১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:০২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০১৮
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনে ঢাকাসহ সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশের সর্বত্রই সড়ক-মহাসড়কগুলোতে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এতে সারাদেশ কার্যত অচল হয়ে গেছে।
এদিকে প্রবল আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান সব কোটা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা। এরপরও শিক্ষার্থীরা মাঠ ছাড়েনি। তারা সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা চায়।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, বিকেলে সংসদে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দিবেন। যেখানে কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে পারে।
গত কিছুদিন থেকে সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলন করে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। বরং আন্দোলন নিয়ে মন্ত্রী-এমপিদের বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা গেছে। এমন কি কোটা সংস্কারের আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেয়া হয়। ছাত্রলীগ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে।
সর্বশেষ রবিবার রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের বর্বর হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর সোমবার এবং মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ কর্তৃক যে হামলা চালানো হয়েছে তা আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। যার ফলে আন্দোলন এখন গণবিস্ফোরণমুখ হয়ে পড়েছে।
এর আগে সরকারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। এদিকে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগ রাতভর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে রুমে রুমে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কবি সুফিয়া কামাল হলে মেয়েদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের হামলায় এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেয়ার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলে। এই অভিযোগে হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইসরাত জাহান ইশাকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রলীগ থেকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে ও নির্যাতনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা গেছে বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছে।
ঢাকা ব্যুরো: কোটা সংস্কারের আন্দোলনের প্রথম সারির একাধিক নেতা অবস্থানরতদের আন্দোলন স্থগিত করে ফিরে যাবার নির্দেশ দিলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেটা শুনছেন না। গত মঙ্গলবার রাতে হামলার পর বুধবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান করে তারা স্লোগান দিচ্ছেন। তারা বলছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর যারা হামলা করেছে সেই হামলাকারীদের বিচার করতে হবে আর কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন হচ্ছে তা তারা চালিয়ে যাবেন।
এছাড়া কোটা সংস্কারের দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশপাশি বুধবার আন্দোলনে নেমেছেন বেসরকারি শিক্ষার্থীরাও। সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাদের বিবিএ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়েছে। তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে নর্দান, রয়েল, প্রাইম, প্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে অবস্থান নিয়েছেন নর্থ সাউথ ইউনিভারসিটি (এনএসইউ), আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটিঅব বাংলাদেশ (এআইইউবি) ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভারসিটি (আইইউবি) এর শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা।
পান্থপথে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) শিক্ষার্থীদের গ্রিনরোড সিগন্যালের চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছে। বুধবার সকাল সোয়া ৯টা থেকে তারা এ আন্দোলন শুরু করে। ‘মেধাবিদের কান্না আর না, আর না ’ বলে স্লোগান দিচ্ছে। সড়ক অবরোধের কারণে পান্থপথ বসুন্ধরা সিটি, কাঁঠালবাগান, গ্রিন রোডসহ আসপাশের পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্ট হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে মঙ্গলবার অংশ নিয়েছিলেন রাজধানীর ১৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, রাজধানীর বাইরেও একটি বেসরকারি বিশ্বদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন। মঙ্গলবার সরাসরি রাস্তায় ও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় মানববন্ধনের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর দুপুরে তারা সড়কে অবস্থান নিলে রাজধানীর নর্দা, রামপুরা, বাড্ডা, মালিবাগ ও মিরপুর রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ হতে থাকে। বেলা দেড়টায় মালিবাগ থেকে কুড়িল বিশ্বরোডের মাথা পর্যন্ত পুরো রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বুধবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টার আগে থেকেই তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। একই সময় ছাত্রীরা একটি মিছিল বের করেন।
এ ঘোষণা দিয়ে পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা জানায়, মঙ্গলবারের মতো বুধবারও সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সড়কে নেমে আন্দোলন করছেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
পূর্ব ঘোষিত এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে বুধবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে রাজধানীর মগবাজার মোড়ে সমবেত হয়েছেন হলি ফ্যামিলি ও ড. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজসহ আশপাশের মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা সংস্কারের পক্ষে এবং মতিয়া চৌধুরী বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করছেন।
জাবি প্রতিনিধি: সারাদেশের মতো চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে ফের দাবি আদায়ে প্রতিবাদ ও অবেরোধ কর্মসূচি পালন করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ৯ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে এই অবস্থান কমসূচী শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টায় প্রধান ফটকে এসে ঢাকা -আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে।
সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দুই কিলোমিটারের বেশি রাস্তা অবরোধ করে।
কোটা-সংস্কারে দাবী সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ও স্লোগানে উত্তাল ঢাকা-আরিচা রাজপথ, তীব্র যানজটে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল।
এরই মধ্যে আন্দোলনকারী অবস্থানকারীরা সাভার ও আশুলিয়ার থানার শতাধিক পুলিশকে পিছু হটিয়েছে। ঢাকা জেলার অপরাধ দমন বিভাগের অতিরিক্ত এএসপি সাইদুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আপাতত আমরা কোন অ্যাকশনে যাব না তবে নিরাপদ দূরত্বে পুলিশ অবস্থান করছে’।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: কোটা সংস্কারের দাবিতে আবারো আন্দোলনে নেমেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী। শাটল ট্রেন অবরোধ ও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছেন তারা।
বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় চট্টগ্রাম নগরী থেকে ছেড়ে যাওয়া শাটল ট্রেনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পর সেটি আটকে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ওই ট্রেন ফিরে না আসায় নগরী থেকে আর কোনো ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখে যেতে পারছে না।
রাজশাহী প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ও দুই মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১১ এপ্রিল) বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাবি শাখার আয়োজনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মহাসড়কে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছেন।
রাবি ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পরে ১০টায় সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সিনেট ভবনের সামনে আসে। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর সাড়ে ১০টায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যায়।
কুমিল্লা প্রতিনিধি: কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে কুমিল্লার পূূবালী চত্ত্বরে অবস্থান নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল ১০টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কান্দিরপাড় পূবালী চত্ত্বরে এসে অবস্থান নেয়। এসময় তারা কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিপুল পরিমান পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ে যানজট সৃষ্টি হয়ে পড়ে এবং স্বাভাবিক যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি নগরীর ষোলশহর স্টেশনে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। তারা সেখানে রেল স্টেশনে ভেতরে মিছিল ও স্লোগান দিচ্ছেন। কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন যা ঘটে সে জন্য সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে বলে জানাগেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. আরজু বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা ক্লাস বর্জন করেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।
সিলেট প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার দাবিতে আবারও আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল সাতটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদও জানান তারা এ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে।
সরজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীরা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘পিতা তুমি ফিরে এসো, বৈষম্য দূর করো’সহ নানা স্লোগান দিচ্ছেন।আন্দোলনে যাতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক করে শিক্ষার্থীরা মাইকে বারবার তা প্রচার করছেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে অস্ত্রসহ সারিবদ্ধভাবে পুলিশ সদস্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
নগরীর জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না করে সেজন্য তারা অবস্থান নিয়েছেন।
এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সকল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জন করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত না মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থানকারীদের দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে ছাত্রলীগ নেতারা মনে করছেন। মঙ্গলবার রাত পৌণে আটটা থেকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা রড, চাপাতি লাঠি-সোটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে অবস্থান নেয়। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের এক হল সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত যদি আন্দোলনকারীরা না মানে তাহলে আমরা তাদের হঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব।
প্রসঙ্গত, বিদ্যমান কোটার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে সরকারে এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের প্রায় পৌণে দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত আসে। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের ব্যাপারে সরকার অনড় অবস্থানে নেই। আমরা তাদের দাবির যৌক্তিকতা ইতিবাচকভাবে দেখছি।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তারা সরকারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করছেন। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে বৈঠকে আজকের মধ্যে আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হওয়া সবাইকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে। শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় পৃথকভাবে অবস্থান নিয়ে তারা সিদ্ধান্তকে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, এ সিদ্ধান্ত তারা মানতে রাজি নন। কোটা সংস্কারে সুস্পষ্ট আশ্বাস না দিলে তাদের পক্ষে এ দাবি মানা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস না থাকায় তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D