৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০১৮
সামারা : রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে প্রথমার্ধ গোলশূন্য সমতায় থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে নেইমার ও ফিরমিনোর গোলে ব্রাজিল ২-০ গোলে মেক্সিকোকে হারিয়েছে।
সামারায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ জিতে পঞ্চম দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠল ব্রাজিল। এর আগে ফ্রান্স, উরুগুয়ে, রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া শেষ আটে জায়গা করে নেয়।
এই ম্যাচে ব্রাজিলের জয়ের নায়ক নেইমার। তিনি একটি গোল করেছেন, আর আরেকটি গোল করিয়েছেন ফিরমিনো।
ম্যাচের ৫১ মিনিটে ব্রাজিল এগিয়ে যায়, লক্ষ্যভেদ করেন দলটির সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার। ফরোয়ার্ড উইলিয়ানের চমৎকার ক্রসে নেইমার পা ছোঁয়ালেই বল ঠিকানা খুঁজে পায় মেক্সিকো জালে।
গোল সমতা আনার একটি চমৎকার সুযোগ পেয়েছিল মেক্সিকোও। ৬৫ মিনিটে বক্সের সামনে থেকে ফরোয়ার্ড হার্ভিং লোজানোর চমৎকার একটি শট ব্রাজিল গোলরক্ষক কোনোমতে বিপদমুক্ত করেন। তা না হলে বিপদ হতে পারতো।
অবশ্য ম্যাচের ৮৮ মিনিটে আরেকটি গোল হজম করে বসে মেক্সিকো। নেইমারের চমৎকার পাসে ফিরমিনো প্লেসিং শটে গোল করে দলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
অবশ্য এর আগে ২৪ মিনিটে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেছিল ব্রাজিল। মাঝমাঠ থেকে পাওয়া একটি বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। কিন্তু মেক্সিকো গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় বল জালে জড়াতে পারেননি। তার চমৎকার প্লেসিং রুখে দেন গুইলারমো ওচোয়া।
শুধু এটিই নয়, এরপরও ব্রাজিলের আরো কয়েকটি আক্রমণ একাহাতে রুখে দিয়েছেন ওচোয়া। এ ম্যাচে সাবেক চ্যাম্পিয়নদের সামনে বড় দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।
অবশ্য ওচোয়া শেষ পর্যন্ত পারেননি দলকে বাঁচাতে, তাই হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তার দলকে।
তবে এবার অবশ্য তিতের অধীনে আগে থেকেই বেশ ভালো ফর্মে ছিলেন নেইমাররা। সর্বশেষ ২৪টি ম্যাচের মধ্যে ১৯টিতেই জয় পেয়েছে ব্রাজিল। কোনো গোল হজম করেনি ১৮টি ম্যাচে। হার ছিল একটাই। গত জুনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল ব্রাজিল।
অন্যদিকে মেক্সিকো টানা ছয়টি বিশ্বকাপে বিদায় নিয়েছে শেষ ষোলো থেকে। শেষবারের মতো তারা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল ১৯৮৬ সালে। সেবার তারাই ছিল স্বাগতিক দেশ।
এসব পরিসংখ্যানের বিচারে ব্রাজিলকে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে রাখে অনেকেই। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই মেক্সিকো যেভাবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়েছে- তাতে অন্য কিছুও ঘটে যাওয়ার শঙ্কায় ছিলেন নেইমাররা। অবশেষে সেই শঙ্কা কাটিয়ে নিজেদের সম্মান ধরে রেখেছে তারা।
ফিরে দেখা অতীত
১৯৯০ সালের পর থেকে কখনও বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালের আগে বাদ পড়েনি ব্রাজিল। অন্যদিকে শেষ ছয় বিশ্বকাপেই দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে গেছে মেক্সিকো। বিশ্ব মঞ্চে চারবার দেখায় একবারও ব্রাজিলকে হারাতে পারেনি, হজম করেছে ১১টি গোল। সামারায় সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়ে হেরেছে মেক্সিকো।
তথা অতীতের রেকর্ড যা বলছে
নিজেদের শেষ ১৫টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অপরাজিত আছে তিতের ব্রাজিল। ১৯৯৯ সালের পর থেকে ব্রাজিলের বিপক্ষে শেষ ১৫ ম্যাচের সাতটিতে জয় আছে মেক্সিকোর, হার পাঁচটি।
রাশিয়া বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৪২ বার বল ড্রিবল করার চেষ্টা করেছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার। ২৮ বার ড্রিবল করে তার সবচেয়ে কাছে আছেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি।
এ পর্যন্ত নেইমার ১৮টি গোলের সুযোগ পেয়েছেন, যা আসরে অন্য যে কোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের তিন ম্যাচে ৫৬টি শট নিয়েছে ব্রাজিল। টুর্নামেন্টে টিকে আছে এমন দলগুলির মধ্যে এটি সর্বোচ্চ। শেষ ষোলোর প্রতিপক্ষ মেক্সিকো নিয়েছে ৪৪টি শট।
টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৮৪টি পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছে সেলেসাওরা, যা মেক্সিকোর চেয়ে ৬৩১টি বেশি।
গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে ২৯৭.৬৬ কিলোমিটার দৌড়েছে মেক্সিকো। চলতি আসরে এর চেয়ে কম দৌড়েছে শুধু পানামা। ব্রাজিলের সবাই মিলে দৌড়েছে ৩১৩.৪ কিলোমিটার।
টুর্নামেন্টে টিকে থাকা দলগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের চেয়ে বেশি সময় বল পায়ে রাখতে পেরেছে শুধু স্পেন। তিন ম্যাচে ১১১ মিনিট ৪ সেকেন্ড নিজেদের পায়ে বল রেখেছে তিতের দল। অন্যদিকে মেক্সিকোর বল পজেশন ৮৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ড।
গ্রুপ পর্বে দুই হলুদ কার্ড দেখায় শেষ ষোলোয় খেলতে পারবেন না মেক্সিকোর ডিফেন্ডার এক্তর মোরেনো।
তিন ব্রাজিলিয়ান (ফিলিপে কৌতিনিয়ো, কাসেমিরো ও নেইমার) ও মেক্সিকোর তিন খেলোয়াড় (এক্তর এররেরা, মিগেল লাইয়ুন ও হেসুস গাইয়ার্দো) আর একটি করে হলুদ কার্ড দেখলেই এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন।
ব্রাজিল ও মেক্সিকো নিজেদের মুখোমুখি হয়েছে ৪০ বার। লাতিন পরাশক্তিদের ২৩ জয়ের বিপরীতে মেক্সিকানদের জয় ১০টি। বিশ্বকাপে চারবার দেখা হয়েছে দুই দলের। প্রথম তিন দেখায় জয় ব্রাজিলের। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে শেষ দেখা গ্রুপ পর্বের ম্যাচে। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল।
এর আগে বিশ্বকাপে চারবারের দেখায় ব্রাজিলের জালে কোনো গোল দিতে পারেনি মেক্সিকো, হজম করেছে ১১টি। এবার আরো দুই গোল হজম করতে হলো।
অন্যদিকে ব্রাজিল শেষবার কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠতে পারেনি ১৯৯০ সালে।
বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ৫৬ ম্যাচ খেলে কোনো শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি মেক্সিকো। বিশ্ব মঞ্চে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে শিরোপা জিততে না পারার রেকর্ড এটি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D