানা হত্যা দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে কালো একটি দিন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে ঘটে এক মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা। তখন সকাল ৯টা ২৭ মিনিট। দরবার হলে চলমান বার্ষিক দরবারে একদল বিদ্রোহী বিডিআর সৈনিক ঢুকে মহাপরিচালকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করেন। বিডিআরের বিদ্রোহী সৈনিকরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে এবং তাদের পরিবারকে জিম্মি করে ফেলেন। চারটি প্রবেশ গেটই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় গুলি ছুড়তে থাকে। জন্ম নেয় এক বীভৎস ঘটনার। ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান ঘটলেও ততক্ষণে বিদ্রোহী সৈনিকরা কেড়ে নেয় ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তার জীবন। পিলখানায় পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তর। ঘটনার পর পিলখানা থেকে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। এ ঘটনায় সারাদেশের মানুষ হতবাক হয়ে যায়। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, দুইজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ জন বিডিআর সদস্য ও ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। পিলখানায় এ বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআরের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়ে। শুরু হয় বিডিআরকে পুনর্গঠনের কাজ। বিডিআরের নাম, পোশাক, লোগো, সাংগঠনিক কাঠামো, পদোন্নতি ইত্যাদি ব্যাপার পুনর্গঠন করে নতুন নামে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জন্ম হয়। পরিবর্তন করা হয় বিডিআর বিদ্রোহের আইন। বর্ডার গার্ড আইনে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা রাখা হয় মৃত্যুদন্ড। বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় বিশেষ আদালত ৮৫০ জন আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে ফাঁসি, ১৬১ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২৬৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। ২৭১ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের (বর্তমান বিজিবি) ঘটনার ৪ বছর ৮ মাস পর ২০১৩ সালের ৫ নভেম্ব^^র বেলা সাড়ে ১২টার দিকে লালবাগে অবস্থিত আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ হত্যা মামলার রায় দেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে অন্যদের ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। আসামিদের মধ্যে ৬ জন ডিএডি রয়েছেন। ওই দিন ৮২৩ আসামির উপস্থিতিতে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০১০ সালের ১২ জুলাই পিলখানা হত্যা মামলায় ৮২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে সম্পূরক চার্জশিটে আরও ২৬ জনকে আসামি করা হয়। পিলখানা হত্যা মামলার ২৩৩তম কার্যদিবসে ৬৫৪ জন সাক্ষী আদালতে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নবজ্যোতি খিসা। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর হয়। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিডিআরের নিজস্ব আইনে ৫৭টি মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে সারাদেশে ৫ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। বিডিআর আইনে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা ছিল সাত বছর কারাদন্ড। বর্তমানে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সরকারিভাবে এ দিনটিকে ‘পিলখানা হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এ জন্য বিশেষ কর্মসূচি পালন করবে বিজিবি। ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় বর্বরোচিত হত্যাকান্ডে শহীদ ব্যক্তিবর্গের স্মরণে ২৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হবে। কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে পিলখানাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সকল রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন, বিজিবির সকল মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D