‘রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা রায় দেয়া হয়’

প্রকাশিত: ৩:২৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০১৬

অনেকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিচার বিভাগ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

সোমবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সুপ্রিমকোর্টে আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচি ও দোয়া অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, সিনিয়র বিচারপতিরা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম হয়েছিল। যখনই কোনো অন্যায় দেখেছে সেখানেই হস্তক্ষেপ করেছে বিচার বিভাগ।

বিচরপতি সিনহা বলেন, একজন জেলা জজ রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিম্ন আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় দিয়েছিলেন। এরপর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি করতে নানা প্রতিকূলতা ছিল। মামলাটি কার্যতালিকায় আনা ও বেঞ্চ গঠন নিয়ে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, এই হত্যা মামলা নিয়ে বিচারকরা জাজেজ লাউঞ্জে কনফাইন্ড (বন্দি) ছিলেন। এরপর হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি করে এবং মামলাটি আপিল বিভাগে আসে। এরপর আপিল বিভাগ মামলাটি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করেন।

আপিল বিভাগের ওই বেঞ্চের একজন বিচারক হিসেবে এই মামলায় অংশ নিতে পেরে প্রধান বিচারপতি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন বলে জানান তিনি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে বিচার বিভাগকে যথাযথ মর্যাদা ও স্বীকৃতি দিতে অনেকেই পিছপা হন। নির্বাহী বিভাগ ও জাতীয় সংসদের পাশাপাশি বিচার বিভাগও যে রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সেটি প্রকাশ করা আমাদের (বিচারপতিদের) কর্তব্য।

এস কে সিনহা বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাই নয়, জেল হত্যা মামলার জন্য সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী, অষ্টম সংশোধনী এবং ত্রয়োদশ সংশোধনী সুপ্রিম কোর্ট বাতিল ঘোষণা করে। সুপ্রিম কোর্টের দেয়া এসব রায়ই প্রমাণ করে বিচার বিভাগ দেশের ক্রান্তিলগ্নে কখনই পিছপা হয়নি। যখনই কোনো অন্যায় দেখেছে সেখানেই হস্তক্ষেপ করেছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর দেশের অধিকাংশ লোকই এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করার নৈতিক সাহস হারিয়ে ফেলেছিল। দেশবাসী কল্পনাও করতে পারেনি, যে বঙ্গবন্ধুকে এভাবে হত্যা করা হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, আপিল বিভাগের রেজিস্টার জাকির হোসেন, হাইকোর্টের রেজিস্টার সৈয়দ আবু দিলজার হোসেন, অতিরিক্ত রেজিস্টার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ প্রমুখ।