সরকারের উন্নয়ন দৃশ্যমান, দেশের অগ্রযাত্রায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৭:৪১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১, ২০১৮

সরকারের উন্নয়ন দৃশ্যমান, দেশের অগ্রযাত্রায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের উন্নয়ন দৃশ্যমান। এখন দেশের অগ্রযাত্রায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

গণভবনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে সংলাপটি শুরু হয়।

এর আগে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে গণভবনে পৌঁছান।

সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্য বেইলি রোড খেকে রওনা হন। এছাড়া অনেকে পৃথকভাবে সেখানে পৌছান। বিকেল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে প্রথমে পৌঁছান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান। পরে একে একে সবাই সেখানে প্রবেশ করেন।

আগেই সেখানে পৌঁছান ১৪ দলের অনেক নেতা। দুদিন থেকেই এই সংলাপের প্রস্তুতি চলছে গণভবনে। সকাল থেকেই গণভবনের আশেপাশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

এ দিকে গণভবনে সংলাপে যাওয়ার আগ মুহূর্তে বৈঠকে বসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

বিকেল ৪টার দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় যেতে থাকেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। পরে তারা সেখানে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে মিলিত হন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সুব্রত চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে তারা গণভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

সংলাপে কী হবে, তা নিয়েই সারা দেশের দৃষ্টি এখন গণভবনের দিকে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ২৩ সদস্যের নেতৃত্ব দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার চেয়ারম্যান কামাল হোসেন নেতৃত্ব দেবেন ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্যাহ, মো.আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, আবদুর রহমান ও দীপু মনি, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নেতা শ ম রেজাউল করিম।

১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের একাংশের কার্যকরী সভাপতি মইনুদ্দিন খান বাদল, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া উপস্থিত থাকবেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী ও মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ ও ম শফিক উল্লাহ এবং নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমীন এবং ঐক্যফ্রন্টের দুই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- এস এম আকরাম ও সুলতান মো. মনসুর আহমেদ। এর মধ্যে এস এম আকরাম হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য। সুলতান মো. মনসুর আহমেদ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি।

সাত দফা দাবি সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি গণভবনে গেছেন।

দফাগুলো হলো: ১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

২. যোগ্যব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

৩. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তিরনিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে।

৫. নির্বাচনের ১০দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা বাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণে পূর্ণ ক্ষমতা ইসির ওপরে ন্যাস্ত করতে হবে।

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।

৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনেরফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো ধরনের মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ চারটি দলের সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করে। নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যও ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট