টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে ২৪৬ রানেই গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

প্রকাশিত: ৬:১৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০১৮

টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে ২৪৬ রানেই গুটিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

চট্টগ্রাম: দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দেয়া ৩২৪ রানের বিপরীতে দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে ২৪৬ রানে থেমে যায় সফরকারীদের ইনিংস। উইকেটে অপরাজিত থাকেন শেন ডরউইচ (৬২)।

এর আগে ওপেনিংয়ে নেমে ব্রাথওয়েইটের সঙ্গে ২৯ রানের জুটি গড়েন ও কিয়েরন পাওয়েল। সেই জুটিতে হানা দেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার করা বলে এলবির শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ১৪ রানে ফেরেন কিয়েরন পাওয়েল (২৯/১)। ১ রানের ব্যবধানে উইকেটে হানা দেন সাকিব আল হাসান।

ইনজুরি থেকে ফিরে ইনিংসে নিজের করা প্রথম বলেই শাই হোপকে ব্যক্তিগত ১ রানে ফেরান দেশ সেরা এই অলরাউন্ডার (৩০/২)। ওভারের শেষ বলে আবারো উইকেটে হানা দেন সাকিব। দলীয় ৩১ রানে সাকিবের বলে সৌম্যের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট। ফেরার আগে ১৩ রান করেন এই ওপেনার (৩১/৩)।

তবে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আরেকটি উইকেটের সুযোগ পেয়েছিলেন সাকিব। তবে তার বলে রোস্টন চেজ ক্যাচ তুললেও সেই ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন মোস্তাফিজ। তাতেই ৩ উইকেটে ৫৪ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় উইন্ডিজরা।

বিরতির পর সুনীল অ্যামব্রিসের সঙ্গে জুটি গড়ে এগুতে থাকেন রোস্টন চেজ। তবে সেই উইকেটে হানা দেন অভিষিক্ত অফস্পিনার নাঈম হাসান। তার করা বলে ইমরুল কায়েসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩১ রান করা রোস্টন চেজ (৭৭/৪)। তাতেই টেস্টে উইকেটের খাতা খুললেন নাঈম।

১১ রানের ব্যবধানে আবারো উইন্ডিজ উইকেটে আঘাত হানেন নাঈম। দলীয় ৮৮ রানে তার বলে এলবির শিকার হয়ে ফেরেন ১৯ রান করা সুনীল অ্যামব্রিস (৮৮/৫)।

এরপর শেন ডরউইচকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটে চেপে বসেন শিমরন হেটমেয়ার। দু’জন মিলে দলকে টেনে নিয়ে যায় ১৮০ রানে। তবে সেই জুটি ভেঙে দেন মিরাজ। তার বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে ফেরেন হেটমেয়ার (১৮০/৬)। এরপর দেবেন্দ্র বিশুকে সঙ্গে করে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেন শেন ডরউইচ।

তবে বিরতির পর সেই উইকেটে হানা দেন নাঈম। দলীয় ১৯৯ রানে দেবেন্দ্র বিশুকে ব্যক্তিগত ৭ রানে এলবিতে ফেরান অভিষিক্ত এই স্পিনার (১৯৯/৭)। বিশুকে ফেরানোর পর কেমার রোচকেও ফেরান তিনি। দলীয় ২০৫ রানে নাঈম বলে এলবির শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ২ রানে ফেরেন রোচ (২০৫/৮)।

দলীয় ২২৫ রানে আবারো হানা দেন নাঈম। বোল্ড করে জোমেল ওয়ারিকান ব্যক্তিগত ১২ রানে ফেরান তিনি (২২৫/৯)। আর তাতেই বাংলাদেশের অষ্টম বোলার হিসেবে অভিষেক টেস্টে ৫ উইকেট তুলে নিলেন ১৭ বছর বয়সি এই তরুণ স্পিনার।

আর দলীয় ২৪৬ রানে সাকিবের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ রান করা শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। তাতেই ইনিংস থেমে যায় উইন্ডিজদের।

এর আগে বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেটে ৩১৫ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে ৯ রান যোগ করতেই বাকি দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পর ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। ৯৩তম বাংলাদেশি টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে এই ম্যাচে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর এই সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন খালেদ আহমেদ, আরিফুল হক এবং লিটন দাস। তাদের জায়গায় এসেছেন নাঈম হাসান, সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান।

টেস্ট র্যাং কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আট নম্বরে আর বাংলাদেশ নয় নম্বরে। এর আগে সাতটি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-উইন্ডিজ। ১০টিতেই জয় পায় ক্যারিবীয়ানরা। দুটি ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। সবশেষ ক্যারিবীয় সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ পাঁচ টেস্টের চারটিতেই হেরেছে মুশফিক-ইমরুল-মিরাজরা। আর নিজেদের খেলা সবশেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে হেরেছে উইন্ডিজ।

চট্টগ্রাম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি। এছাড়া, ম্যাচটি সরাসরি দেখা যায় র্যা বিটহোলবিডিতে।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান এবং নাঈম হাসান।

উইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট (অধিনায়ক), কিয়েরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হেটমেয়ার, সুনীল অ্যামব্রিস, রোস্টন চেজ, শেন ডরউইচ, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকান এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।