বেদনাদায়ক স্মৃতি নিয়েই বিকেল ৫টায় আফগানদের মুখোমুখি বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ৫:২২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮

বেদনাদায়ক স্মৃতি নিয়েই বিকেল ৫টায় আফগানদের মুখোমুখি বাংলাদেশ

Manual2 Ad Code

আবুধাবি : প্রতিশোধ নয়, তারপরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না বাংলাদেশ। জয়ের লক্ষ্য নিয়েই এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৪তম আসরের ষষ্ঠ ও ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আজ আফগানদের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা।

এ ম্যাচের বিজয়ী দল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনাল খেলবে। আবু ধাবিতে বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

সাম্প্রতিক সময়ে টি-২০ ফরম্যাটে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। তবে বাংলাদেশের কাছে স্মৃতিটা খুবই বেদনাদায়ক। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইওয়াশ হয় সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন দলটি। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠারই কথা বাংলাদেশের। মনে মনে হয়তো আগুন ঠিকই জ্বলছে টাইগারদের। কিন্তু স্বীকার করতে চান না বাংলাদেশের অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচকে নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘প্রতিশোধ নিতে আফগানিস্তানকে হারাতেই হবে এমন কোন পরিকল্পনা নেই, নিজেদের সেরাটা দিয়ে ভালো ফল অর্জন করতে মাঠে নামবো আমরা। হারাতেই হবে পরিকল্পনা করে নামলে আসলে হয় না। একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে সব কিছু হয়। আফগানিস্তাকে ছোট করে দেখার কিছু নেই বা বড় করেও দেখার কিছু নেই। আমাদের যা আছে, তা দিয়ে নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। আমরা সবাই মানসিকভাবে শক্ত আছি। ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।’

Manual4 Ad Code

শ্রীলংকাকে উড়িয়ে দিয়ে এবারের আসরে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। ১৩৭ রানের জয়ে দুর্দান্ত শুরু হয় টাইগারদের। বাংলাদেশের মত শুভ সূচনা করে আফগানিস্তানও। শ্রীলংকার বিপক্ষে ৯১ রানের জয় তুলে নেয় আফগানরা। তাই ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছে দু’দল। এমনটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া শেষ চারে খেলার চাপও নেই বাংলাদেশ বা আফগানিস্তানের উপর। যে কারণে ম্যাচটি অনেকটাই নিয়ম রক্ষার। তারপরও কেউ কাউকে ছাড় দেবে না। পরিরকল্পনা আটছে উভয় দলই। সঙ্গত কারণেই ম্যাচটি ভিন্ন উত্তেজনা ছড়াবে।

বাংলাদেশের চিন্তার কারণ হতে পারে আফগানিস্তানের দুই স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উপর রহমান। কিন্তু তাদেরকে খেলা যাবে না, এমনটা মনে করেন না বাংলাদেশের মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন। তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে রশিদ ও মুজিব বিশ্বমানের বোলার। কিন্তু তার মানে এই না, তাদের খেলা যাবে না। ওয়ানডে ক্রিকেটে আমরা বেশ ভালো দল। তাদের স্পিনারদের নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করা যাবে না বা চেপে বসতে দেয়া যাবে না। বেশিরভাগ সময়েই এর পরিণাম নেতিবাচকই হয়। আমরা যদি পরিকল্পনা মোতাবেক খেলতে পারি তবে সমস্যা হবার কথা নয়।

তারপরও জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না বাংলাদেশ। কারণ শেষ চারের আগে আরও একটি জয় দলের বাড়তি সাহস যোগাবে বলে মনে করেন মিথুন। তিনি বলেন, ‘গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। গত ম্যাচ থেকে অনেক ইতিবাচক দিক অর্জন করতে পেরেছি। তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে, জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’

Manual5 Ad Code

তারপরও বাংলাদেশ দলের দুঃশ্চিন্তার নাম ইনজুরি সমস্যা। কিন্তু টাইগার দলের বড় দুঃশ্চিন্তার বিষয় হতে পারে তামিম ইকবালের অনুপুস্থিতি। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচে আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়েন বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার। ভাঙ্গা আঙ্গুল নিয়েই ম্যাচের শেষের দিকে এক হাতে ব্যাটও করেছেন তামিম। সঙ্গ দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ও নির্ভরতার প্রতীক মুশফিকুর রহিমকে। এতে শেষ উইকেটে ৩২ রান পায় বাংলাদেশ। যা বিশ্বরেকর্ড হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

কিন্তু আঙ্গুলে চিড় ধরায় এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেছে তামিমের। ফলে তামিমের জায়গায় দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দেশের হয়ে মাত্র এক টেস্ট খেলেছেন শান্ত। যদি ওয়ানডে একাদশে সুযোগ পান তবে নিজেকে উজাড় করে দেয়ার পণ করেছেন শান্ত।

তিনি বলেন, ‘একটি টেস্ট খেলার পর এইচপি ক্যাম্প, ‘এ’ দল মোটামুটি সব জায়গায় খেলেছি। ব্যাট হাতে ভালো রানও করেছি। তো সব মিলিয়ে প্রস্তুতি খুবই ভালো। এখন যদি সুযোগ পাই চেষ্টা করবো যে প্রস্তুতিটা এতোদিন নিয়েছি, যে রকম আত্মবিশ্বাসী আছি সেভাবে ম্যাচেই কাজে লাগানো।’

ইনজুরি নিয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৪৪ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলেছেন মুশফিক। ১১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৫০ বলে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। শেষ চারের কথা মাথায় রেখে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুশফিককে বিশ্রামে রাখতে পারে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিলো ২০১৬ সালে। বাংলাদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ২-১ ব্যবধানে সিরিজটি জিতেছিলো মাশরাফির নেতৃত্বাধীন দলটি।

এছাড়া ওয়ানডে ক্রিকেটে খুব বেশি মুখোমুখিও হয়নি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। এখন পর্যন্ত ৫ বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। ৩ বার জয় পেয়েছে টাইগাররা। ২ বার জিতেছে আফগানরা।

বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিথুন, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, আবু হায়দার রনি, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোমিনুল হক।

Manual5 Ad Code

আফগানিস্তান দল : আসগর আফগান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ শাহজাদ, ইহসানুল্লাহ জানাত, জাবেদ আহমাদি, রহমত শাহ, হাশমত শহিদি, মোহাম্মদ নবী, রাশিদ খান, নজিবুল্লাহ জাদরান, মুজিব উর রহমান, আফতাব আলম, সামিউল্লাহ সিনওয়ারি, মুনির আহমেদ কাকার, সৈয়দ আহমদ শেরজাদ, শরাফুদিন আশরাফ ও ওয়াফাদার।

Manual3 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code