সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১ ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০১৮

সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১ ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত

সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের সাত জেলায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আটজন নিহত হয়েছেন। আর মাদক বিক্রেতাদের নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে তিন জেলায় নিহত হয়েছেন তিনজন।

পুলিশ ও র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী নিহতরা সবাই মাদক কারবারে জড়িত। তাদের সবার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকবিরোধী আইনে মামলা আছে।

এদের মধ্যে কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুইজন এবং ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, ঠাকুরগাঁও ও পাবনায় একজন করে নিহত হয়েছেন। দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন একজন করে। আর ফেনী, বরগুনা ও দিনাজপুরে একজন করে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন বলে ভাষ্য পুলিশের।

এই নিয়ে গত সাত দিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৬৭ ‘মাদক কারবারির’ মৃত্যু হলো। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী এই সাত দিনে আটজন মাদক বিক্রেতার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যারা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে গত ৪মে থেকে অভিযান শুরুর পর অন্তত ৮৪ মাদক বিক্রেতা নিহত হলেন। গতরাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের নিয়ে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

ফেনী
ফেনীর রুহিতিয়া এলাকা থেকে কবির হোসেন নামে এক ডাকাতের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ব্রিকফিল্ড এলাকায় নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ খাঁন চৌধুরী বলেন, নিহত কবিরের বিরুদ্ধে ডাকাতি, মাদকসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

কুমিল্লা
কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। তারা হলেন বাবুল এবং আলমাস।

শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগরা এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে গত পাঁচ দিনে কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোট আটজন মাদক বিক্রেতা নিহত হলেন।

ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহ জাহান কবির জানান, গোপন সূত্রে মাদক কারবারিদের আটক করতে বিপাড়া-দেবিদ্বার সার্কেলের এএসসি শেখ মোহাম্মদ সেলিম ও তার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল উপজেলার বাগরা এলাকায় অবস্থান নেয়। রাত দেড়টার দিকে মাদক কারবারি বাবুল ও আলমাস তাদের সহযোগীদের নিয়ে সেখানে পৌঁছালে তাদের আটকের চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় মাদক কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা ১৬ রাউন্ড গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলিবিনিময়ে মাদক বিক্রেতা বাবুল ও আলমাস গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেলে নেয়ার পথে দুজনই মারা যায়।

বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে ৪০ কেজি গাঁজা ও একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চাঁদপুর
চাঁদপুরের কচুয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বাবলু নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক বিক্রেতা নিহত এবং তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। নিহতের নাম শাহজাহান। তিনি মাদক বিক্রেতা বলে দাবি করেছে পুলিশ।

পাবনা
রাত সোয়া দুইটার দিকে পাবনা সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। তার নাম আব্দুর রহমান। তিনি ওই এলাকার আছের উদ্দিনের ছেলে।

বন্দুকযুদ্ধে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম বিশ্বাস।

দিনাজপুর
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও সদর উপজেলায় দুই মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। তাদের একজন র‌্যালবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অপরজন দুই দল মাদক বিক্রেতার মধ্যে গুলিবিনিময়ে নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন, সাবদারুল ইসলাম ও আবদুস সালাম। দুজনই মাদক কারবারে জড়িত বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

র‌্যাব-১৩ দিনাজপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক (সিও) মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব জানান, শুক্রবার ভোরে বীরগঞ্জে অভিযান চালাতে গেলে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে সাবদারুল গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাবদারুল। পরে তার কাছে একটি বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড তাজা গুলি, এক রাউন্ড গুলির খোসা, প্রায় দুই কেজি গাঁজা ও ১০০ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া যায়।

অন্যদিকে দিনাজপুর কোতয়ালি থানার ওসি রেদওয়ানুর রহিম জানান, রাতে রামসাগর এলাকায় দুই দল মাদক বিক্রেতার মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল সেখান থেকে আবদুস সালামকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ফেন্সিডিল, চারটি হাত বোমা, একটি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জয়পুরহাট
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রেন্টু মিয়া নামে একজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার ভীমপুর এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত রেন্টু উপজেলার উত্তর গোপালপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।

র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন জানান, রেন্টু জেলার তালিকাভূক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি। এর আগে র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের কাছে একাধিকবার গ্রেপ্তারও হন তিনি।

বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিসহ বেশ কিছু মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র‌্যাব।

ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোবারক হোসেন কুট্টি নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। তিনি সদর উপজেলার ছিট চিলারং গ্রামের মৃত শফির উদ্দিনের ছেলে। শনিবার ভোর রাতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পশ্চিম বেগুনবাড়ি গ্রামে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ ১০০ ইয়াবা উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া।

বরগুনা
বরগুনায় ছগির খান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাদক বিক্রেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে ছগির খান মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন বরগুনা থানার ওসি মাসুদুজ জামান।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট