অপমান করেছে হয়তো আমরা ভুলতে পারব না, এরপরও সংলাপে বসেছি : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০১৮

অপমান করেছে হয়তো আমরা ভুলতে পারব না, এরপরও সংলাপে বসেছি : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বার বার তাকে বিএনপি’র পক্ষ থেকে অপমান করা সত্ত্বেও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে অবাধ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে জন্য তিনি ঐ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপে বসেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রকম অপমান তারা করেছে, হয়তো আমরা ভুলতে পারবো না। তারপরও, আগামীতে সকলের অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা দায়িত্ব মনে করে আমরা সংলাপে গিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এদেশের মানুষকে যাতে ঐ জ্বালাও-পোড়াও- এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয়।’

তিনি বলেন, ‘এত অপমান এতকিছু সব সহ্য করেও আমরা শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তাঁর ভোটটা শান্তিতে দিতে পারুক, দেশের মানুষ তাঁর মন মত সরকার বেছে নিক- সেই চিন্তাটা করেই আমরা এই সংলাপে বসেছি।’

প্রধানমন্ত্রী তার সময়ে দেশের নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আছি কাজেই আগামীর নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ, আমরা সরকারে আসার পরে এই পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি নির্বাচন হয়েছে, এরমধ্যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের প্রায় ১৫ জন সংসদ সদস্য মারা যাওয়ায় সেসব আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। কিন্তু সেসব নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি।

তিনি বলেন, এক সময় আমরা ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হেরেছি, সিলেটে হেরেছি, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবার পরে নির্বাচন কমিশন ২৫৪টি ভোট কেন্দ্রের ভোটের পুনঃতদন্ত করে প্রায় দেড় মাস পর ফল ঘোষণা করেছে, সেখানে আমরা কোনোরকম হস্তক্ষেপ করিনি। কারণ, জনগণ ভোটের মালিক, জনগণ ভোট দেবে এবং স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।

এই নির্বাচন কমিশনকে সকল দলের প্রতিনিধি নিয়ে এমনকি বিএনপি’রও প্রতিনিধি নিয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘কাজেই এই নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোনো অভিযোগ থাকার সুযোগ আছে বলে মনে করি না এবং এই সার্চ কমিটি দ্বারা গঠিত নির্বাচন কমিশন প্রতিটি নির্বাচন করেছে স্বচ্ছতার সাথে এবং তাঁরা যা ফলাফল দিয়েছে আমরা সেটাই মেনে নিয়েছি।’
তাঁর সরকার জায়গায় যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে দেশে এত সুষ্ঠুভাবে কি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারতো, তারা কি পরাজয়গুলো মেনে নিত? প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সিলেট এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে হারার পরও আমরা মেনে নিয়েছি। কারণ, এত উন্নয়ন কাজ করেছি তারপরও যদি জনগণ ভোট না দেয় আমাদের করার কিছু নেই, এটা জনগণের বিচার। তাঁরা যেটা বিচার করবে সেটাই হবে।’

দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর পুত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং তাজউদ্দিন আহমেদ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি স্মরণ সভায় বক্তৃতা করেন।

আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ এমপি এবং আবুল হাসনাতও সভায় বক্তৃতা করেন।

দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির পিতার ঘাতকরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী এবং মুজিব নগরের প্রবাসী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর অপর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএইচএম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট