১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:১২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০১৮
গত ১০ বছরেও কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে সরকারের টনক নড়াতে পারেনি বিরোধী দল বিএনপি। নামে ২০ দলীয় জোট গঠন হলেও মাঠের রাজনীতিতে চোখে পড়ার মতো কোনো কর্মসূচি নেই। ফলে ক্ষমতাসীন সরকার যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। ফলে সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতিবিদরা মাঠের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় উঠেছে।
এরই অংশ হিসেবে গঠিত যুক্তফ্রন্ট। এই ফ্রন্ট আগামীতে জাতীয় রাজনীতি একটা পরিবর্তন আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এরই মধ্যে যুক্তফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন গণফোরামের নেতা ড. কামাল হোসেন।
আগামী নির্বাচনে গণফোরামকে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় যুক্তফ্রন্টের নেতাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন ফ্রন্টের নেতারা।
এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কামাল হোসেনের যৌথ নেতৃত্বে চলবে এই প্রক্রিয়া।
ঢাকার বেইলি রোডে গণফোরাম সভাপতির বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর যুক্তফ্রণ্টের চেয়ারম্যান বি চৌধুরী সাংবাদিকদের একথা জানান। এ সময়ে তার পাশেই ছিলেন কামাল হোসেন।
বৈঠক শেষে অপেক্ষামাণ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে যুক্তফ্রণ্টের চেয়ারম্যান বি চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় একটি ধারা তৈরিতে কাজ করছে বি চৌধুরী, আ স ম রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার যুক্তফ্রন্ট।
গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তফ্রন্ট গঠনের পর কামাল হোসেনের গণফোরাম এবং আবদুল কাদের সিদ্দিকীর কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগকে যুক্ত করার চেষ্টা করে আসছিলেন জোটটির নেতারা।
এর আগে গত ২০ অগাস্ট বিকল্পধারা মহাসচিব আবদুল মান্নানের গুলশানের বাড়িতে এক বৈঠকে গণফোরামের জোটভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
তবে এরপর কামাল হোসেনের অনাগ্রহের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে তার বাড়িতে হাজির হন যুক্তফ্রন্টের নেতারা।
বিকল্প ধারার সভাপতি বি চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও গণফোরামের সভাপতি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য এই সভায় আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
‘এই লক্ষ্যে পরবর্তী কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য আমরা একটি সাব কমিটি গঠন করার ব্যবস্থা নিয়েছি। দ্রুত তারা এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে জানাবেন।’
সাব কমিটিতে কারা আছেন- জানতে চাওয়া হলে কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই বিষয়ে গণমাধ্যমকে পরে জানানো হবে।’
‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনে বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে এই সভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাওয়া হলে বি চৌধুরী বলেন, এই পর্যায়ে এটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আজকে আমাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাত ৮টার দিকে বেইলি রোডে কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠকে বসেন ফ্রন্টের নেতারা। বৈঠক শেষে তারা বেরিয়ে আসেন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। কামাল হোসেন বাসার ফটক থেকে বেরিয়ে গাড়ির সামনে গিয়ে বি চৌধুরীকে বিদায় জানান।
বৈঠকে যুক্তফ্রন্টের সদস্য সচিব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সভাপতি আ স ম রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী, সহ-সভাপতি শাহ আহমেদ বাদল, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক আহমেদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমিন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মো. মনসুর ও রবের স্ত্রী তানিয়া রব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, চলমান রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তারা এ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বিএনপির দেওয়া ১০ দফা ও যুক্তফ্রন্টের ৭ দফা নিয়ে আলোচনার কথা থাকলে আজকের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তফ্রন্ট নেতা বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন আগামী নির্বাচনের আগে বৃহত্তর ঐক্য নিয়ে কাজ করে আসছেন। তাদের সঙ্গে আছেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রবও। বিএনপির সঙ্গে এই জোটের ঐক্য হবে কি হবে না তা নিয়েও চলছে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা।
এদিকে বিএনপি জাতীয় ঐক্য গড়ার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। এ বৈঠকে তাদের পক্ষে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিনিধিত্ব করেছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্য গড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ঐক্য প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য আবারো বৈঠকে বসবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। আগামী মাসের প্রথম দিকে বি. চৌধুরীর বারিধারার বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের পক্ষ থেকে উত্থাপিত সাত দফার আলোকে অভিন্ন কর্মসূচি ঠিক করতে বৈঠক করবেন চার সদস্যবিশিষ্ট সাব-কমিটির সদস্যরা।
যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আমরা একটি বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ শুরু করেছি। এর প্রথম ধাপ হিসেবে বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরাম এক সঙ্গে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দুই পক্ষ থেকে উত্থাপিত সাত দফাকে সামনে রেখে একটি অভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে।
আব্দুল মালেক রতন জানান, এ জন্য সাব-কমিটির সদস্যরা আগে বৈঠকে বসে অভিন্ন কর্মসূচির একটি খসড়া দাঁড় করাবেন। এরপর যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসে এটি চূড়ান্ত করবেন।
এদিকে আগামী ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র এবং নির্বাচন’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেছে জেএসডি। পরদিন ২ সেপ্টেম্বর কৃষিবিদ মিলনায়তনে আরও একটি সেমিনারের আয়োজন করবে বিকল্পধারা বাংলাদেশ।
দু’টি অনুষ্ঠানেই বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
ঐক্য প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতেই এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে বলে দুই পক্ষের নেতারা জানিয়েছেন।
তারা বলেন, সেপ্টেম্বর থেকেই নানান কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবেন যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরাম। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ড. কামাল হোসেন যে নাগরিক সমাবেশ আহ্বান করেছেন, সেখানেও উপস্থিত থাকবেন যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরামের নেতারা।
অবশ্য ড. কামাল হোসেনের নাগরিক সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী বাদে প্রায় সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D